ভয়ানক গরমে বাইরে বের হলেই গলা শুকিয়ে আসে। তখন ঠান্ডা কিছু খাওয়ার তীব্র ইচ্ছে হয়- কেউ পান করেন ঠান্ডা পানি, কেউ আবার পছন্দ করেন কোমল পানীয়। আর অনেকেই রাস্তার পাশে আখের রস খেয়ে তৃপ্ত হন, কারণ এটা স্বাভাবিকভাবে তৈরি হয় এবং তাতে ভেজালের ভয় কম থাকে।
আরও পড়ুন : একটিমাত্র ভুলে চা হয়ে যায় বিষ
আরও পড়ুন : ৩০ দিন ভাত-রুটি ছাড়লে যে পরিবর্তন আসবে
আখের রসের স্বাদ যেমন চমৎকার, তেমনি অনেকে ভাবেন এটি শরীর ঠান্ডা রাখে, পানি ও শক্তির ঘাটতি মেটায়। কিন্তু আসলেই কি এটা স্বাস্থ্যকর, নাকি গরমে খেলে ক্ষতি হতে পারে? এ নিয়ে কথা বলেছেন পুষ্টিবিদ অরিজিৎ দে।
আখের রস এক ধরনের প্রাকৃতিক পানীয়, যাতে থাকে নানা ধরনের খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি শরীর ঠান্ডা রাখতে, ক্লান্তি কমাতে ও সাময়িকভাবে শক্তি বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। অনেকেই একে ‘প্রাকৃতিক এনার্জি ড্রিংক’ বলেন।
পুষ্টিবিদ অরিজিৎ দে বলছেন, আখের রসে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অনেক বেশি। অর্থাৎ, এটি খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি একদমই উপযুক্ত নয়।
এছাড়া, অতিরিক্ত খেলে এটি রক্তকে পাতলা করতে পারে, কোলেস্টেরল বাড়াতে পারে, এমনকি হৃদরোগ ও মেটাবলিক সমস্যার ঝুঁকিও বাড়াতে পারে। তাই যাদের আগে থেকেই এসব সমস্যা আছে, তাদের জন্য আখের রস সাবধানে খাওয়া উচিত।
তীব্র গরমে অনেকে হিট স্ট্রোক, মাথা ঘোরা বা বমি বমি ভাবের মতো সমস্যায় পড়েন। এই অবস্থায় রাস্তার পাশে খোলা জায়গায় রাখা আখের রস খেলে পেট খারাপ, ডায়রিয়া, এমনকি সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
এছাড়াও, আখের রসে পলিকোসানল নামে একটি উপাদান থাকে, যা কারও কারও ক্ষেত্রে ঘুমের সমস্যা, মাথাব্যথা বা হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে।
- যদি খেতে চান, তাহলে খুব পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যসম্মতভাবে তৈরি আখের রস খাওয়া জরুরি।
- খালি পেটে নয়, খাবার খাওয়ার ১-২ ঘণ্টা পর খাওয়া ভালো।
- লেবুর রস, আদা বা পুদিনা পাতা মিশিয়ে খেলে হজমেও সহায়ক হয়।
- মাঝে মাঝে ১-২ গ্লাস খেলে সমস্যা নেই, তবে প্রতিদিন বা অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়।
আরও পড়ুন : লাল না সবুজ আপেল, কোনটা বেশি উপকারী?
আরও পড়ুন : বাসি রুটি-ঘি দিয়ে বানানো যায় স্বাস্থ্যকর সকালের নাস্তা
আখের রস একদিকে প্রাকৃতিক ও সতেজ করার মতো পানীয়, কিন্তু অন্যদিকে কিছু স্বাস্থ্যঝুঁকিও আছে- বিশেষ করে গরমে ও খোলা জায়গায় তৈরি হলে। তাই চোখ বন্ধ করে ‘শুধু ভালো’ ভাবার সুযোগ নেই। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে তৈরি হলে এবং পরিমাণে খাওয়া হলে মাঝে মাঝে উপকার মিলতে পারে।
সঠিক সময়, পরিমাণ ও পদ্ধতিতে খাওয়াই এখানে আসল চাবিকাঠি।
মন্তব্য করুন