অর্থনৈতিক কূটনীতি, জনকূটনীতি এবং আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি অনেক উজ্জ্বল হয়েছে। সীমিত সম্পদ ও নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যেও দেশের অর্থনীতিকে আরও এগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আজ সোমবার (২৩ অক্টোবর) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাফল্য (২০১৯-২০২৩)’ শীর্ষক প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশ ও এদেশের গণতন্ত্র সম্পর্কে অনেকের ধারণা সুস্পষ্ট না। বাংলাদেশ ছাড়া বিশ্বের আর কোনো দেশ গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, মানবাধিকারের জন্য জীবন দেওয়া নাই। বিদেশে বাংলাদেশের প্রতিটি মিশনে বঙ্গবন্ধুকর্নার স্থাপন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশের মিডিয়া, থিংক ট্যাংক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সেমিনার ও ওয়ার্কশপ আয়োজন করে আমাদের অভাবনীয় অর্থনৈতিক সাফল্যের চিত্র তুলে ধরা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু কর্নার দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে কাজ করছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্জনের কথা তুলে ধরে স্বাগত বক্তব্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্র নীতি মেনে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশ অসামান্য কূটনৈতিক সাফল্যের নজির রেখেছে। সবার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক টিকার ব্যবস্থা করা অনেক চ্যালেঞ্জিং একটা কাজ ছিল।
বর্তমানে বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে উল্লেখ করে শাহরিয়ার বলেন, আগামী নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর কমানোর চেষ্টা করা হবে। যাতে নির্বাচনের আগে তিনি দেশে দলীয় কর্মসূচিগুলোতে অংশ নিতে পারেন।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, গত পাঁচ বছরে দুটো কাজ অসমাপ্ত রয়ে গেছে। সেগুলো হচ্ছে রোহিঙ্গাদের নিরাপদে প্রত্যাবাসন এবং বিদেশে পালিয়ে থাকা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের ফিরিয়ে আনা। এই দুটি কাজ খুবই জটিল এবং চ্যালেঞ্জিং।
বাংলাদেশের ওপর পরাশক্তিগুলোর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের অর্থনীতি এগিয়েছে। বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্বও বেড়েছে। অনেক দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক গড়তে চায়। বর্তমান সরকারের সময়ে বন্ধুত্বের বৈচিত্র্য ও ভারসাম্য বজায় রেখেছে সরকার। একইসঙ্গে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক এতো ভালো করেছে, যার ফলে বাংলাদেশ বহু ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা পেয়েছে।
বক্তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গত ৫ বছরের সাফল্য তুলে ধরার প্রয়াসকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, আগের চেয়ে বর্তমানে বিশ্বে বাংলাদেশের উপস্থিতি বেড়েছে। অর্থনৈতিক কূটনীতিও শক্তিশালী হয়েছে। তবে আগামীতে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের জন্য নতুন বাজারও খুঁজে বের করতে হবে।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন, বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের (বিইআই) বিশিষ্ট ফেলো ফারুক সোবহান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, জাতিসংঘের ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) বিশেষ দূত ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমান, গবেষক ও কলামিস্ট সুভাষ সিংহ রায় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলি সাবরিন।
মন্তব্য করুন