আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে শরীয়তপুরের জাজিরায় আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণের আয়োজন করেছে পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক দল। রোববার (১১ মে) সন্ধ্যায় দীর্ঘ সময় ধরে আওয়ামী লীগের অন্যতম রাজনৈতিক ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত জাজিরার গোডাউন মোড় এলাকায় এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
এতে উপজেলা ও পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীসহ বিএনপির অঙ্গসংগঠন ও স্থানীয় সাধারণ জনগণও অংশ নেন। মিছিলটি গোডাউন মোড় থেকে শুরু হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার একই স্থানে এসে শেষ হয়।
মিছিল শেষে দলীয় নেতাকর্মীরা সাধারণ মানুষের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করেন। তারা এ দিনটিকে ‘গণতন্ত্রের মুক্তির দিন’ বলে আখ্যা দেন।
পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক বাচ্চু সরদার বলেন, ‘জাজিরা ছিল আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি। এখান থেকেই তারা বহু বছর ধরে দাপট দেখিয়েছে। বিগত দেড় যুগ ধরে আওয়ামী লীগ দেশকে একটি স্বৈরশাসনে পরিণত করেছিল। আজ তাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশার প্রতিফলন। আমরা এ সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই।’
উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ধলু মাদবর বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে দেশের কৃষকদের শোষণ করে আসছিল। কৃষিপণ্য বিক্রি করতে গিয়ে ন্যায্য দাম পায়নি, সার-কীটনাশকের সংকটে ভুগেছে, এমনকি আন্দোলন করলেই তাদের হয়রানি করা হয়েছে। আজ তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার মাধ্যমে দেশের কৃষক সমাজ কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে। আমরা এ সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। আশা করি, কৃষকের অধিকার ও সম্মান এখন থেকে বাস্তবেই প্রতিষ্ঠা পাবে।’
জাজিরা পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সাদ্দাম মাদবর বলেন, ‘এ নিষেধাজ্ঞা দেশের মানুষের দীর্ঘদিনের চাওয়া ছিল। আমরা মনে করি, এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের রাজনীতিকে এক নতুন পথে নিয়ে যাবে যেখানে থাকবে না জুলুম, নিপীড়ন কিংবা একদলীয় শাসনের ছায়া। দেশে সুশাসন, গণতন্ত্র ও মানুষের বাকস্বাধীনতা ফেরাতে এ সিদ্ধান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজকে আমরা যে আনন্দ ভাগাভাগি করছি, তা পুরো জাতির মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে বলে আশা করি।’
স্থানীয় এক দোকানদার জুয়েল আকন বলেন, ‘আগে আমরা কথা বলতেও ভয় পেতাম। আজকে মানুষ হাসছে, মিষ্টি খাচ্ছে- এটাই প্রমাণ করে মানুষ আসলে কী চায়।’
অনুষ্ঠানটি ঘিরে এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক নজরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করলেও কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য করুন