কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৬ পিএম
আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ঢাবি উপাচার্যের বাসভবনে জরুরি বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। পুরোনো ছবি
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। পুরোনো ছবি

কোটা আন্দোলন নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্যের বাসভবনে বৈঠক করছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী।

বুধবার (১৭ জুলাই) রাতে ঢাবি ভিসির বাসভবনে প্রবেশ করেন তিনি।

এর আগে এদিন দুপুরে সরকারের নির্দেশনা মেনে সিন্ডিকেট সভা করে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার ঘোষণা দেয় ঢাবি প্রশাসন।

এদিকে বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কিছু মহল কোটা আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে। এর ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ঘটনা ঘটেছে, তা খুবই বেদনাদায়ক ও দুঃখজনক। অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন ঝরে গেল।

ভাষণের শুরুতে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে অত্যন্ত বেদনা ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের জনগণের আত্মসামাজিক উন্নয়নের জন্য নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছি। মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ব্যবস্থা করে জনগণকে উন্নত জীবনযাত্রা দিতে শুরু করেছি। অনেক সাফল্য অর্জন করেছি। বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে একটা মর্যাদার আসনে আসীন করতে সক্ষম হয়েছি। তারপর আমাদের অনেক দূর যেতে হবে।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ছাত্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিল করে একটা পরিপত্র জারি করে সরকার। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে উচ্চ আদালত ২০১৮ সালের জারি করা সরকারি পরিপত্র বাতিল করে দেয়। সরকারের পক্ষ থেকে পরিপত্র বহাল রাখার জন্য সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করা হয়। আদালত শুনানির দিন ধার্য করেন। এ সময় ছাত্ররা কোটা বাতিলের দাবি নিয়ে আবারও আন্দোলন শুরু করে। এ আন্দোলনের শুরু থেকেই সরকার যথেষ্ট ধৈর্য ও সহশীলতার পরিদর্শন করেছে।

তিনি আরও বলেন, আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে পুলিশ সহযোগিতা করেছে। রাষ্ট্রপতির কাছে যখন আন্দোলনকারীরা স্মারকলিপি প্রদানের ইচ্ছাপোষণ করে সেক্ষেত্রে তাদের সুযোগ করে দেওয়া হয়। নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

আন্দোলনে নিহতের স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, যারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে তাদের পরিবারের জন্য জীবনজীবিকা নির্বাহের জন্য যা করা দরকার আমি তা করব। যারা মৃত্যুবরণ করেছে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আমি প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাই। যেসকল ঘটনা ঘটেছে তা কখনোই কাম্য ছিল না।

তিনি বলেন, কিছু মহল কোটা আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে। এর ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে, তা খুবই বেদনাদায়ক ও দুঃখজনক। একটি আন্দোলন ঘিরে অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন ঝরে গেল। আপনজন হারানোর বেদনা যে কত কষ্ট, তা আমার চেয়ে আর কেউ বেশি জানে না।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করছি, যারা হত্যাকাণ্ড, লুটপাট, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে এরা যেই হোক না কেন তারা যেন উপযুক্ত শাস্তি পায় সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি আরও ঘোষণা করছি যে সকল অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে তা সুষ্ঠু ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে সেসব বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হবে।

এদিকে আগামীকাল সারা দেশে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সারা দেশে সম্পূর্ণ শাটডাউন পালন করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে তিনি এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

আসিফ মাহমুদ ফেসবুকে দেওয়া বিবৃতিতে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ওপর পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাব, সোয়াটের ন্যাক্কারজনক হামলা, খুনের প্রতিবাদ, খুনিদের বিচার, সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত ও একদফা দাবিতে আগামীকাল (১৮ জুলাই) সারা দেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করছি।’

উল্লেখ্য, দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের তুমুল আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার। সেখানে বলা হয়েছিল, ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। ওইসব গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগে বিদ্যমান কোটা বাতিল করা হলো।

এ পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলামসহ সাত শিক্ষার্থী। এর প্রেক্ষিতে গত ৫ জুন ২০১৮ সালের জারিকৃত পরিপত্রটিকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এরপর থেকেই সারা দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ফুঁসে ওঠেন। কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে নানা স্থানে বিক্ষোভ করেন কোটাবিরোধীরা। ঢাবি ছাড়াও বিক্ষোভ হয় জাবি, জবি, রাবি, সাত কলেজসহ দেশের স্বনামধন্য বিভিন্ন কলেজে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কপ৩০ সম্মেলনে আলোচনায় কী থাকছে

এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১৬ অক্টোবর

চমেক হাসপাতালে এসি বিস্ফোরণ

সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার সমীকরণ মেলাতে বাংলাদেশের সামনে যত সিরিজ

এ ঘৃণ্য কাজটি যারা করেছেন, নিজেদের বিবেককে প্রশ্ন করুন : রিপন মিয়া

তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার বড় পর্দায় দেখালেন ছাত্রদল নেতা তারিক

নিয়মিত ব্লাড প্রেশার মাপা শুরু করবেন কখন থেকে

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে শ্রমিকদের অবরোধ

নাশকতার মামলা / মির্জা আব্বাস-রিজভীসহ ১৬৭ নেতাকর্মীকে অব্যাহতি 

সিনেমায় বাঙালিয়ানা কোথায়: রঞ্জিত মল্লিক

১০

দেশে কতবার গণভোট হয়েছে, কেমন ছিল ফলাফল

১১

ট্রাম্পকে সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মাননা দেবে ইসরায়েল

১২

শিক্ষা ভবনের সামনে ৭ কলেজ শিক্ষার্থীরা, যান চলাচল বন্ধ

১৩

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ইতালির প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ হবে কি না জানালেন প্রেস সচিব

১৪

আগামী সংসদের ওপর পিআর ইস্যু ছেড়ে দিতে বললেন মির্জা ফখরুল

১৫

দাবি মিজানুর রহমানের / বরিশালের হয়ে বিপিএল খেলবেন তামিম!

১৬

ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা, কিস্তির গ্যাঁড়াকলে জেলেরা দিশেহারা

১৭

তরুণ কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য তহবিল গঠনের প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার

১৮

বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করল আরও এক দেশ

১৯

দরিয়া-ই-নূর যেভাবে বাংলাদেশে

২০
X