আপনি নিশ্চয়ই বাজারে গোলাপি রঙের ‘হিমালয়ান পিংক সল্ট’ দেখে ভাবছেন, ‘এটা কি আসলেই সাধারণ লবণের চেয়ে বেশি ভালো?’ অনেকেই মনে করেন এই লবণ বেশি স্বাস্থ্যকর। কিন্তু আদতে ব্যাপারটা কী?
আরও পড়ুন : সকালে সময় বাঁচাতে রোজ পাউরুটি খাচ্ছেন? চিকিৎসকদের স্পষ্ট সতর্কবার্তা
আরও পড়ুন : ভাত ছেড়ে দিলেই কি ওজন কমবে? যা বলছেন পুষ্টিবিদ
চলুন আজ পুষ্টিবিদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী সরলভাবে বুঝে নিই।
পিংক সল্ট আসে পাকিস্তানের খেওড়া নামের এক খনি থেকে, যেটি পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম লবণের খনি। এই লবণ প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয় এবং এতে কোনো ধরনের রাসায়নিক প্রক্রিয়ার ব্যবহার করা হয় না। এর গোলাপি রঙের পেছনে রয়েছে আয়রন অক্সাইড।
আরও পড়ুন : কোন কোন শর্ত মেনে ছেলেদের চীনাবাদাম খাওয়া উচিত
এই লবণে অনেক রকম খনিজ উপাদান (মোটামুটি ৮৪টি) থাকলেও, সেগুলোর পরিমাণ খুবই অল্প।
সাধারণ লবণ (যেমন টেবিল সল্ট) সাধারণত ৯৭-৯৯% সোডিয়াম ক্লোরাইড দিয়ে তৈরি। এটি পরিশোধিত হয় এবং এতে আয়োডিন যোগ করা হয়, যা থাইরয়েড হরমোন তৈরিতে জরুরি।
পিংক সল্ট কম প্রক্রিয়াজাত, খনিজ উপাদান কিছুটা বেশি থাকে, কিন্তু এতে আয়োডিন কম থাকে। যারা আয়োডিনযুক্ত লবণ খান না, তাদের জন্য পিংক সল্ট আয়োডিনের ঘাটতি তৈরি করতে পারে।
পিংক সল্ট সাধারণ লবণের তুলনায় একটু হালকা লবণাক্ত এবং কিছুটা মিষ্টি মিষ্টি লাগে। এর দানাগুলো মোটা হওয়ায় অনেক সময় রান্নার আগে গুঁড়ো করে নিতে হয়।
পুষ্টিবিদ শরীফা আক্তার শাম্মীর মতে, পিংক সল্টে কিছু উপকারিতা থাকলেও সেগুলো অনেকটাই সীমিত-
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে : এতে সোডিয়াম কম থাকায় উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা সীমিত পরিমাণে ব্যবহার করতে পারেন।
পানির ভারসাম্য বজায় রাখা: ইলেকট্রোলাইট হিসেবে কাজ করে, শরীরে পানির ভারসাম্য রক্ষা করতে সহায়তা করে।
হজমে সহায়তা : মাঝে মাঝে এটি হজমে সাহায্য করতে পারে, তবে এটা নির্ভর করে ব্যক্তিভেদে।
সাধারণ লবণ হোক বা পিংক সল্ট দুটোই পরিমিত পরিমাণে খাওয়াই গুরুত্বপূর্ণ। পিংক সল্টে অতিরিক্ত খনিজ থাকলেও, সেগুলোর পরিমাণ এত কম যে আলাদা করে খুব একটা উপকার পাওয়া যায় না।
আর যদি আপনি আয়োডিনযুক্ত লবণ না খান, তবে পিংক সল্ট খাওয়ার সময় আয়োডিন ঘাটতির ঝুঁকি থেকে যাবে। তাই থাইরয়েডের সমস্যার আশঙ্কা থাকলে আয়োডিনযুক্ত লবণই ভালো বিকল্প।
আরও পড়ুন : ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে কী খাবেন, কী খাবেন না
পিংক সল্ট দেখতে সুন্দর, কিছুটা প্রাকৃতিক, কিন্তু এটি ‘ম্যাজিকাল’ কোনো স্বাস্থ্য সমাধান নয়। স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে হলে আসল বিষয় হলো- লবণ যতই হোক, সেটি কম খেতে হবে।
পছন্দমতো লবণ খান, তবে পরিমাণের দিকে খেয়াল রাখাটাই সবচেয়ে জরুরি।
মন্তব্য করুন