গণঅভ্যুত্থান না হলে নির্বাচনের স্বপ্নই দেখতে পারতেন না। আরও চার বছর অপেক্ষা করতে হতো। আমাদের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে আমরা নাকি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছি, আমরা নাকি নির্বাচন চাই না। অথচ কোটা সংস্কার আন্দোলনকে সরকার পতনের আন্দোলনে পরিণত করি, গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত করে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়েছি। আমরা নির্বাচন চাই তবে তার আগে মৌলিক সংস্কার, বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুরে জামালপুর ফৌজদারি মোড়ের পথসভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন।
জামালপুর শহরের তমাল তলা থেকে ফৌজদারি মোড় পর্যন্ত পদযাত্রা শেষে অনুষ্ঠিত পথসভায় নাহিদ ইসলাম বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভায় জাতীয় নাগরিক পার্টি অংশ নিয়েছে। সেখানে আমরা বলেছি, জাতীয় সংসদের একটি উচ্চ-কক্ষ থাকবে সেখানে প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে প্রতিনিধি থাকবে। পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের প্রতিনিধি নির্বাচনে ঐকমত্য হয়নি। এ সিদ্ধান্তে যারা একমত নন তাদের আমরা অনুরোধ করছি তারা যেন আমাদের সঙ্গে একমত পোষণ করে।
তিনি বলেন, আমরা পুলিশ, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের সংস্কার চাই, যাতে সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়। পুলিশের এমন সংস্কার চাই যাতে বাংলাদেশের পুলিশ রাজনৈতিক না হয়। নির্বাচন কমিশন যাতে রাজনৈতিক দলের স্বার্থ পূরণ করে- আমরা এমন সংস্কার চাই। বাংলাদেশের পুলিশ হবে জনগণের। নির্বাচনের মাধ্যমে যাতে শুধু ক্ষমতার পরিবর্তন না হয়, যাতে সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।
তিনি আরও বলেন, সামনে ৫ আগস্ট আসছে। এর আগেই আমরা প্রত্যাশা করছি জুলাই সনদ ঘোষণা করা হবে। ৩ আগস্ট আমরা ঢাকায় সমবেত হবো, আমরা ৫ আগস্টকে যেন দারুণভাবে উদযাপন করতে পারি। শুধু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের জন্য কেউ রক্ত দেয়নি, এতগুলো মানুষ রক্ত দিয়েছে সত্যিকারের পরিবর্তনের জন্য। আমরাও নির্বাচন চাই কিন্তু তার আগে সংস্কার এবং বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
এ সময় এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, জামালপুরে কোনো উন্নয়ন হয়নি, ব্যাংক লুটপাটের মতো জামালপুরে সমিতির নামে অর্থ লুটপাট হয়েছে। জামালপুরের অনেক সমস্যা, এসব সমস্যা সমাধানের জন্য জাতীয় নাগরিক পার্টির সঙ্গে থাকার জন্য জামালপুরবাসীকে আহ্বান জানান তিনি।
জামালপুরের পথসভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম মহাসচিব ডা. তাসনিম জারা বলেন, ‘সংস্কারের জন্য, জুলাই সনদের জন্য আমরা এখানে এসেছি। সংস্কারে যারা বাধা দেবে, তাদের দেশবাসী মনে রাখবে। রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিবর্তন করতেই হবে, পরিবর্তন আসতেই হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বারবার প্রতারিত হয়েছি, এবার আর হবো না। জামালপুরে মেডিকেল কলেজ আছে কিন্তু ছাত্ররা পড়তে পারে না। এ ধরনের মেডিকেল কলেজ আসলে কী কাজে আসছে?’
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব বলেন, ‘ফ্যাসিস্টরা রাষ্ট্রের অধিকার হরণ করেছে। রাষ্ট্রের জনগণের অধিকার রক্ষায় আমরা একসঙ্গে লড়ব, একসঙ্গে অধিকার প্রতিষ্ঠা করব।’
পথসভায় উপস্থিত থাকলেও সময় স্বল্পতার জন্য বক্তব্য রাখেননি মুখ্য সংগঠক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী ও শামান্তা শারমিনসহ অন্য কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।
মন্তব্য করুন