মহালয়ার মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। দেবী পক্ষের সূচনালগ্নে রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে শ্রীশ্রী চণ্ডীপাঠের মাধ্যমে দেবী দুর্গাকে কৈলাস থেকে মর্ত্যে আগমনের আহ্বান জানানো হয়। এ ছাড়া সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্যদিয়ে প্রদর্শিত হয় দেবী দুর্গার ‘মহিষাসুর বধ’ এর কাহিনী। আয়োজনে ছিল নৃত্য এবং গান।
আগমনী গানের মাধ্যমে শুরু হয় আড়ম্বরপূর্ণ এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সব মিলিয়ে দেবী দুর্গার বন্দনায় মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো মন্দির প্রাঙ্গণ। মহালয়ার শুভক্ষণে ভক্তদের প্রত্যাশা, সকল আধার দূর করে শঙ্কা কাটিয়ে আলো নিয়ে আসবেন দেবী দুর্গা।
মহালয়ার এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মন্দিরে উপস্থিত থেকে উপভোগ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা, ভারতীয় হাইকমিশনের প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) গোকুল ভি কে, ভুটানের রাষ্ট্রদূত দাশো কারমা হামু দর্জি, নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারী, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব, সাধারণ সম্পাদক ড. তাপস চন্দ্র পাল, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি অধ্যাপক ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিচালনা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সকাল ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপি এই সাংস্কৃতিক পরিবেশনা হয়। এর আগে প্রদীপ প্রজ্বলনের মধ্যদিয়ে মহালয়ার অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতার শুভ সূচনা করেন তারা।
প্রণয় ভার্মা, দাশো কারমা হামু দর্জি ও ঘনশ্যাম ভান্ডারী তাদের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মহালয়ার শুভক্ষণে মন্দিরে আগত ভক্তদের আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানান। এ সময় তারা সকলে মিলে শান্তিপূর্ণ দেশ ও বিশ্ব গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানে চণ্ডীপাঠ করেন জয় প্রকাশ। নৃত্য পরিবেশন করে স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী। এ ছাড়া সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী প্রিয়াংকা গোপ, অলোক সেন, দেবপ্রসাদ দাঁ, চম্পা বণিক, সমরজিৎ রায়, প্রিয়াংকা বিশ্বাস, কিরণ চন্দ্র রায়, চন্দনা মজুমদার প্রমুখ।
মন্দিরে মহালয়ার দ্বিতীয় পর্বের মূল আচার অনুষ্ঠান শুরু হয় সকাল সাড়ে ৭টায়। এই পর্বে ভক্তরা পূর্বপুরুষের আত্মার শান্তি কামনায় তিল তর্পণ করেন, যেটি মন্দিরের পুকুর ঘাটে সম্পন্ন হয়। বিশ্বাস করা হয়, এই দিনে তর্পণ বা জলাঞ্জলি দিলে পূর্বপুরুষরা তৃপ্ত হন এবং আশীর্বাদ করেন। পরে মহালয়ার ঘট স্থাপন ও বিশেষ পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
মন্তব্য করুন