সবারই খেয়াল থাকার কথা, প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় উল্লেখ করেছেন, শেষ মুহূর্তে বিএনপি নির্বাচনে আসতে পারে—এটা ধরেই আওয়ামী লীগ নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আমরা সবাই জানি, বিএনপির একদফা শেখ হাসিনাবিহীন নির্বাচন কোনো আন্তর্জাতিক সমর্থন পায়নি। বেশ কদিন আগে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রি কার্যক্রম শেষ হয়েছে। এই লেখা যখন লিখছি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চূড়ান্ত পর্যায়ে। অন্য দলগুলোর মনোনয়নও ২৭ নভেম্বরের মধ্যে মোটামুটি চূড়ান্ত হয়ে যাবে। ফলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ, পল্টন, গুলিস্তান, তোপখানা রোড উৎসবের এলাকায় পরিণত হয়েছে।
বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা ২০টি দলের অনেক দলই নির্বাচনে যাচ্ছে। এরই মধ্যে কয়েকটি দল [কল্যাণ পার্টি, মুসলিম লীগ, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর)] সংবাদ সম্মেলন করে ‘যুক্তফ্রন্ট’ নামে নির্বাচনমুখী জোটের ঘোষণা দিয়েছে। বাকি দলগুলোও কয়েকদিনের মধ্যে এদের সঙ্গে যুক্ত হবে বলে শোনা যাচ্ছে। এখন প্রশ্ন, রাজনীতির মাঠে বিএনপি শেষ পর্যন্ত একা দর্শক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে। বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির কয়েকজন সদস্য, বেশ কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী, এমপিসহ অন্তত ৫০ জন কেন্দ্রীয় নেতা নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তৃণমূল বিএনপি, বিএনএম এবং স্বতন্ত্র জোট থেকে তারা নির্বাচন করার কথা বলেছেন। কার্যত ৮ থেকে ১০ জন ছাড়া বিএনপিতে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক নেতা থাকছেন না। এখন প্রশ্ন থাকে যে, কালের বিবর্তনে মুসলিম লীগ-ন্যাপের মতোই হারিয়ে যাবে বিএনপি? কিন্তু তখনো যে নামেই হোক না কেন, বাংলাদেশে আওয়ামীবিরোধী একটা মহল থাকবেই। যে কোনো নামে ওই দল সৃষ্টি হতে পারে। তবে দুঃখের বিষয় হলো, আজ কারও কারও কথা শুনে মনে হয়, বিএনপি মানেই হচ্ছে সংসদীয় ধারার রাজনীতি। যে বিএনপি কোনোদিনই সংসদীয় ধারার রাজনীতি করেনি এবং কখনোই বিশ্বাস করে না। তাদের জন্য আমাদের গুণীজনের আগ্রহের শেষ নেই। ২০০৮ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সংসদের বিরোধী দলের নেতা ছিলেন খালেদা জিয়া; কিন্তু মাত্র ৯ দিন সংসদে গিয়েছেন। সেই দলের প্রতি কোনো কোনো গুণীজনের আগ্রহের সীমা নেই। যারা ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫—তিনটা বছরজুড়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে, সরকারি স্থাপনা ধ্বংস করেছে, বিদ্যুৎকেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছে, তারা নাকি গণতান্ত্রিক দল। আট বছর পর আবার তারা সেই ধ্বংসের খেলায় মেতে উঠেছে। আমাদের জাতীয় জীবনে বেশ কিছু ক্ষত আছে, সে ব্যাপারে আমাদের বিজ্ঞজনের অনেককেই বক্তব্য দিতে দেখি না। তাদের সমালোচনার লক্ষ্য সব সময় আওয়ামী লীগ। অবশ্য এই মানুষগুলো আগেও ছিলেন এবং মধ্য বয়স্ক অনেকেই সেই লিগেসি বহন করে চলছেন। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারিতে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাত্র ১০ মাসের মাথায় একটি প্রতিবিপ্লবী দল জাসদের জন্ম হয়। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা এখন স্বীকার করছেন যে, সেখানে বহিঃশক্তির মদদ ছিল। এখন জামায়াতে ইসলামীর মূল দুই নেতা (১৯৭৩-৭৪) জাসদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। গত চার দশকের অধিক সময় ধরে বাংলাদেশে শুধু অতথ্য-অপতথ্য দেওয়া হয়েছে। এক মিথ্যাকে বারবার উপস্থাপন করে সত্যে পরিণত করার চেষ্টা করা হয়েছে। যারা এ কাজটা করেছে তারা স্বাধীনতার পর প্রায় তিন দশক বাংলাদেশ শাসন করেছে। তাদের উত্তরসূরিরা এখনো সক্রিয়। তারা কথায় কথায় ১৯৭৩ সালের জাতীয় নির্বাচনে কারচুপির প্রসঙ্গ নিয়ে আসে। ইতিহাসের তথ্যবিচারে এরা কি মানুষকে দেখাতে পারবে ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে কয়টা আসনে কারচুপি হয়েছিল। ওই ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খুনি মোশতাকের দাউদকান্দির নির্বাচনী আসনের কথা বলা হয়েছে এবং এখনো তাই বলা হচ্ছে। সেই আসনে যাকে হারিয়ে নৌকা মার্কার প্রার্থীকে বিজয়ী করা হয়েছিল, তার বক্তব্য কি পরবর্তী সময়ে কেউ নিয়েছেন। পরাজিত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আবদুর রশিদের কোনো সাক্ষাৎকার কেউ দেখাতে পেরেছেন? বরং ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে সেই ইঞ্জিনিয়ার আবদুর রশীদ আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন। গত ২৩ নভেম্বর জাতীয় পার্টি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে, নির্বাচন কমিশনের ওপর তাদের আস্থা সৃষ্টি হয়েছে। অর্থাৎ সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি জানিয়েছে, তারা নির্বাচনে যাচ্ছে। জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন আমাদের আশ্বস্ত করেছে। তাদের এই আশ্বাসের কারণে, তাদের প্রতি আমাদের বিশ্বাস সৃষ্টি হওয়ার কারণে, আমাদের চেয়ারম্যানের নির্দেশে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করছি।’
পৃথিবীতে ১৯৩টি দেশের অগণিত রাজনৈতিক দল আছে; কিন্তু বিএনপির মতো এমন অস্বাভাবিক রাজনৈতিক দল পাওয়া যাবে না। এই দল সব ধরনের সংস্কারের বাইরে চলে গেছে। গোপন আস্তানা থেকে বিএনপির রুহুল কবির রিজভী ওসামা বিন লাদেনের মতো ভিডিও বার্তা পাঠিয়েই যাচ্ছেন। যথারীতি একের পর এক রাজনৈতিক দল নির্বাচনের মিছিলে যোগ দেওয়ায় ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন রিজভী সাহেব। গোপন আস্তানা থেকে ভিডিও বার্তায় বিএনপি নেতা রিজভী বলেছেন, এসব রদ্দি মার্কা বেইমান, দলছুটরা ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন। এসব রং বদলানো পরজীবী রাজনীতিবিদরা জনগণের সংকেত বার্তা টের পাচ্ছেন না। এরা নব্য-রাজাকার। দয়া করে রিজভী সাহেবকে কেউ জিজ্ঞেস করতে পারেন, এই যে তিনি ‘রদ্দি মার্কা, বেইমান, দলছুট, পরজীবী রাজনীতিবিদ’ এসব শব্দগুচ্ছ বাদ দিলে কি বিএনপির জন্ম ইতিহাস লেখা যাবে? আরেক মহাবিপ্লবী নেতা বলেছেন, রাজনীতির মাঠে আজ কোরবানির হাট বসেছে। যেখানে রাজনীতিবিদরা গরু-ছাগলের মতো বিক্রি হচ্ছেন।
গত ২২ নভেম্বর ‘দৈনিক প্রথম আলো’র প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল ‘মাহমুদুর রহমান মান্না কেন রাজপথে নেই’। যদিও শিরোনামে কোনো প্রশ্নবোধক চিহ্ন ছিল না। সরকার পতনের দাবিতে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শরিক দল নাগরিক ঐক্য। এতদিন ধরে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান (মান্না) রাজপথে সরব থেকে সরকারের সমালোচনা করে আসছিলেন। তবে ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষের পর থেকে তাকে আর রাজপথে দেখা যাচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিটিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, শুধু ২৮ অক্টোবর থেকে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও তাদের সহযোগীদের ডাকা মোট ছয় দিনের অবরোধ ও হরতালে দেশের অর্থনীতির আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ ৩.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। তিনি তার ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট থেকে একটি ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, দিনমজুর এবং এসএমই খাত। সরবরাহ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে, যা আমদানিকারক এবং রপ্তানিকারক উভয়কেই ইতোমধ্যে সংকটজনক অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। শিশু ও যুবকদের শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।’ রাজনীতি বিষয়ে বাংলাদেশি ইংরেজি ভাষার ব্লগ ‘bdanalytic’তে প্রকাশিত একটি নিবন্ধের ওয়েব লিঙ্ক শেয়ার করে জয় লিখেছেন, প্রধানত বাস এবং ট্রাকগুলোকে লক্ষ্য করে অন্তত ১১০টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ‘বিএনপি ও এর সহযোগীরা তাদের গুন্ডাদের প্রতিটি হামলার জন্য ৩ হাজার টাকা দিচ্ছে। পরিবহন খাতের দুর্দশা জীবনযাত্রার সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। কারণ বেশি ঝুঁকির কারণে ভাড়া আকাশচুম্বী হয়েছে।’
দুই. জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, নির্বাচনের মূল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসা। আমরা চেয়েছি ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে এসে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে, ভোটাররা নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। ২৪ নভেম্বর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয় মিলনায়তনে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব জানান, প্রায় সব আসনেই আমাদের একাধিক মনোনয়ন ফরম বিতরণ হয়েছে। প্রত্যাশিত প্রার্থীদের ইন্টারভিউ চলছে, আশা করছি ২৭ নভেম্বর আমাদের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। কতদিন ধরে পার্টি করছেন এবং এলাকায় কতটা জনপ্রিয়তা আছে, তা বিবেচনা করেই প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হবে। নির্বাচন নাকি আন্তর্জাতিক মহল মেনে নেবে না। আমাদের মনে থাকার কথা, ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর আইপিইউয়ে (ইন্টার পার্লামেন্ট ইউনিয়ন) সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী সভাপতি হয়েছিলেন এবং ওই সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সিপিএর (কমনওয়েলথ পার্লামেন্ট অ্যাসোসিয়েশন) সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। অথচ এই দুই আন্তর্জাতিক সংস্থায় জিয়া, এরশাদ, খালেদার শাসনামলে সদস্যপদ হারিয়েছিল। আস্তে আস্তে ষড়যন্ত্রকারীদের অস্ত্র ভোঁতা হয়ে আসছে। আমরা নিশ্চিত, আজ যখন এই লেখা ছাপা হলো, তখন দেখা যাবে ষড়যন্ত্রকারীরা ইঁদুরের গর্তে ঢুকে যাবে। এরই মধ্যে আমরা জেনে গেছি, নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাতে ১২টি দেশ ও ইইউসহ চার সংস্থা, আরও ৩৪ দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আফ্রিকান ইলেকট্রোরাল ইউনিয়ন, সাউথ এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ফোরাম এবং মার্কিন সংস্থা আইআরআই আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছে। এ ছাড়া কমনওয়েলথও নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবে বলে আশা করছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। এর বাইরে ১২টি দেশের ৩০ থেকে ৩২ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছেন। বিপুলসংখ্যক বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সংস্থার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিদেশি পর্যবেক্ষক নিবন্ধনের সময় আগামী ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য ভারত, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, সার্ক, ওয়াইসিসহ ৩৪ দেশ ও চার সংস্থাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গত ১৫ নভেম্বর তপশিল ঘোষণার পর এসব সংস্থা ও দেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
গত ২২ নভেম্বর ‘দৈনিক সমকালে’ খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ ড. মইনুল ইসলামের লেখা অনেকেরই নজরে এসেছে। লেখার শিরোনাম ছিল ‘কেউ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনবে না’। সেখানে তিনি বিস্তারিতভাবে ১৯৯১ সালের নির্বাচন থেকে ২০০৮ সালের নির্বাচনের নানা বিষয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছেন। ২০০১ সালের ১ অক্টোবরের নির্বাচনের আগে বিচারপতি লতিফুর রহমান কীভাবে ষড়যন্ত্র করেছিলেন এবং ‘মুঈদ-মইনুল-শাহজাহান’ উপকমিটি মাত্র দুই মাসের মধ্যে মাঠপর্যায়ে ১ হাজার ৫২৬ জন সরকারি কর্মকর্তাকে ওএসডি করেছিল, তা লেখায় তুলে ধরা হয়েছে। তারপর তিনি গত ৫টি নির্বাচনের নানা বিষয় উল্লেখ করেছেন। লেখার মর্মকথায় বলা যায়, বিএনপি যদি নির্বাচনে না যায় এবং সেই নির্বাচন যদি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়, সেই নির্বাচন কেন গ্রহণযোগ্য হবে না? আরেকটি বিষয় গুরুত্ব দিয়ে বলা যায় এভাবে—ধরা যাক, বিএনপি নির্বাচনে গেল না; কিন্তু সেই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হলো এবং মানুষ ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে গেল। তারপর কি বিএনপি তার আন্দোলন বন্ধ করবে? ঘোষণা দিয়ে বলবে—নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হওয়ায় আমরা চোরাগোপ্তা হামলা আর গোপন আস্তানা থেকে কর্মসূচি ঘোষণার পথ পরিহার করে নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির পথে ফিরে এলাম? বাংলাদেশে বড় রাজনৈতিক দলের নির্বাচনে না আসার সবচেয়ে ক্ল্যাসিক উদাহরণ হলো ’৭০-এর নির্বাচনে মওলানা ভাসানীর অংশগ্রহণ না করা। মওলানা ভাসানীর মতো বড় রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ না থাকা সত্ত্বেও সে নির্বাচন বাংলার মানুষের কাছে এবং সারা পৃথিবীর কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছিল। বরং মওলানা ভাসানীর দলই নিঃশেষ হয়ে গেছে।
লেখক : রাজনৈতিক বিশ্লেষক