কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৪, ০৩:৪৩ পিএম
আপডেট : ২১ মার্চ ২০২৪, ০৩:৪৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘স্লিপ ডিভোর্স’ কতটা জরুরি?

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে এক বিছানায় ঘুমাবেন, এটাই স্বাভাবিক। তবে অনেক সময় দম্পতিদের বিছানা আলাদা হয়ে যায়। তারা আলাদা ঘুমান। এটাই ‌‘স্লিপ ডিভোর্স’। কেন জরুরি এই ঘুম-বিচ্ছেদ? এতে কী কোনো উপকার আছে?

১. ঘুমের ‘মান’ বাড়ায়

অনেকেই জীবনসঙ্গীর নাকডাকা, নড়াচড়া, উঠে বারবার ওয়াশরুমে যাওয়া অথবা ফ্যান বা এসি চলবে কী চলবে না—সেই সিদ্ধান্তে একমত হতে না পারা, ভিন্ন ঘুমের অভ্যাস—এ রকম নানা কারণে আলাদা ঘুমান। তাতে নিজেদের ঘুম ভালো হয়। এবং ঘুমের মান বৃদ্ধ পায়। সুস্বাস্থ্যের জন্য ঘুম খুবই জরুরি।

২. দূরত্ব কমিয়ে আনে

শুনতে অবাক শোনালেও বাস্তবতা হলো, জীবনসঙ্গীর সঙ্গে মনোমালিন্য হলে মনোবিদরা কয়েক দিন আলাদা ঘুমানোর পরামর্শ দেন। এতে জীবনসঙ্গীর সঙ্গে সংঘাতের মানসিক যন্ত্রণা কাটিয়ে ওঠা যায়।

৩. কাস্টমাইজড স্পেস

একেকজনের ঘুমের অভ্যাস একেক রকম। কেউ আলো জ্বালিয়ে ঘুমান, কেউ আলো মোটেই সহ্য করতে পারে না। নিজের মতো করে ঘুমের একটা পরিবেশ তৈরি করা যায়।

৪. সন্তানের জন্য

শিশুর জন্য অন্তত দুই বছর পর্যন্ত (যতকাল বুকের দুধ খায়) মায়ের কাছে ঘুমানো খুবই জরুরি। বুকের দুধ খাওয়ার পাশাপাশি মায়ের কোল, মায়ের পাশে ঘুমানো, মায়ের ‘ওম’-এ থাকা খুবই জরুরি। নানা কারণে বারবার বাবু ঘুম থেকে উঠে যাওয়ায় জীবনসঙ্গীর ঘুমের অসুবিধার কারণেও অনেক সময় স্লিপ ডিভোর্স হয়। জীবনসঙ্গী আলাদা ঘুমান।

৫. সার্বিক সুস্থতা, স্বস্তি

অনেক সময় স্বামী-স্ত্রী আলাদা ঘুমানোর ফলে তাঁদের ঘুম ভালো হওয়া, নিজেদের স্বাস্থ্য ভালো থাকা, সারা দিন এনার্জি নিয়ে পার করা থেকে শুরু করে নিজেদের সম্পর্কে ভারসাম্য রাখাও সহজ হয়। জীবনসঙ্গী চাইলে গভীর রাত পর্যন্ত নিজের পেশাগত দায়িত্ব বা ব্যক্তিগত কাজ করতে পারেন। আরেকজনের তাতে কোনো সমস্যা হয় না।

স্লিপ ডিভোর্সের দরকার আছে। তবে জীবনসঙ্গীকে নিয়ে যদি একসঙ্গে আরামে ঘুমানো যায়, সেটাই সবচেয়ে ভালো। সম্পর্কের গভীরতার জন্য শারীরিকভাবে কাছাকাছি থাকার কোনো বিকল্প নেই। ঘুমবিশেষজ্ঞ ও মনোবিদ ডা. ওয়েন্ডি ট্রক্সেল একই বিষয়ে সিএনএনের একটা প্রতিবেদনে বলেন, ‘জীবনসঙ্গীর সঙ্গে ঘুমানো দুজনকেই সম্পর্কে গভীর নিরাপত্তার অনুভূতি দেয়।’

এই মনোবিদ আরও জানিয়েছেন, আলাদা ঘুমানোর ফলে সম্পর্কে ছন্দপতন ঘটে। ভুল-বোঝাবুঝির আশঙ্কা তৈরি হয় বেশি। এমনকি একে অপরকে অকারণে সন্দেহ করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয় সহজেই। তাই কী কারণে আলাদা ঘুমানোর প্রয়োজন, সেটা আগে সমাধানের পরামর্শ দিয়েছেন এই চিকিৎসক। আলাদা ঘুমানোটা এরপরের ধাপের বিকল্প।

আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব স্লিপ মেডিসিনের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ লোকই রাতে ঘুমোনোর সময় তাদের স্ত্রীর থেকে আলাদা শুতে পছন্দ করছেন। মোট ২০০০ জনকে নিয়ে প্রাথমিক সমীক্ষাটি করা হয়েছে। তাতেই ওঠে এসেছে এ তথ্য।

দম্পতিদের মধ্যে রাতে আলাদা ঘরে শোয়ার অভ্যাসকে বলা হয় ‘স্লিপিং ডিভোর্স’, বাংলায় ঘুমের সময় বিচ্ছেদ বললেও ভুল হবে না। সমীক্ষায় দেখা যায়, মোট ৪৫ শতাংশ পুরুষ স্বীকার করেছেন, তারা মাঝেমধ্যে বা বেশির ভাগ সময়ই রাতে অন্য ঘরের সোফায় কিংবা অতিথিদের রুমে গিয়ে শুতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। অন্যদিকে ২৫ শতাংশ নারীরা এ কথা স্বীকার করেছেন।

আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব স্লিপ মেডিসিনের গবেষকদের মত অনুযায়ী, ঘুম অসম্পূর্ণ হলে তা কেবল শরীরের ক্ষতি করে না, মন-মেজাজের উপরেও প্রভাব ফেলে। ঘুম ঠিকঠাক না হলে তর্ক-বিতর্ক বেশি হয়, ফলে সম্পর্কের ওপরেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

তাই শান্তিতে ঘুমোনোর জন্য ইদানীং অনেক দম্পতিই আলাদা শুতে পছন্দ করছেন। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, সঙ্গীর নাক ডাকার প্রবণতার জন্য অপর জন আলাদা ঘরে শুতে বাধ্য হচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে সঙ্গীকে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার জন্য উদ্যোগী করে তোলা ভীষণ জরুরি। এই ছোট সমস্যা স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো বড় সমস্যাও ডেকে আনতে পারে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে এখন অনেকেই ‘স্লিপ ডিভোর্স’-এর ব্যাপারে খোলাখুলি কথা বলছেন। অনেকেই বলছেন, তাদের সম্পর্ক যখন তলানিতে ঠেকেছিল তখন তারা ‘স্লিপ ডিভোর্স’-এর পথ বেছে নিয়েছিলেন। আর এই পন্থা মেনে চলার পর তাদের সম্পর্কের ভীত মজবুত হয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

স্থানীয় সমস্যা সমাধানে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস আনোয়ারুজ্জামানের

সবাইকে নিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব: নীরব

‘হামজা আমার দলে হলে বেঞ্চেই বসে থাকত’

লন্ডনে টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়রের সঙ্গে বাসস চেয়ারম্যানের মতবিনিময়

আফগানদের কাছে হারার পর যা বললেন মিরাজ

অল্প পুঁজি নিয়ে আফগানদের সাথে পারল না বাংলাদেশ

‘দেশের সার্বিক উন্নয়নে প্রবীণদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে হবে’

রাবেতাতুল ওয়ায়েজীনের সঙ্গে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদের মতবিনিময়

ডিএনসিসি এলাকায় টাইফয়েডের টিকা পাবে ১৩ লাখ শিশু

অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে রেমিট্যান্স এসেছে ৬৯ কোটি ডলার

১০

৭ বছর পর শহীদ জিয়ার মাজার জিয়ারত করলেন খালেদা জিয়া

১১

ফার্মগেটে ককটেল বিস্ফোরণ

১২

কালবেলার সংবাদের পর স্বপ্নের রঙিন ঘরে শাহারবানু

১৩

আখিরাতের কল্যাণ নিশ্চিতে কাজ করছে জামায়াত : মুজিবুর রহমান

১৪

রাজধানীতে তারেক রহমানের সাক্ষাৎকারের রেকর্ডেড ভিডিও প্রদর্শন

১৫

জবাব দিতে পিএসসিকে আলটিমেটাম

১৬

অসদাচরণের অভিযোগে বদলি চিকিৎসক দম্পতি

১৭

সড়কের পাশে ময়লার ভাগাড়, দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ মানুষ

১৮

শহীদ জিয়ার মাজারে দোয়া করলেন খালেদা জিয়া

১৯

নোয়াখালী বিভাগ চাইলেন ‘কাবিলা’

২০
X