বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫, ৯ শ্রাবণ ১৪৩২
কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৩ জুলাই ২০২৫, ০৩:১৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

শিশুদের টাইপ ১ ডায়াবেটিস

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

বর্তমানে বাংলাদেশে শিশুদের মাঝে টাইপ ১ ডায়াবেটিস একটি ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্য সমস্যা। যদিও এটি একটি জেনেটিক (বংশগত) ও অটোইমিউন রোগ, তবে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে এটি নিয়ে সচেতনতা এবং সঠিক চিকিৎসাব্যবস্থা এখনো সীমিত।

আজ আমরা সহজভাবে জানব শিশুদের টাইপ ১ ডায়াবেটিস কী, কেন হয়, কী কী লক্ষণ দেখা যায়, চিকিৎসা ও করণীয় এবং বাংলাদেশের বাস্তবতা।

টাইপ ১ ডায়াবেটিস কী?

টাইপ ১ ডায়াবেটিস হলো এমন একটি অবস্থা, যেখানে শিশুর শরীরে ইনসুলিন তৈরি বন্ধ হয়ে যায় বা খুব কম পরিমাণে তৈরি হয়। ইনসুলিন এক ধরনের হরমোন, যা রক্তে শর্করার (গ্লুকোজ) পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। ইনসুলিন ছাড়া গ্লুকোজ কোষে প্রবেশ করতে পারে না। ফলে রক্তে চিনি বেড়ে যায়।

এটি মূলত একটি অটোইমিউন রোগ। অর্থাৎ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভুল করে নিজেরই ইনসুলিন তৈরি করা কোষকে ধ্বংস করে ফেলে।

শিশুদের মাঝে টাইপ ১ ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো কী কী?

- ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া

- খুব বেশি পিপাসা লাগা

- ওজন কমে যাওয়া

- বারবার ক্ষুধা লাগা

- ক্লান্তি বা দুর্বলতা

- ঘন ঘন সংক্রমণ (যেমন : চামড়ার ফুসকুড়ি, ফাংগাল ইনফেকশন)

- ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে হঠাৎ করে প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা

অনেক সময় এসব লক্ষণ অজান্তে উপেক্ষিত হয়। এতে শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং ডায়াবেটিক কোমাতেও চলে যেতে পারে।

বাংলাদেশে বাস্তব চিত্র কেমন?

বাংলাদেশে শিশুদের টাইপ ১ ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতা এখনো খুবই কম। গ্রামের দিকে তো বটেই, শহরেও অনেক সময় ডাক্তাররাও শিশুদের এই ডায়াবেটিস চিহ্নিত করতে দেরি করে ফেলেন।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বাংলাদেশ প্রসঙ্গে :

- অনেক বাবা-মা মনে করেন ডায়াবেটিস শুধু বড়দের রোগ।

- ইনসুলিন ব্যবহারে সামাজিক লজ্জা বা ভয় কাজ করে।

- ইনসুলিন সংরক্ষণ, ইনজেকশন দেওয়া এবং নিয়মিত ব্লাড সুগার চেক করা এখনো অনেক পরিবারে কঠিন ব্যাপার।

- স্কুল-কলেজে ডায়াবেটিক শিশুদের জন্য কোনো বিশেষ সহায়তা নেই।

- দরিদ্র পরিবারের শিশুরা প্রয়োজনীয় ইনসুলিন বা ডায়েট পায় না।

চিকিৎসা ও করণীয় কী?

টাইপ ১ ডায়াবেটিসের কোনো স্থায়ী চিকিৎসা নেই, তবে নিয়ম মেনে চললে শিশু একটি সম্পূর্ণ সুস্থ জীবন কাটাতে পারে। প্রথমেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। পাশাপাশি :

- নিয়মিত ইনসুলিন নিতে হবে

- প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে রক্তে চিনি পরীক্ষা করা দরকার

- স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে

- শরীরচর্চা করা দরকার (বয়স অনুযায়ী)

- চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জীবনযাপন

বাবা-মা ও শিক্ষকের দায়িত্ব

- শিশুর লক্ষণগুলো বুঝে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে

- ইনসুলিন নেওয়া নিয়ে লজ্জা বা দ্বিধা দূর করতে হবে

- স্কুলে শিক্ষক ও সহপাঠীদের সচেতন করতে হবে যাতে শিশু চাপ বা অপমান বোধ না করে

- পরিবারে মানসিক সাপোর্ট দিতে হবে

টাইপ ১ ডায়াবেটিস শিশুদের জীবনের এক নতুন চ্যালেঞ্জ হলেও মনে রাখা দরকার এটি মোটেও জীবন শেষ করে দেয় না। সচেতনতা, সঠিক চিকিৎসা ও পরিবার-পরিবেশের ভালোবাসা পেলে শিশুরাও টাইপ ১ ডায়াবেটিস নিয়ে স্বাভাবিক জীবন কাটাতে পারে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

লঘুচাপের আভাস, সপ্তাহজুড়ে বৃষ্টির সম্ভাবনা

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি / দগ্ধদের চিকিৎসায় ঢাকায় ভারতের মেডিকেল টিম

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ২৭৬ আউটসোর্সিং কর্মচারীর আলটিমেটাম 

অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তানের সঙ্গে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে পারে বাংলাদেশ!

ব্রুনাইতে বিদ্যুৎস্পর্শে প্রাণ গেল ভোলার জামালের

জামিন নিতে গিয়ে শিবিরের তোপের মুখে গ্রেপ্তার আ.লীগের দুই নেতা

কর্মীদের ছোট দৈর্ঘ্যের পোশাক বাদ দিতে বলল বাংলাদেশ ব্যাংক

শিক্ষার্থীরা টাকা দিয়ে যান দাঁড়িয়ে, স্থানীয়রা ফ্রিতে বসে!

যেভাবে খোঁজ মিলে পাইলটের, জানালেন শিক্ষক

১০

যারা জাতীয় সংগীত গাইতে বাধা দেয় তাদের সঙ্গে ঐক্য অসম্ভব : নাছির উদ্দিন

১১

স্যালুট দেওয়া সেই রিকশাচালকের হাতে ‘দাঁড়িপাল্লা’, চিত্রশিল্পীর ব্যাখ্যা

১২

যে কোনো সংকট ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে : টুকু

১৩

কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের স্থগিত পরীক্ষার নতুন সূচি ঘোষণা

১৪

প্রথম হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক মিসাইল উন্মোচন তুরস্কের

১৫

আমরা পুলিশ বাহিনীকে ঢেলে সাজাব : নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী

১৬

তাহলে ঢাকার বৈঠকে অংশ নিচ্ছে বিসিসিআই!

১৭

নেসকোর প্রিপেইড মিটারে মাসিক ভাড়া, ভোগান্তিতে গ্রাহকরা

১৮

এখনো নিখোঁজ ৩ ছাত্রী ও ২ অভিভাবক, দাবি মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষের

১৯

মাহরিন চৌধুরীর সমাধিতে বিমানবাহিনীর শ্রদ্ধা

২০
X