সরকারি অফিস মশা প্রজনন কেন্দ্র বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম। সরকারি অফিসগুলোকেও জরিমানা করা হবে।
বুধবার (১৯ জুলাই) সচিবালয়ের আন্তঃমন্ত্রণালয়ের ‘ডেঙ্গু ও মশাবাহিত অন্যান্য রোগ প্রতিরোধে গৃহীত কার্যক্রম পর্যালোচনা সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। তা ছাড়া ডেঙ্গু নিয়ে সচেতন করতে চিঠি পাঠাবে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও সিটি করপোরেশন।
এ সময় জানানো হয়, বেসরকারি অফিসেও মশা প্রজনন হচ্ছে। বেসরকারি ব্যাংকে কোটি কোটি টাকা খরচ করে ডেকোরেশন করা হয়। কিন্তু সেখানে মশা হচ্ছে।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেছেন, সব সরকারি অফিসগুলোকে আজকে চিঠি দেন, এই মিটিং রেফারেন্সে।
তখন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম স্থানীয় সরকারমন্ত্রীকে বলেন, আমরা অফিসগুলোকে চিঠি পাঠাব, আপনারাও মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দেন। যাতে কোথাও লার্ভা পেলেই আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি।
থানাগুলোতে মশার লার্ভা প্রজনন নিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, মিটিংয়ের রেফারেন্সে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দেন। জব্দকৃত যানবাহনসহ টায়ার-টিউবে স্প্রে করার ব্যবস্থা করেন। স্কুলগুলোতে সভা করা হয়েছে, সেখানে ফাইন (জরিমানা) করার ব্যবস্থা করেন। স্কুলের আঙিনা পরিষ্কার করতে হবে। নইলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন।
দেশজুড়ে ডেঙ্গুর বিস্তার ঠেকাতে সরকারি-বেসরকারি সব অফিসে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চিঠি পাঠানো হবে, এরপরও কোথাও পরিদর্শনে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে করা হবে জরিমানা।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নির্মাণাধীন ভবনে মশার লার্ভা পেলে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা প্রথমবার তা পরিষ্কার করে দেবে; এরপর তা পাওয়া গেলে জরিমানা করা হবে। তারপরও লার্ভা পাওয়া গেলে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানান তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, বারবার সতর্ক করার পরও যারা মশার প্রজনন করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার কোনো উপায় নেই। হাসপাতালের আশপাশে মশা প্রজনন হয় জানিয়ে তিনি বলেন, এটা হতে পারে না।
এ ছাড়া ‘তিন দিনে এক দিন জমা পানি ফেলে দিন’- এ এসএমএম বিটিআরসির মাধ্যমে সবার মোবাইলে পাঠানোর সিদ্ধান্তও এসেছে সভায়।
ডেঙ্গুর জন্য ডেডিকেটেড হাসপাতাল করা হবে কীনা- প্রশ্নে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, আমরা ইতোমধ্যে উত্তর সিটি করপোরেশেনের হাসপাতাল চালু করতে বলেছি। সেখানে ৮০০-৯০০ রোগীর চিকিৎসা করা সম্ভব। মুগদাসহ আরও অনেক হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা করা হচ্ছে। যদি একজন লোকও আক্রান্ত না হয় এবং একজন লোকও যদি মৃত্যুবরণ না করে তবেই আমি নিজেকে সফল বলে দাবি করব। এখন পর্যন্ত মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ভারতের থেকে আমরা ভালো আছি।
ডেঙ্গুর সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা করা হবে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, দুর্যোগ তখনই ঘোষণা করা হয় যখন আমরা আর করতে পারব না। এমনতো ঘটনা না নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে না, কাজ করার মতো যোগ্যতা আমাদের নেই। আমাদের কাজ করার যোগ্যতা আছে নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে। জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা করার মতো আমি তো কোনো ঘটনা দেখি নাই। আর এটি তো জাতীয় সিদ্ধান্ত। আমি তো স্থানীয় সরকারমন্ত্রী। আমি তো জাতীয় সিদ্ধান্ত নেব না।
মন্তব্য করুন