অগ্নিদগ্ধ হওয়া শুধু শারীরিক যন্ত্রণা নয়, এটি শরীরের ভেতরে ও বাইরে একটি বড় ধাক্কা। এমন সময় শুধু চিকিৎসা নয়, সঠিক খাবার খাওয়াও সুস্থ হওয়ার পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কারণ পোড়ার পর শরীরের প্রয়োজনীয় শক্তি ও পুষ্টি চাহিদা অনেক বেড়ে যায়।
ক্ষত সারাতে, সংক্রমণ ঠেকাতে এবং শরীরের ভেতরের কোষগুলো দ্রুত পুনর্গঠনের জন্য দরকার ভিটামিন, খনিজ, প্রোটিন এবং প্রচুর পানি।
আজকের এই লেখা দিয়েছেন পুষ্টিবিদ শারমিন নকশী। চলুন তার লেখায় জেনে নেই পোড়া রোগীর জন্য কী ধরনের খাবার উপকারী, কী এড়িয়ে চলা উচিত এবং কোন কোন অভ্যাস দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠতে সাহায্য করে।
পুড়ে গেলে, শরীরে পানির পরিমাণ ঠিক রাখা এবং ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরি। সেই সঙ্গে সংক্রমণ এড়াতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পর কী খাওয়া উচিত
পানীয় : পোড়ার কারণে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে তরল বেরিয়ে যায়, তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা জরুরি। পানি শরীরকে ঠান্ডা রাখতে এবং অন্যান্য অঙ্গের কার্যকারিতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার : ভিটামিন সি ক্ষত নিরাময়ে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। লেবু, কমলা, পেঁপে, আমলকি ইত্যাদি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খান।
জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার : জিঙ্ক নতুন কোষ তৈরিতে সাহায্য করে এবং ক্ষত নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মাংস, ডিম, শস্য, জিঙ্ক সমৃদ্ধ চাল, মটরশুঁটি, ইত্যাদি জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার খান।
ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার : ভিটামিন এ চোখের স্বাস্থ্য এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। গাজর, মিষ্টি আলু, কুমড়ো, পালংশাক, ইত্যাদি ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খান।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার : প্রোটিন নতুন কোষ তৈরি এবং ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু মেরামত করতে সাহায্য করে। মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ইত্যাদি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান।
ফল ও সবজি : ফল ও সবজিতে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ থাকে যা শরীরের দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে সাহায্য করে।
পর্যাপ্ত ক্যালোরি : পোড়ার কারণে শরীরের ক্যালোরির চাহিদা বেড়ে যায়, তাই পর্যাপ্ত ক্যালোরি গ্রহণ করা জরুরি।
পোড়ার পর যা এড়িয়ে চলা উচিত
অতিরিক্ত চিনি ও ফ্যাটযুক্ত খাবার : অতিরিক্ত চিনি ও ফ্যাটযুক্ত খাবার শরীরের প্রদাহ বাড়াতে পারে, যা ক্ষত নিরাময়ে বাধা দেয়।
অ্যালকোহল ও ক্যাফেইন : অ্যালকোহল ও ক্যাফেইন শরীরকে ডিহাইড্রেশন করতে পারে, যা পোড়ার রোগীদের জন্য ক্ষতিকর।
অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার : অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার হজমে সমস্যা করতে পারে এবং পোড়া স্থানে অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।
পোড়া স্থান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ড্রেসিং করুন। পোড়া স্থানে কোনো রকম ক্রিম বা মলম লাগানোর আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
মন্তব্য করুন