গরম ভাত, একটু ঘি বা ডাল, আর সঙ্গে এক-দুটি কাঁচামরিচ— চেনা সেই ঘরোয়া স্বাদে মজে আছেন আপনি? শুধু ঝালপ্রেমীরাই নন, অনেকেই নিয়মিত কাঁচা মরিচ খান ভাতের সঙ্গে। কেউ খেতে ভালোবাসেন, কেউ বলেন এতে রুচি বাড়ে। তবে প্রশ্ন হলো— এই অভ্যাস কি শরীরের জন্য উপকারী, নাকি বিপদও ডেকে আনতে পারে?
আরও পড়ুন : দাঁতে দাগ? জেনে নিন দূর করার ৬ ঘরোয়া উপায়
আরও পড়ুন : হঠাৎ শরীর ফুলে যাচ্ছে? হতে পারে ভেতরে লুকানো বড় কোনো সমস্যা
এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন পুষ্টিবিদ শরীফা আক্তার শাম্মী ও বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান। চলুন, জেনে নেওয়া যাক কাঁচামরিচ খাওয়ার আসল উপকারিতা ও সতর্কতা।
ছোট এই সবজিটিতে আছে ভরপুর পুষ্টি :
- ভিটামিন এ, সি, কে, বি ৬, ফলেট
- আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, কপার, ম্যাঙ্গানিজ
- ডায়াটারি ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ- ক্যাপসাইকিন, যা মরিচের ঝালের উৎস
- হজমে সাহায্য করে
- মরিচে থাকা ফাইবার ও ক্যাপসাইকিন হজমশক্তি বাড়ায়। বাড়ায় লালা উৎপাদন— যা হজমে সহায়ক।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
- ভিটামিন সি ও বিটা ক্যারোটিন ইমিউন সিস্টেম মজবুত করে এবং ঠান্ডা-কাশির মতো সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
- চর্বি গলাতে সাহায্য করে।
- ক্যাপসাইকিন মেটাবলিজম বাড়ায়, চর্বি গলাতে সাহায্য করে। তাই মেদ কমাতে কাঁচামরিচ সহায়ক হতে পারে।
- হার্ট ভালো রাখে।
- মরিচে থাকা উপাদানগুলো রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এবং রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি হ্রাস করে।
- ঠান্ডা-সর্দিতে আরাম দেয়।
- শীতে বা ঠান্ডা লাগলে কাঁচামরিচের ঝাঁজ সাইনাস পরিষ্কার করে এবং শরীর গরম রাখে।
চিকিৎসক ডা. আতিকুর রহমান বলছেন, ‘প্রতিদিন এক বা দুটি কাঁচামরিচ খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী। রান্না করলে কিছু পুষ্টি কমে যায়, তাই কাঁচা অবস্থায় খেলে উপকার বেশি।’
তবে তিনি সতর্কও করেন— ভালো বলেই বেশি খেতে হবে, এমন নয়। কারণ অতিরিক্ত ঝাল খেলে মুখে তো ঝাল লাগেই, খাদ্যনালিতেও সমস্যা হতে পারে।
বিশেষ করে যাদের গ্যাস্ট্রিক বা আলসারের সমস্যা আছে, তাদের সাবধানে খাওয়া উচিত।
আরও পড়ুন : গরম খাবারে লেবু দিয়ে খাচ্ছেন? জেনে নিন ফলাফল
আরও পড়ুন : বারবার গলা শুকিয়ে যাচ্ছে? এখনই সতর্ক হোন!
হ্যাঁ, খেতে পারেন। দিনে ১-২টি কাঁচামরিচ উপকারী হতে পারে। ঝাল সহ্য করতে পারেন এমন হলে ভালো।
কাঁচামরিচ খেলে রুচি বাড়ে, খাবারেও স্বাদ আসে। তবে অতিরিক্ত খাওয়া এড়িয়ে চলুন, আর যদি আগে থেকেই হজম বা অ্যাসিডিটির সমস্যা থাকে, তবে পুষ্টিবিদের পরামর্শে চলাই ভালো।
মন্তব্য করুন