কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১০ মে ২০২৪, ১১:৩৭ এএম
অনলাইন সংস্করণ

নতুন গতিসীমা ধীরে ধীরে কার্যকর করা হবে : বিআরটিএ

সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে সড়কভেদে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও বাসের সর্বোচ্চ গতি নির্ধারণ করে মোটরযানের গতিসীমা সংক্রান্ত নির্দেশিকা, ২০২৪ জারি করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। ছবি : সংগৃহীত
সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে সড়কভেদে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও বাসের সর্বোচ্চ গতি নির্ধারণ করে মোটরযানের গতিসীমা সংক্রান্ত নির্দেশিকা, ২০২৪ জারি করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। ছবি : সংগৃহীত

দেশের সড়ক-মহাসড়কে যানবাহনের সর্বোচ্চ গতিসীমা বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। বুধবার (০৮ মে) বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার স্বাক্ষরিত ‘মোটরযান গতিসীমা নির্দেশিকা, ২০২৪’ জারি করা হয়। এতে এক্সপ্রেসওয়ে এবং জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে থ্রি-হুইলার যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জনসচেতনতা তৈরি করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে নতুন গতিসীমা ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন করা হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বিআরটিএর মুখপাত্র মাহবুব-ই-রব্বানী জানিয়েছেন, এটি ব্যাপকভাবে বাস্তবায়নে সময় লাগবে। নতুন নির্দেশিকা সম্পর্কে জনগণকে জানানোর জন্য প্রচারণা কর্মসূচি চালানো হবে। এই অন্তর্বর্তী সময়কালে গতিসীমা লঙ্ঘন প্রতিরোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত ব্যবহার করা হবে। এর উদ্দেশ্য চালকদেরকে নতুন গতিসীমা সম্পর্কে জানানো।

নির্দেশিকায় ১০ ধরনের যানবাহনের জন্য সড়কের ৬টি ক্যাটাগরিতে গতিসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। সড়কভেদে ব্যক্তিগত গাড়ি ও বাসের সর্বোচ্চ গতি নির্ধারণ করা হয়েছে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার। আর মোটরসাইকেলের সর্বোচ্চ গতি হবে ৬০ কিলোমিটার। তবে শহরের রাস্তায় ৩০ কিলোমিটার গতিতে চলবে মোটরসাইকেল ও থ্রি-হুইলার। তবে সড়ক-মহাসড়কে লেন ঠিক না করে যানবাহনের গতিসীমা বেঁধে দেওয়াকে অপরিকল্পিত উদ্যোগ বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। তা ছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশের সড়কে ৩৫০ সিসি পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দিয়েছে। বিআরটিএ যে গতিসীমা বেঁধে দিয়েছে, তা ওই সিদ্ধান্তের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

তাদের মতে, সর্বোচ্চ মানের সড়ক এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করে যানবাহন চলাচলের কম গতিসীমা বেঁধে দেওয়া এ ধরনের স্থাপনার মানের সঙ্গে বেমানান। সাধারণত এক্সপ্রেসওয়েতে ১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার গতিতে যানবাহন চলে। এক্সপ্রেসওয়েতে সাধারণ হাইওয়ের মতো গতিতে যানবাহন চালাতে হলে এ ধরনের অবকাঠামো নির্মাণে বিপুল বিনিয়োগের কোনো প্রয়োজন ছিল না।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েট অধ্যাপক ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. হাদীউজ্জামান কালবেলাকে বলেন,

এক মন্ত্রণালয় মোটরসাইকেলের সিসি বাড়াচ্ছে। অন্য মন্ত্রণালয় ৩০ কিলোমিটার গতিতে চালাতে বলছে। এতে বোঝা যায়, নিজেদের মধ্যে সমন্বয় নেই।

তিনি বলেন, ‘একই লেনে যদি সব ধরনের যানবাহন চলে, তা হলে কোনোভাবেই যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। গতিসীমা ঠিক করার উদ্দেশ্য হলো সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো। কিন্তু যেভাবে গতি নির্ধারণ হয়েছে, তা মোটেই বিজ্ঞানসম্মত নয়, তেমনি অবকাঠামোর সঙ্গে সামাঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এটা মানানো যাবে না। এতে সড়কে আরও বেশি বিশৃঙ্খলা বাড়বে। মামলা বাড়বে। কারণ একই লেনে সব ধরনের যানবাহন চললে দুর্ঘটনাও বাড়বে।’

বিআরটিএ বলছে, এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা অর্ধেকে কমিয়ে আনতে নতুন নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। বেঁধে দেওয়া গতিসীমা অমান্য করা হলে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসের মতো জরুরি পরিষেবায় নিয়োজিত মোটরযানের ক্ষেত্রে এই গতিসীমা শিথিলযোগ্য হবে।

নির্দেশিকা অনুযায়ী, মোটরকার, জিপ, মাইক্রোবাস, হালকা যাত্রীবাহী মোটরযান এবং বাস-মিনিবাস ও ভারী যাত্রীবাহী মোটরযানের ক্ষেত্রে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ গতিসীমা এক্সপ্রেসওয়েতে ৮০ কিলোমিটার, জাতীয় মহাসড়কে (ক্যাটগরি-এ) ৮০ কিলোমিটার, জাতীয় (ক্যাটগরি-বি) ও আঞ্চলিক মহাসড়কে ৭০ কিলোমিটার, জেলা সড়কে ৬০ কিলোমিটার, সিটি করপোরেশন/পৌরসভা/জেলা সদরে ৪০ কিলোমিটার, উপজেলা মহাসড়ক ও শহর এলাকায় প্রাইমারি আরবান সড়কে ৪০ কিলোমিটার, শেয়ার রোড ও অন্যান্য সড়ক এবং গ্রামীণ সড়কে ৩০ কিলোমিটার।

ট্রাক, মিনি ট্রাক, কাভার্ডভ্যানসহ মালবাহী মোটরযান এবং ট্রেইলারযুক্ত আর্টিকুলেটেড মোটরযানের ঘণ্টায় সর্বোচ্চ গতিসীমা এক্সপ্রেসওয়েতে ৫০ কিলোমিটার, জাতীয় মহাসড়কে (ক্যাটাগরি-এ) ৫০ কিলোমিটার, জাতীয় (ক্যাটাগরি-বি) ও আঞ্চলিক মহাসড়কে ৪৫ কিলোমিটার, জেলা সড়কে ৪০ কিলোমিটার, সিটি করপোরেশন/পৌরসভা/জেলা সদরে ৩০ কিলোমিটার, উপজেলা মহাসড়ক ও শহর এলাকায় প্রাইমারি আরবান সড়কে ৩০ কিলোমিটার, শেয়ার রোড ও অন্যান্য সড়ক এবং গ্রামীণ সড়কে ৩০ কিলোমিটার।

মোটরসাইকেলে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ গতিসীমা এক্সপ্রেসওয়েতে ৬০ কিলোমিটার, জাতীয় মহাসড়কে (ক্যাটাগরি-এ) ৫০ কিলোমিটার, জাতীয় (ক্যাটাগরি-বি) ও আঞ্চলিক মহাসড়কে ৫০ কিলোমিটার, জেলা সড়কে ৫০ কিলোমিটার, সিটি করপোরেশন/পৌরসভা/জেলা সদরে ৩০ কিলোমিটার, উপজেলা মহাসড়ক ও শহর এলাকায় প্রাইমারি আরবান সড়কে ৩০ কিলোমিটার, শেয়ার রোড ও অন্যান্য সড়ক এবং গ্রামীণ সড়কে ২০ কিলোমিটার।

এক্সপ্রেসওয়ে ও জাতীয় মহাসড়কে (ক্যাটাগরি-এ) ও (ক্যাটাগরি-বি) এবং আঞ্চলিক মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জেলা সড়ক, সিটি করপোরেশন/পৌরসভা/জেলা সদর, উপজেলা মহাসড়ক ও শহর এলাকায় প্রাইমারি আরবান সড়কে চলাচলের অনুমতি সাপেক্ষে সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার গতিতে থ্রি-হুইলার চলতে পারবে। এ ছাড়া শেয়ার রোড ও অন্যান্য সড়ক এবং গ্রামীণ সড়কে সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার গতিতে থ্রি-হুইলার চলতে পারবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাকসু নির্বাচনী বিতর্ক অনুষ্ঠানে ভিপি প্রার্থীদের নানা প্রতিশ্রুতি

দুটি বাদে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের সব সেনা ঘাঁটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে

১২ অক্টোবর : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

স্ত্রীর মৃত্যুর ৫ ঘণ্টা পর মারা গেলেন স্বামীও

ইফাদ গ্রুপের গৌরবময় ৪০ বছর উদ্‌যাপন, সমৃদ্ধির পথে একসাথে

রোববার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

১২ অক্টোবর : আজকের নামাজের সময়সূচি

জুতা পরে জানাজার নামাজ পড়া কি জায়েজ?

প্রতিদিনের সাধারণ যে অভ্যাসেই কমে যাচ্ছে আপনার মোবাইলের আয়ু

যে গ্রামে বসবাস করলেই মিলবে ২৭ লাখ টাকা!

১০

পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে তুমুল সংঘর্ষ

১১

‘শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ডের শহীদ পরিবারকে সহযোগিতা করবে সরকার’

১২

অসুস্থ বিএনপি নেতা ডা. রফিকের খোঁজ নিতে বাসায় জোনায়েদ সাকি

১৩

আফগানদের কাছে নাস্তানাবুদ হয়ে বাংলাদেশের সিরিজ হার

১৪

যুক্তরাষ্ট্রে ফুটবল ম্যাচ শেষে এলোপাতাড়ি গুলি, নিহত ৪

১৫

চট্টগ্রামে কনসার্টে গোলাগুলি, গুলিবিদ্ধ ১

১৬

চিহ্নিত ব্যক্তির দায় প্রতিষ্ঠানের ওপর দেওয়া উচিত নয় : বিএনপি

১৭

জবি তরুণ কলাম লেখক ফোরামের নেতৃত্বে ইমন-সোহান

১৮

এনসিপির ‘পলিসি ও রিসার্চ উইং’ গঠন, দায়িত্ব পেলেন যারা

১৯

নড়াইলে সাংবাদিকদের মিলনমেলা

২০
X