রাজধানীর মোহম্মদপুরে বেশ কয়েকটি রেস্তোরাঁ ও ভবনে অভিযান চালিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। নকশাবহির্ভূত স্থাপনা, আগুনের ঝুঁকিসহ নানা অনিয়মের দায়ে কেএফসি, মুঘল এম্পায়ার, নবাবী ভোজ ও নূর আলী টাওয়ারকে ৯ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ভেঙে দেওয়া হয় কয়েকটি ভবনের নকশাবহির্ভূত স্থাপনা। ছাদ থেকে রেস্তোরাঁ সরিয়ে নিতে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে ১৫ দিন। এ সময় রমজানজুড়েই এই অভিযান চলমান থাকবে বলে জানান রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজিনা সারওয়ার।
সোমবার (১১ মার্চ) মোহাম্মদপুরের শিয়া মসজিদ মোড়ের নবাবী ভোজ রেস্তোরাঁয় অভিযান চালান রাজউকের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় নকশা অনুযায়ী অবকাঠামো তৈরি না করার প্রমাণ পান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
ইচ্ছেমতো ফায়ার এক্সিট, নেই অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। এসব অনিয়মের কারণে নবাবী ভোজ ও নূর আলী টাওয়ারকে যৌথভাবে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজিনা সারওয়ার বলেন, ‘যদি দেখতাম নবাবী ভোজ এখানে ওনাদের কাছে শুধু ভাড়া নিয়ে চলছে। তখন আমি দুই গ্রুপকে আলাদা আলাদা পেনাল্টি করতাম। কিন্তু যাই হোক দেখলাম যে, তারা সমন্বিতভাবেই এটা চালাচ্ছে। এ জন্য জরিমানাটা নবাবী ভোজের নামেই হয়েছে, কিন্তু এটা দুজনকেই শেয়ার করতে হবে।’
পরে তাজমহল রোডের কেএফসিতে অভিযান চালায় রাজউক। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানান, ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা চালানোর আর কোনো সনদই নেই তাদের। এ সময় ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় প্রতিষ্ঠানটিকে। একই ভবনের মুঘল এম্পায়ার নামের আরও একটি রেস্টুরেন্টকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ভেঙে দেওয়া হয় বেইসমেন্টে অবৈধভাবে নির্মাণ করা দোকান ও সিঁড়িও। পাশের ভবনের ছাদে গড়ে তোলা শর্মা ভিলেজ নামের রেস্তোরাঁটি ১৫ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলতে বলা হয়েছে। রেস্তোরাঁটির গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরও বলেন, ‘সাধারণ নিয়ম হচ্ছে যে, কোনো ব্যবসা আমি পরিচালনা করার আগে সব পেপার্স কারেক্ট করে তারপর ব্যবসাটা পরিচালনা করব। কিন্তু এখানে দেখলাম বিষয়টা ব্যতিক্রম। ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া ওনাদের আসলে কোনো ডকুমেন্টই নেই।’
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি ভবনে ভয়াবহ আগুনে মারা যান ৪৬ জন। ভবনটিতে একাধিক রেস্তোরাঁ ছিল। ছিল না অগ্নি নির্বাপনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। ভবনটির সিঁড়িতেও রাখা হয়েছিল গ্যাস সিলিন্ডার। ফলে আগুন লাগার পরে বের হতে পারেননি ভেতরে থাকারা। এ ঘটনার পর থেকে অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজধানীর বিভিন্ন হোটেল–রেস্তোরাঁয় অভিযান চালাচ্ছে সিটি করপোরেশন ও রাজউক।
মন্তব্য করুন