সুস্থ-সবল দিন শুরু করার পর হঠাৎ বুকে ব্যথা, আবার কখনো বুকে চাপ মানুষকে আতঙ্কিত করে ফেলে। মনে হয় এই যেন সব শেষ, মৃত্যু ঘনিয়ে এসেছে। এমনটা ঘটলে অনেকের প্রথমেই মনে হয় এটা হয়তো ‘মিনি’ হার্ট অ্যাটাক। এর কারণ হলো, দুটি অবস্থার উপসর্গ অনেকটা একই রকম হওয়ায় সাধারণ মানুষের পক্ষে পার্থক্য করা কঠিন হয়ে পড়ে।
কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সব সময় এর পেছনে হৃদ্রোগ দায়ী নয়, অনেক ক্ষেত্রেই এর কারণ অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা হজমজনিত সমস্যা।
অ্যানেস্থেশিয়োলজি ও ইন্টারভেনশনাল পেইন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ কুনাল সুদ সম্প্রতি তার ইনস্টাগ্রাম ভিডিওতে হার্ট অ্যাটাক ও অ্যাসিড রিফ্লাক্সের উপসর্গ আলাদা করে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, যেকোনও অস্বাভাবিক বুকের ব্যথা হালকাভাবে না নিয়ে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। সেই সঙ্গে অ্যাসিড রিফ্লাক্স প্রতিরোধের জন্যও কিছু উপায় বলেছেন।
ডা. সুদের মতে, বুকের ব্যথা সব সময় হার্ট অ্যাটাকের ইঙ্গিত নয়। হার্ট ছাড়া সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো অ্যাসিড রিফ্লাক্স। তবে দুই অবস্থার উপসর্গের মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য আছে।
হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ
বুকে চাপ, টান বা চেপে ধরা অনুভূতি।
ব্যথা কাঁধ, ঘাড়, চোয়াল বা হাতে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
মাথা ঘোরা, শ্বাসকষ্ট, বমি ভাব, ঘাম হওয়া।
তবে হঠাৎ ও অস্বাভাবিক বুকের ব্যথা হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সুদ।
অ্যাসিড রিফ্লাক্সের উপসর্গ
খাবারের পর বা শোয়ার সময় বুকে জ্বালাপোড়া ভাব।
মুখে টক স্বাদ আসা।
গিলতে অসুবিধা হওয়া।
দীর্ঘস্থায়ী কাশি।
ডা. সুদের মতে, ছোট ছোট মিল খাওয়া, রাতের খাবারের পরে স্ন্যাক্স এড়ানো ও জীবনযাপনে পরিবর্তন আনলেই অনেক ক্ষেত্রে অ্যাসিড রিফ্লাক্স এড়ানো যায়।
মহিলাদের ক্ষেত্রে ভিন্ন উপসর্গ
চিকিৎসকের মতে, হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ সবসময় একই হয় না। বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে বুকের ব্যথার পরিবর্তে উপরের পিঠে চাপ, অস্বাভাবিক ক্লান্তি বা পেট খারাপের মতো লক্ষণ দেখা যেতে পারে।
ডা. সুদ জানিয়েছেন, হঠাৎ বা অস্বাভাবিক বুকের ব্যথা কখনও অবহেলা করা উচিত নয়। তার পরামর্শ, ‘অ্যাসিড রিফ্লাক্স প্রতিরোধ করতে অল্প পরিমাণে ও ঘনঘন খাবার খান, খাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়বেন না, আর হজমে সাহায্য করতে চুইংগাম চিবোতে পারেন।’
সূত্র : দ্য ওয়াল
মন্তব্য করুন