দৈনিক কালবেলায় গত ৯ জুন ‘ব্রহ্মপুত্রের ২৩৩ কোটি টাকার বালু লোপাট’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন। তিন সদস্যের গঠিত তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন- উপজেলা নির্বাহী অফিসার সদর, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সদর ও নির্বাহী প্রকৌশলী বিআইডব্লিউটিএ। কমিটিকে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
বুধবার (১৪ জুন) ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) পারভেজুর রহমানের স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বলা হয়েছে, ৯ জুন ‘ব্রহ্মপুত্রের ২৩৩ কোটি টাকার বালু লোপাট’ সংক্রান্ত সংবাদ দৈনিক কালবেলা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে তদন্ত করে বিস্তারিত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নিম্নবর্ণিত সদস্যগণের সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি জেলা প্রশাসক, ময়মনসিংহ কর্তৃক অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে নাব্য সংকটের মুখে দেশের অন্যতম নদ ব্রহ্মপুত্র। তাই এটিসহ গুরুত্বপূর্ণ চার নদনদী রক্ষায় উদ্যোগ নেয় সরকার। ২০১৮ সালে ‘পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তুলাই এবং পুনর্ভবা নদীর নাব্য উন্নয়ন ও পুনরুদ্ধার’ প্রকল্পের কাজ শুরু করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআইডব্লিউটিএ। প্রকল্পটির মেয়াদ পাঁচ বছর।
সম্প্রতি ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদ খনন করে বালু উত্তোলন করা হয়। প্রকল্প কার্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ১১৩ কোটি ঘনফুটের বেশি বালু তোলা হয়েছে। যার অর্থমূল্য ২৫০ কোটি টাকার বেশি। অথচ বালু বিক্রি করে মাত্র ১৭ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে জেলা প্রশাসন। বেশিরভাগ বালুর এখন হিসাব নেই কারও হাতেই।
অভিযোগ উঠেছে, জেলা প্রশাসন, বিআইডব্লিউটিএ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) অবহেলায় বেশিরভাগ বালুই লুটপাট হয়ে গেছে। রাতের আঁধারে নদীর পাড়ে জমানো বালু বিক্রি করেছে অসাধু মাটি ব্যবসায়ী ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা। এর সঙ্গে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন জড়িত থাকারও অভিযোগ রয়েছে। অথচ এ ঘটনায় দায় নিতে চায় না কেউ। নানা কথা বলে বিষয়টি আড়ালে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিএ বলছে, প্রকল্প তাদের হলেও নদী থেকে উত্তোলন করা বালু রক্ষণাবেক্ষণসহ নিলামে বিক্রির দায় জেলা প্রশাসনের। আর উপজেলা পর্যায়ে যেসব স্থানে বালু রাখা হয়েছিল, তা সংরক্ষণ করে বিক্রির দায়িত্ব ইউএনওদের। পুরো কাজের সমন্বয় করবেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)। তবে ইউএনওরা এর দায় এড়াতে পারেন না।
মন্তব্য করুন