শাহজালাল বিমানবন্দরে সদ্য যোগ দেওয়া নির্বাহী পরিচালক (ইডি) গ্রুপ ক্যাপ্টেন রাগীব সামাদ বিমানবন্দরে স্বচ্ছতা এবং পেশাদারত্বের সঙ্গে যাত্রীসেবাকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে অপারেশন শুরু করার চ্যালেঞ্জও নিতে চান তিনি।
বুধবার (১৪ মে) সিভিল এভিয়েশন সদরদপ্তরে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। বিদায়ী নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলামকে বিদায় সংবর্ধনা ও নতুন দায়িত্ব নেওয়া নির্বাহী পরিচালক রাগীব সামাদকে স্বাগত জানাতে এভিয়েশন ও পর্যটন খাতের সাংবাদিকদের সংগঠন এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরাম অফ বাংলাদেশ (এটিজেএফবি) ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
নতুন নির্বাহী পরিচালক বলেন, একটি বিমানবন্দর হল একটি দেশের প্রতিচ্ছবি। বিমানবন্দর দেখেই একটি দেশ সম্পর্কে ধারণা পান বিদেশীরা। তাই এখানে তিনি সবাইকে নিয়ে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব নিয়ে দায়িত্ব নিতে চান।
তিনি বলেন, বিদায়ী নির্বাহী পরিচালক কামরুল ইসলাম যে কর্মদক্ষতা রেখে গেছেন, তাকে অনুসরণ করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে তিনি সাংবাদিকদের কাছ থেকে গঠনমূলক সমালোচনার পাশাপাশি সহযোগিতাও চান।
অনুষ্ঠানে বিদায়ী নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মো. কামরুল ইসলাম তার সময়ে শাহজালালে হওয়া বিভিন্ন কর্মকান্ড ও তিন বছরের দায়িত্বকালের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, গত অর্থ বছরে বিমানবন্দরটি আয় করেছে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা, যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১১ শতাংশ বেশি। বছরে ৮০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়ার সক্ষমতা থাকা এই বিমানবন্দর দিয়ে গত বছর যাতয়াত করেছেন এক কোটি ২০ লাখ যাত্রী। থার্ড টার্মিনাল চালু হলে যাত্রী সংখ্যা ও সেবার মান আরও বাড়ানো সম্ভব হবে।
শাহজালাল বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সক্ষমতা বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমি আমার মেয়াদে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার উপর জোর দিয়েছিলাম। এর ফলে ৮৫ শতাংশেরও বেশি লাগেজ এখন স্ট্যান্ডার্ড সময়ের মধ্যে (১ ঘন্টা) যাত্রীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে, যা স্বয়ংক্রিয় ট্র্যাকিং সিস্টেমের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হয়।
রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও ২০২৪ সালে এই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রী চলাচল প্রায় ৭ শতাংশ বেড়েছে জানিয়ে কামরুল ইসলাম বলেন, এর মূল কারণ অভিবাসী কর্মীদের চলাচল। অভিবাসী কর্মীরা যেন নিজ দেশের বিমানবন্দরে যথাযোগ্য সম্মান ও সেবা পায় সে বিষয়টি নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছি। এখনো সেই চেষ্টা চলছে।
অনুষ্ঠানে এটিজেএফবি সভাপতি তানজিম আনোয়ার বলেন, এই যুগে তথ্য আগলে রাখার প্রবণতা গুজব ছড়াতে আরও সহায়ক ভূমিকা পালন করে। গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম এখানকার ঘটনাগুলো সম্পর্কে সাংবাদিকদের নিয়মিত অবগত করেছেন। কর্মরত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেওয়া যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়েছেন। তিনি নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেও এভিয়েশন খাতের সাংবাদিকরা তার কাজগুলো স্মরণ রাখবে।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এটিজেএফবির সাধারণ সম্পাদক বাতেন বিপ্লব।
মন্তব্য করুন