দমবন্ধ হয়ে আসা, বুকে চাপ, নিশ্বাস নিতে কষ্ট—অ্যাজমা রোগীদের জন্য এগুলো যেন রোজকার ঘটনা। কেউ ধুলাবালি থেকে সাবধান থাকেন, কেউবা ঠান্ডা খাবার এড়িয়ে চলেন। কিন্তু অনেকেই জানেন না, খাবার-এর মাধ্যমেও অ্যাজমার উপসর্গ বেড়ে যেতে পারে!
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু খাবার আছে যা অ্যাজমাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, আবার কিছু খাবার আছে যা উপসর্গ বাড়িয়ে দিতে পারে।
আরও পড়ুন : এক মাসে কতটা ওজন কমানো নিরাপদ, জানালেন চিকিৎসক
আরও পড়ুন : কিডনি ভালো না থাকলে শরীর যেভাবে সিগন্যাল দেয়
চলুন জেনে নিই—অ্যাজমা থাকলে কী খাবেন, কী খাবেন না, এবং কোন অভ্যাসগুলো মেনে চললে আপনি সহজে নিঃশ্বাস নিতে পারবেন।
অ্যাজমার নির্দিষ্ট কোনো ডায়েট নেই, তবে কিছু পুষ্টিকর খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়িয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস সহজ করে তুলতে পারে।
এই ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবারগুলো রাখুন প্রতিদিনের খাবারে-
ভিটামিন সি: কমলা, স্ট্রবেরি, ক্যাপসিকাম, ব্রোকলি
ভিটামিন ই: সূর্যমুখীর বীজ, বাদাম, অ্যাভোকাডো
ভিটামিন এ ও বিটা-ক্যারোটিন: গাজর, পালং শাক, মিষ্টি আলু
ভিটামিন ডি: ডিম, সালমন মাছ, ফোর্টিফায়েড দুধ ও কমলার রস
নিজ উপাদানসমৃদ্ধ খাবার
সেলেনিয়াম: ব্রাজিল বাদাম, মাছ, ডিম
ম্যাগনেশিয়াম: ডার্ক চকলেট, কুমড়ার বীজ, অ্যাভোকাডো, টফু
অ্যাজমা থাকলে নিচের কিছু খাবার উপসর্গ বাড়াতে পারে, তাই এগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন:
সালফাইটযুক্ত খাবার: শুকনো ফল, বোতলজাত লেবুর রস, আচার, ওয়াইন
গ্যাস সৃষ্টিকারী খাবার: বাঁধাকপি, পেঁয়াজ, কার্বনেটেড ড্রিংক
সালিসাইলেট সংবেদনশীলতা থাকলে: কফি, চা, কিছু মশলা
প্রক্রিয়াজাত ও ফাস্ট ফুড: প্যাকেটজাত খাবার, জাংক ফুড
অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী খাবার: গম, দুধ, সামুদ্রিক মাছ, বাদাম (যদি এগুলোর প্রতি অ্যালার্জি থাকে)
অনেকেই জানেন না, অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা অ্যাজমার ঝুঁকি বাড়ায়। ওজন বেশি হলে ফুসফুসের ওপর চাপ পড়ে, শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।
সমাধান
- নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করুন (ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী)
- খাবারে ক্যালরি নিয়ন্ত্রণ করুন
- বেশি পানি পান করুন এবং ঘুম ঠিক রাখুন
- সবসময় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলুন
- খাদ্যাভ্যাসে বড় পরিবর্তন আনার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন
- কোনো ওষুধ কখনোই নিজে থেকে বন্ধ করবেন না
- খাদ্য নয়, ওষুধই অ্যাজমার মূল চিকিৎসা—খাদ্য সহায়ক মাত্র
অ্যাজমা থাকলে শুধু ইনহেলার নয়, খেয়াল রাখতে হবে প্লেটেও কী আছে! শাকসবজি, ফলমূল, স্বাস্থ্যকর প্রোটিন এবং পর্যাপ্ত ভিটামিন-খনিজ—এইসব রাখলে অ্যাজমার ঝুঁকি কমতে পারে।
আরও পড়ুন : কোলন ক্যানসার সম্পর্কে জানুন
আরও পড়ুন : পেটের মেদ কমানোর সহজ ৬ উপায়
অন্যদিকে, ফাস্ট ফুড, বোতলজাত খাবার, অ্যালার্জি বাড়ানো খাবার বাদ দিলে অনেকটাই স্বস্তি মিলবে।
স্বাস্থ্যকর খাওয়া মানে শুধু সুস্থ থাকা নয়—প্রতিদিন হাফাতে হাফাতে না বেঁচে একটু স্বাভাবিকভাবে বাঁচা।
সূত্র: হেলথলাইন
মন্তব্য করুন