

পায়ের পাতা বা গোড়ালিতে হালকা ফোলাভাব অনেকেই পাত্তা দেন না। হ্যাঁ, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা, বেশি হাঁটাহাঁটি বা সারাদিনের ক্লান্তির পর পা ফুলে গেলে সাধারণত তা গুরুতর কিছু নয়। তবে সব ফোলাভাবই স্বাভাবিক নয়, এ সতর্কবার্তাই দিলেন ২৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মার্কিন কার্ডিওভাসকুলার সার্জন ডা. জেরেমি লন্ডন। তার মতে, কিছু লক্ষণ দেখা দিলে সেটি শরীরের বড় সমস্যার সংকেত হতে পারে।
পা ফুললে এর আসল কারণ কী?
ডা. লন্ডন এক ভিডিও বার্তায় জানান, চিকিৎসা পরিভাষায় এ ফোলাভাবকে বলা হয় এডিমা। রক্তনালির ভেতর থেকে অতিরিক্ত তরল চারপাশের টিস্যুতে জমে গেলে পা ভারী লাগে, হাঁটতে কষ্ট হয় এবং ফোলাভাব স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কারণগুলোর মধ্যে কিছু সাধারণ হলেও কিছু আবার খুবই গুরুতর।
কখন পা ফুলে যাওয়া বিপদের সংকেত?
১. শিরার সমস্যা
শিরা দুর্বল হলে রক্ত ঠিকভাবে উপরে ফেরত যেতে পারে না। ফলে পায়ের নিচে রক্ত জমে থাকে। এ অবস্থাকে বলা হয় ক্রনিক ভেনাস ইনসাফিসিয়েন্সি।
২. হার্ট, কিডনি বা লিভারের দুর্বলতা
হৃদপিণ্ড, কিডনি বা লিভারের কর্মক্ষমতা কমে গেলে রক্তসঞ্চালন ব্যাহত হয়। তখন শরীরের নিচের দিকে বিশেষ করে পায়ে তরল জমে ফোলা দেখা দেয়।
৩. কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
হাই ব্লাড প্রেসারের ওষুধ, ব্যথানাশক বা কিছু হরমোনাল ওষুধ পা ফোলাতে পারে।
৪. লিম্ফ্যাটিক সিস্টেমে বাধা
লিম্ফেডিমা হলে শরীরের ড্রেনেজ সিস্টেম ঠিকমতো কাজ করে না। এতে পায়ে দীর্ঘস্থায়ী ফোলাভাব দেখা দেয়।
এ ক্ষেত্রে কী করবেন?
ডা. জেরেমির মতে, পায়ের ফোলা কমাতে সবচেয়ে বড় ‘ওষুধ’ হলো নিয়মিত নড়াচড়া। এ ছাড়াও তিনি পরামর্শ দিয়েছেন—
১. প্রতিদিন হাঁটুন, এতে রক্ত হার্টে ফেরত যেতে সুবিধা হয়।
২. সুযোগ পেলে পা হার্টের চাইতে উঁচু করে রাখুন।
৩. কমপ্রেশন স্টকিংস ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়।
কখন দেরি করা যাবে না?
নিম্নলিখিত লক্ষণ দেখা দিলে অপেক্ষা না করে দ্রুত চিকিৎসা নিন—
১. হঠাৎ করে পা ফুলে যাওয়া
২. শুধু এক পায়ে ফোলাভাব
৩. ফোলার সঙ্গে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট বা বুক ধড়ফড়ানি
৪. সবই রক্ত জমাট বাঁধার সম্ভাব্য লক্ষণ, যা জরুরি চিকিৎসা ছাড়া বিপজ্জনক হতে পারে।
ডা. জেরেমি সতর্ক করে বলেন, বেশিরভাগ সময় পা ফুলে ওঠা গুরুতর নয়। কিন্তু বারবার পা ফুলে গেলে বা হঠাৎ ফোলা দেখা দিলে শরীর যে সংকেত দিচ্ছে তা গুরুত্ব দিন। আগেভাগে ব্যবস্থা নিলে বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব।
সূত্র : দ্য ওয়াল
মন্তব্য করুন