

ডিম এমন এক খাবার, যা সাশ্রয়ী দামে সহজলভ্য এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর। প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ ও প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিডে সমৃদ্ধ এই খাবারটি সকালের নাস্তা থেকে রাতের খাবার— সব জায়গাতেই মানিয়ে যায়।
তবে, অনেকেই প্রশ্ন করেন যে, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ডিম রাখলে শরীরে কী ঘটে? এ প্রসঙ্গে এবার বিশেষজ্ঞরা জানালেন, টানা এক মাস নিয়মিত ডিম খেলে শরীর ও মন— দুইয়ের মধ্যেই দেখা দেয় বেশ কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন। এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে সেই পরিবর্তনগুলোর কথা জানানো হয়েছে।
১. পেশি গঠন ও শক্তি বৃদ্ধি
ডিম হলো সম্পূর্ণ প্রোটিনের উৎস, যেখানে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় নয়টি অ্যামাইনো অ্যাসিডই রয়েছে। এসব উপাদান পেশি গঠনে ও ক্ষত সারাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ‘পোল্ট্রি সায়েন্স’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, নিয়মিত ডিম খেলে শরীরের পেশি বৃদ্ধি পায় এবং ব্যায়ামের পর দ্রুত পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে।। সকালে দুটি সেদ্ধ ডিম খেলে দিনভর শক্তি পাওয়া যায় এবং শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ হয়।
২. হৃদ্স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে
একসময় ধারণা ছিল, ডিম খেলে রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে যায়। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, পরিমিত পরিমাণে ডিম খেলে বরং হৃদ্স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিমে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও কোলিন শরীরের প্রদাহ কমিয়ে হৃদ্রোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। পুষ্টিবিদদের পরামর্শ, সুস্থ প্রাপ্তবয়স্করা দৈনিক এক থেকে দুটি ডিম খেলে কোনো ঝুঁকি থাকে না।
৩. তীক্ষ্ণ হয় মস্তিষ্ক ও দৃষ্টি
ডিমের কুসুমে থাকা কোলিন নামক উপাদান মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি, মনোযোগ ও মানসিক স্বচ্ছতা বাড়াতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এতে থাকা লুটেইন ও জিয়াজ্যানথিন চোখের দৃষ্টি ভালো রাখে এবং বয়সজনিত দৃষ্টিক্ষীণতা কমায়। তাই নিয়মিত ডিম খেলে মনোযোগ বাড়ে, ক্লান্তি কমে এবং মানসিক সতেজতা বজায় থাকে।
৪. ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
ওজন কমাতে চাওয়া অনেকেই এখন ডিমকে রাখছেন দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায়। কারণ, ডিমে থাকা উচ্চমাত্রার প্রোটিন দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে, ফলে অপ্রয়োজনীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, সকালের নাস্তায় ডিম খাওয়া মানুষরা সারাদিনে তুলনামূলক কম ক্যালরি গ্রহণ করেন। তবে সেদ্ধ বা ভাপা ডিম খাওয়াই সবচেয়ে উপকারী, ভাজা বা ঘি-তেলে রান্না করা ডিম নয়।
৫. চুল ও ত্বকে আসে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা
ডিমে থাকা বায়োটিন, ভিটামিন ডি ও অ্যামাইনো অ্যাসিড চুল, ত্বক ও নখের জন্য দারুণ উপকারী। বায়োটিন চুল পড়া কমায় এবং ভেঙে যাওয়া ঠেকায়। আবার প্রোটিন কোলাজেন উৎপাদন বাড়িয়ে ত্বক রাখে টানটান ও উজ্জ্বল। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, ডিমের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে সুরক্ষা দেয় এবং বার্ধক্যের ছাপ দেরিতে আনে।
মন্তব্য করুন