আমরা অনেক সময়ই ভাবি হার্ট অ্যাটাক হঠাৎ করে ঘটে। অথচ চিকিৎসকরা বলছেন, হৃৎপিণ্ড আমাদের আগেই নানা সতর্ক সংকেত পাঠায়; কিন্তু আমরা সেগুলো উপেক্ষা করে যাই।
একটা হালকা ব্যথা, একটুখানি দুর্বলতা বা হঠাৎ মাথা ঘোরা—এসবকে আমরা ছোটখাটো সমস্যা মনে করি। অথচ ঠিক সময় চিকিৎসা না পেলে এই ছোট উপসর্গগুলোই হয়ে উঠতে পারে প্রাণঘাতী।
আরও পড়ুন : ঘুমের মাঝে বারবার জেগে উঠছেন? হতে পারে স্বাস্থ্যঝুঁকি
আরও পড়ুন : দাঁতে দাগ? জেনে নিন দূর করার ৬ ঘরোয়া উপায়
চলুন জেনে নিই, হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আগেই শরীর যেসব ইঙ্গিত দেয়—আর আপনি কীভাবে সেগুলো চিনে নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারেন।
বুকে চাপ বা অস্বস্তি
বুকে ভারী লাগা, চাপ ধরা বা পুড়েপুড়ে ব্যথা—এটাই সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ। ব্যথা কয়েক মিনিট থাকতে পারে, আবার থেমে গিয়েও আবার ফিরে আসতে পারে।
ব্যথা শরীরের অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়া
ব্যথা শুধু বুকে নয়—কাঁধ, বাহু, ঘাড়, চোয়াল, পিঠ বা উপরের পেটেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। অনেক সময় বাঁ হাতে ব্যথা হয়, যেটি হার্ট অ্যাটাকের পরিচিত লক্ষণ।
শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া
হঠাৎ হাঁপিয়ে যাওয়া, বিশেষ করে সামান্য কাজেই যদি শ্বাস নিতে কষ্ট হয়—সেটা হার্টের সমস্যার স্পষ্ট সংকেত হতে পারে। এমনকি বিশ্রামে থাকলেও এমন হতে পারে।
ঠান্ডা ঘাম
ঘর ঠান্ডা অথচ আপনি ঘেমে একাকার? এই অস্বাভাবিক ঘাম, বিশেষ করে যদি বুকে চাপ বা দুর্বলতার সঙ্গে হয়, তাহলে তা হার্ট অ্যাটাকের ইঙ্গিত হতে পারে।
বমিভাব বা পেট গড়গড়
অনেক সময় অজীর্ণতা বা গ্যাস্ট্রিক ভেবে অবহেলা করা হয় এই উপসর্গগুলো। কিন্তু হার্ট অ্যাটাকের আগেও এমন বমিভাব বা পেটের অস্বস্তি হতে পারে—বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে।
মাথা ঘোরা বা হালকা হয়ে যাওয়া
হঠাৎ মাথা ঘোরা, ঝিমঝিম লাগা বা চোখে অন্ধকার দেখা—এসব হলে সতর্ক হোন। এটা হতে পারে হৃৎপিণ্ডে রক্ত চলাচলের সমস্যার কারণে।
অস্বাভাবিক ক্লান্তি
কোনো কারণ ছাড়াই যদি খুব বেশি ক্লান্তি বা দুর্বলতা অনুভব করেন, সিঁড়ি উঠতে কষ্ট হয় বা হালকা কাজেই হাঁপিয়ে যান—সেটা হৃদরোগের ইঙ্গিত হতে পারে।
হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া বা অনিয়মিত হওয়া
হঠাৎ হার্টবিট বেড়ে যাওয়া বা অনিয়মিত হওয়া, বিশেষ করে বুকে ব্যথা বা শ্বাসকষ্টের সঙ্গে হলে—অবহেলা করবেন না।
- এই উপসর্গগুলো একসঙ্গে বা ধারাবাহিকভাবে দেখা দিলে, দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
- প্রয়োজনে অ্যাম্বুলেন্স ডাকুন বা নিকটস্থ হাসপাতালে যান
- ঘরে যদি অ্যাসপিরিন থাকে এবং অ্যালার্জি না থাকে, তবে চিকিৎসকের নির্দেশে খাওয়া যেতে পারে, তবে এটি চিকিৎসার বিকল্প নয়
- নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন, বিশেষ করে যদি বয়স ৪০-এর উপরে হয় বা পরিবারে হার্টের রোগের ইতিহাস থাকে
আরও পড়ুন : উপুড় হয়ে ঘুমান? জানুন এতে শরীরে কী হয়
আরও পড়ুন : যেসব ফল নিয়মিত খেলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমে
সঠিক সময় চিকিৎসা পেলে হার্ট অ্যাটাকের জটিলতা অনেকটাই কমানো যায়। শরীরের সিগন্যালগুলোকে অবহেলা না করে সচেতন হোন। আপনার একটু সচেতনতাই আপনার বা আপনার প্রিয়জনের জীবন বাঁচাতে পারে।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
মন্তব্য করুন