বাংলাদেশে ডায়রিয়া একটি সাধারণ সমস্যা। বিশেষ করে বর্ষাকালে বা পাকস্থলীতে খাবারের বিষক্রিয়ায় অনেকেই ডায়রিয়ায় ভোগেন। এ সময় দ্রুত সুস্থ হওয়ার জন্য সঠিক খাবার খাওয়া খুবই জরুরি। ব্রাট ডায়েট এমনই এক ধরনের খাবার পরিকল্পনা, যা ডায়রিয়ার সময় খুবই উপকারী।
ব্রাট (BRAT) মানে কী?
BRAT একটি ইংরেজি শব্দ। এতে মূলত লুকানো আছে চারটি খাবারের নাম। B মানে Banana (কলা), R মানে Rice (ভাত), A মানে Apple Sauce (আপেলের ঘন রস) আর T মানে Toast (পোড়া রুটি বা পাউরুটির টোস্ট)।
এই খাবারগুলো সাধারণত হজমের জন্য সহজ। আর এসব হজমে সহজ হওয়ায় পেটের সমস্যা কমায়। ডায়রিয়ার সময় শরীর থেকে এমনিতেই অনেক পানি ও লবণ বের হয়ে যায়। BRAT ডায়েট সেই ঘাটতি পূরণে পারে, ফলে দুর্বলতা কম লাগে।
বাংলাদেশে ব্রাট ডায়েট কীভাবে মানা যায়?
কলা, ভাত বা টোস্ট আমাদের দেশে সহজেই পাওয়া গেলেও আপেলের ঘন রস পাওয়া কঠিন। তাই এর পরিবর্তে সেদ্ধ করা আপেল খাওয়া যেতে পারে। অনেক সময় সেদ্ধ করে কলা-মুড়ি খেলেও উপকার পাওয়া যায়। আর ভাত বা রুটি তো আমাদের ঘরে সব সময় থাকে।
ডায়রিয়ার সময় সাধারণত মসলা দেওয়া খাবার খাওয়া যায় না। দুধ, দই, মাংস এসব এড়িয়ে চলতে বলেন চিকিৎসকরা। তাই খেতে হবে হালকা খাবার। যেমন—সাদা ভাত, সেদ্ধ আলু, কলা, টোস্ট, পাতলা সুজি ও খাওয়ার স্যালাইন।
ব্রাট ডায়েট কেন উপকারী?
ব্রাট ডায়েট ডায়রিয়ার সময় খুব উপকারী কারণ এটি হজমে সহজ এবং পেটকে ঠান্ডা রাখে। এ ডায়েট পেটের ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে। এতে থাকা সহজপাচ্য খাবার মল পাতলা হওয়া কমায়। এ ছাড়াও, ডায়রিয়ায় শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে, এ ডায়েট সেই দুর্বলতা থেকে শরীরকে রক্ষা করে। শিশু ও বয়স্কদের জন্য এই ডায়েট একদম নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত। তাই ডায়রিয়ার সময় এ ডায়েট খুবই কার্যকর।
ডায়রিয়া যদি দুই দিনের বেশি থাকে, তাহলে ডাক্তার দেখানো জরুরি। মনে রাখবেন— জ্বর, রক্তমিশ্রিত পায়খানা বা শরীর বেশি দুর্বল লাগলে দেরি না করে হাসপাতালে যেতে হবে দ্রুত।
ব্রাট ডায়েট সহজ ও সাশ্রয়ী। বাংলাদেশের প্রতিটি পরিবারেই এই খাবারগুলো সহজেই পাওয়া যায়। ডায়রিয়ার সময় এই খাবারগুলো খেলে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়। তবে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে, যেন পানি ও খাবার পরিষ্কার থাকে। সচেতন থাকুন, সুস্থ থাকুন।
তথ্যসূত্র : আইসিডিডিআর,বি ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
মন্তব্য করুন