বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া রাজনীতিতে পেছনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করেননি, সম্মুখ দিয়ে তিনি বিরোধীদলের নেতৃত্বে থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন।’
শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘তারেক রহমানের রাজনীতি-গণঅভ্যুত্থানের সাবলিমিটি’ বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বইটি লিখেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম।
ড. মঈন খান বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ অর্জন করেছিলাম, স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম। ছিল দুটি উদ্দেশ্য। একটি ছিল গণতন্ত্র, দ্বিতীয়টি ছিল দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি। স্বাধীনতার ৫৪ বছর আমরা ভেবেছিলাম, আমাদের অনেক সমস্যার সমাধান হয়েছে, আমরা নতুন দেশ করেছি, এদেশের মানুষ মুক্ত জীবন নিয়ে, মুক্ত চিন্তা নিয়ে বসবাস করবে, বাস্তবে সেটি হয়নি। ছন্দপতন হয়েছে কখন? প্রথম ছন্দপতন ’৭২-’৭৫, যখন একটি রাজনৈতিক দল যারা নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বলে দাবি করে। অথচ সেই রাজনৈতিক দল যখন স্বাধীনতার পরে একটি সরকার গঠন করল। তারা ভুলে গেল সেই মুক্তিযুদ্ধের মূল আদর্শের কথা। তারা যখন তাদের দলীয় আদর্শ এই দেশের প্রতিটি মানুষের উপরে চাপিয়ে দিয়ে একটি একদলীয় সরকার গঠন করেছে জাতীয় সংসদের ভেতরে মাত্র ১১ মিনিটের ব্যবধানে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছিল। আমরা শুনেছি আওয়ামী লীগ তথা কিছু কিছু রাজনৈতিক দল তারা বিএনপিকে সমালোচনা করে। কি সমালোচনা করেছিল? তারা বলেছিল, বিএনপির জন্ম নাকি ক্যান্টনমেন্টে হয়েছে। সেই সমালোচনার জবাব আমি দিয়েছি। আজকে স্পষ্ট করে আবারও বলতে চাই, বিএনপির জন্ম যদি ক্যান্টনমেন্টে হয়ে থাকে, যদি সেটা মেনে নেই তাহলে আমি সেই প্রশ্নের জবাবে আরেকটি পালটা প্রশ্ন করব। আওয়ামী লীগের জন্ম কি ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে হয়েছে? আমার প্রশ্ন হচ্ছে আওয়ামী লীগের যদি ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে জন্ম না হয়ে থাকে, তারা কেনো গণতন্ত্রকে হত্যা করে এদেশে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিল? আর বিএনপির জন্ম যদি তর্কের খাতিরে, যদি ধরে নেই ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে হয়েছিল, তাহলে বিএনপি এমন একটি দল তারা কিন্তু একদলীয় শাসনের শৃঙ্খল থেকে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষকে মুক্ত করে গণতন্ত্র দিয়েছিল।’
তিনি বলেন, ’৭৫-এর পরে আবার এদেশে একটি সামরিক শাসন কায়েম করে। সেই সামরিক শাসনকে দূর করতে রাজপথে গৃহবধূ বেগম খালেদা জিয়াকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়া রহমানের অনুসারীরা রাজনীতিতে নিয়ে এসেছিলেন এবং তিনি রাজপথে আট বছর সংগ্রাম করে এদেশে গণতন্ত্র পুনরায় ফিরিয়ে এনেছিলেন।’
মঈন খান আরও বলেন, ‘দেশের মানুষ আশঙ্কা প্রকাশ করছে কেন? আজকে এই অন্তর্বর্তী সরকারকে মানুষ সাদরে সম্ভাষণ জানিয়ে বাংলাদেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিল। তাদের বলেছিল, আমরা গণতন্ত্রে উত্তোলন করতে চাই, তোমরা দায়িত্ব গ্রহণ করো। একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের পথে নিয়ে যাও। আজকে সেই বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ কেনো এই সরকারের কার্যক্রমে কেনো হতাশ?’
মন্তব্য করুন