নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২৮ জুলাই) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নির্বাচন প্রস্তুতি নিয়ে পর্যালোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন। এ সময় নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি দিকনির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা।
এদিকে চলতি সপ্তাহের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ স্পষ্ট হবে- গত শনিবার তৃতীয় দফায় ১৪টি রাজনৈতিক দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে যমুনায় মতবিনিময়কালে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এমন ইঙ্গিত দেন। তবে বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে কিছু উল্লেখ না থাকায় রাজনীতিতে এ নিয়ে এক ধরনের ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। দলগুলোও মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।
এটাকে সাধুবাদ জানিয়ে বিএনপি বলেছে, নির্বাচনের তারিখের বিষয়ে যথাযথ প্রক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশনকে জানানো উচিত সরকারের। তাদের প্রত্যাশা, সরকার প্রতিশ্রুত আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যেই নির্বাচন হবে। অন্যদিকে বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা কিছু বলেননি বলে দাবি জামায়াতে ইসলামীর। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বলেছে, সব দলের সঙ্গে আলোচনা না করে নির্বাচনের তারিখ সুনির্দিষ্ট বা খোলাসা করা যাবে না।
গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর একটা অরাজক পরিস্থিতির মধ্যে ৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। দায়িত্ব নিয়েই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিসহ দেশকে স্থিতিশীল করার দিকে নজর দেন ড. ইউনূস। তবে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ফ্যাসিবাদী শাসনের কারণে জনগণের রোষানলে থাকায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নানা ঘটনা ঘটতে থাকে। রাজনৈতিক দলগুলোর অভিযোগ, সরকার ও রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করতে পতিত ফ্যাসিবাদীদের ষড়যন্ত্রও অব্যাহত থাকে। এমন একটি অবস্থা থেকে দেশকে পুরোপুরি না হোক মোটামুটি পর্যায়ে স্থিতিশীল করতে বর্তমান সরকারকে বেশ বেগ পেতে হয়। এতে কেটে যায় প্রায় ছয় মাস।
এরপর রাষ্ট্র সংস্কারের দিকে নজর দেয় সরকার, যা এখন জুলাই সনদ ঘোষণার পর্যায়ে রয়েছে। এ ছাড়া গণহত্যার বিচারের দিকেও রয়েছে সরকারের ফোকাস। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সরকারের এই কার্যক্রমের মধ্যেই নির্বাচন নিয়ে এক ধরনের শঙ্কা দেখা দেয়। তারা সরকারের কাছে একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দাবিতে সোচ্চার হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৬ জুন ঈদুল আজহার আগের দিন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে। তবে বিএনপিসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের মিত্ররা এ ঘোষণায় সন্তুষ্ট হতে পারেনি। তাদের দাবি, ঝড়-বৃষ্টি, পাবলিক পরীক্ষাসহ নানা কারণে নির্বাচনের জন্য এপ্রিল উপযুক্ত সময় নয়।
মন্তব্য করুন