ওজন বেড়ে যাওয়া মানেই শুধু দেখতে অস্বস্তিকর নয়, সঙ্গে আসে নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকিও— যেমন- উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যা ইত্যাদি। তাই অনেকেই ডায়েট করেন, জিমে যান বা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। কিন্তু এত কিছু করেও যদি কাঙ্ক্ষিত ফল না আসে, তাহলে প্রথমেই নিজেকে প্রশ্ন করুন— আপনার ওজন আদৌ বেশি কিনা, সেটি সঠিকভাবে জানেন তো?
ওজন বেশি কিনা বুঝবেন কীভাবে?
প্রতিটি মানুষের জন্য একটা আদর্শ ওজন থাকে, যা নির্ভর করে তার উচ্চতা ও বয়সের উপর। এ ওজন ঠিক আছে কিনা, তা মাপার সবচেয়ে সহজ ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি হলো BMI (বডি মাস ইনডেক্স)।
BMI কীভাবে হিসাব করবেন?
BMI মানে হলো আপনার শরীরের ওজন আর উচ্চতার একটা তুলনামূলক হিসাব। এটা বের করতে যা করতে হবে :
- প্রথমে আপনার উচ্চতা মিটারে পরিণত করুন (১ ফুট = ০.৩০৪৮ মিটার)
- এরপর সেই মিটারের সংখ্যাটার বর্গফল বের করুন (উচ্চতা × উচ্চতা)
- এবার আপনার ওজন (কেজি) সেই বর্গফল দিয়ে ভাগ করুন। যেমন :
- আপনার উচ্চতা যদি ৫ ফুট হয়, তাহলে তা = ১.৫২ মিটার
বর্গফল = ১.৫২ × ১.৫২ = ২.৩১
ওজন যদি হয় ৬০ কেজি, তাহলে
BMI = ৬০ ÷ ২.৩১ = প্রায় ২৫.৯
BMI-এর মানে কী?
BMI মান (সংখ্যা) কী বোঝায়-
১৮.৫-এর নিচে আপনি ওজনহীন (Underweight)
১৮.৫ - ২৪.৯ ওজন স্বাভাবিক (Normal)
২৫ - ২৯.৯ অতিরিক্ত ওজন (Overweight)
৩০ বা তার বেশি স্থূলতা বা মোটা (Obese)
উপরের উদাহরণ অনুযায়ী, যার BMI ২৫.৯, তার ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি, মানে তিনি ওভারওয়েট শ্রেণিতে পড়ছেন।
ওজন বেশি থাকলে কী ধরনের সমস্যা হতে পারে?
- উচ্চ রক্তচাপ (হাই ব্লাড প্রেসার)
- টাইপ ২ ডায়াবেটিস
- হার্টের সমস্যা
- কোলেস্টেরল বাড়া
- স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি
অন্যদিকে, ওজন খুব কম হলেও সমস্যা হতে পারে— যেমন শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়া, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া, রক্তশূন্যতা ইত্যাদি।
করণীয় কী?
- আপনার BMI যদি স্বাভাবিকের বাইরে যায়, তবে সময়মতো ব্যবস্থা নিন
- সঠিক খাবার খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং পর্যাপ্ত ঘুম জরুরি
- প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
ওজন কমানো বা বাড়ানো নিয়ে চিন্তা করার আগে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো— আপনার ওজন কতটুকু হওয়া উচিত, সেটা সঠিকভাবে জানা। BMI সেই সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। তাই নিজেকে ফিট রাখতে হলে আগে নিজের শরীরকে ভালোভাবে বুঝে নিন।
সূত্র : এই সময় অনলাইন
মন্তব্য করুন