শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৫ জুলাই ২০২৫, ১২:৪৯ পিএম
আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২৫, ১২:৫২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
গবেষণা

সঙ্গী খোঁজা, মিলনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে মাছেরা 

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

মাছ প্রকৃতিগতভাবেই দলবদ্ধ প্রাণী। তারা একসাথে ঘুরে বেড়ায়, শিকার থেকে আত্মরক্ষা করে এবং প্রজনন প্রক্রিয়াও পরিচালনা করে দলবদ্ধতার ওপর ভিত্তি করে। কিন্তু সাম্প্রতিক এক বৈজ্ঞানিক গবেষণা বলছে, কীটনাশক দূষণের কারণে মাছের এই প্রাকৃতিক দলবদ্ধ আচরণ ভেঙে পড়ছে।

অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলসের একদল গবেষক ১১টি প্রজাতির মাছ নিয়ে ৩৭টি গবেষণা বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, কীটনাশকের প্রভাবে মাছরা এখন একসাথে থাকার আগ্রহ হারাচ্ছে। তারা আর আগের মতো দলবদ্ধ হয়ে ঘোরাফেরা করছে না, বাসস্থান রক্ষা বা সঙ্গী খোঁজার ব্যাপারেও আগ্রহ দেখাচ্ছে না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাছের এই আচরণগত পরিবর্তন ভবিষ্যতে জলজ পরিবেশের ভারসাম্যে বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। গবেষণার প্রধান লেখক কাইল মরিসন জানান, এটা হচ্ছে এক ধরনের নিঃশব্দ বিপর্যয়, যা এখনও হয়তো চোখে পড়ে না, কিন্তু ধীরে ধীরে পুরো একটি বাস্তুতন্ত্র ভেঙে ফেলতে পারে।

এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মাছের প্রজনন আচরণ। সঙ্গী বাছাই, মিলনের আগ্রহ, এমনকি সুরক্ষার বোধও হ্রাস পাচ্ছে, যা ভবিষ্যতের জন্য এক বড় ধরনের হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।

এছাড়া, অনেক মাছ প্রজাতি সাধারণত একসাথে চলার মাধ্যমে শিকারিদের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করে। কিন্তু একাকী হয়ে পড়লে তারা আরও বেশি ঝুঁকির মুখে পড়ে। গবেষণায় ব্যবহৃত কয়েকটি কীটনাশক, যেমন গ্লাইফোসেট—মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ও হরমোন ভারসাম্য নষ্ট করে, যা আচরণগত পরিবর্তনের মূল কারণ হিসেবে ধরা পড়েছে।

অস্ট্রেলিয়াসহ বহু দেশেই হাজার হাজার কীটনাশক অনুমোদিত রয়েছে, যেগুলোর বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় ইউনিয়নে ইতোমধ্যে নিষিদ্ধ। ট্রাক্টর বা বিমান থেকে যখন এই কীটনাশক ছিটানো হয়, তখন বাতাসে ছড়িয়ে পড়া এই রাসায়নিক বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে গিয়ে নদী-নালায় প্রবেশ করে। পরে তা নদী, হ্রদ, এমনকি মহাসাগর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। মাছগুলো এই পানিতে সাঁতার কাটে, এবং তাদের শরীরে গিল বা খাদ্যের মাধ্যমে এসব রাসায়নিক ঢুকে পড়ে।

যদিও অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই কীটনাশকের মাত্রা প্রাণঘাতী নয়, তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এমন ‘সাব-লেথাল’ মাত্রার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদে প্রাণীর আচরণে ক্ষতিকর পরিবর্তন আনতে পারে।

গবেষকেরা মনে করছেন, কীটনাশক ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ এবং পরিবেশবান্ধব বিকল্পে যাওয়ার এখনই সময়। না হলে সমুদ্র, নদী ও হ্রদে আর আগের মতো মাছের ঝাঁক দেখা যাবে না।

তথ্যসূত্র : দ্য কনভারসেশন

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা কমাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র   

আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ৪২ জনকে স্ট্যান্ড রিলিজ

 ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ‘তুই’ বলায় তুমুল সংঘর্ষ, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বর্জন

আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বিকল্প নেই : গণতন্ত্র মঞ্চ 

চার দেশে বন্যায় ১৫০০ মৃত্যুর পর নতুন আতঙ্ক

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ স্থগিত

শাহজালালে ‘এয়ারপোর্ট মিনি ফায়ার এক্সারসাইজ-২০২৫’ সম্পন্ন

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম

ইউএনও হলেন লাক্স সুন্দরী সোহানিয়া

তারেক রহমানের ৩১ দফায় বদলে যাবে শরীয়তপুর : নুরুদ্দিন আহাম্মেদ অপু

১০

এরশাদ-হাসিনা কারও সঙ্গেই আপস করেননি খালেদা জিয়া : মিল্লাত

১১

মান্নাকে ইসলামী ব্যাংকের চূড়ান্ত নোটিশ, আইনি ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি

১২

সব দল ইসলামের পতাকাতলে সমবেত হবে ইনশাআল্লাহ : অধ্যাপক মুজিবুর

১৩

মনোনয়নের খবর শুনে উচ্ছ্বাস, কিছুক্ষণ পর বিএনপি নেতার মৃত্যু

১৪

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যা / সাবেক বিচারপতি-হুইপসহ ১৫৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট

১৫

ইসলামের বিষয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : ধর্ম উপদেষ্টা

১৬

ববি উপাচার্য দপ্তরে ‘মুলা’ ঝুলিয়ে প্রতীকী প্রতিবাদ

১৭

ধেয়ে আসছে তীব্র শীত, দফায় দফায় শৈত্যপ্রবাহ

১৮

‘বাকসু’ নিজেদের রাখতে বিএম কলেজ শিক্ষার্থীদের হুঁশিয়ারি

১৯

নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে ২ রাজনৈতিক দল

২০
X