আরিফুর রহমান
প্রকাশ : ২৬ মার্চ ২০২৪, ১০:২৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

২১ শে বইমেলায় দাপট ছিল ছোটদের, বায়না মেটাতে তৎপর বাবা-মা

বইমেলায় শিশুরা। ছবি : সংগৃহীত
বইমেলায় শিশুরা। ছবি : সংগৃহীত

রোদ ঝলমলে আকাশ। শীতের আমেজের দিনগুলোতে লেপ ছেড়ে বেরোতে গায়ে জ্বর আসে বৃষ্টির। অনেক রাগ-অভিমান-কান্নাপর্ব পেরিয়ে অবশেষে বাবা রাজি হয়েছিল বৃষ্টিকে বইমেলায় নিয়ে যেতে। সামনে পরীক্ষা বলে মা বাদ সেধেছিলেন। মেয়ের ছলোছলো চোখ দেখে তখন অবশ্য মত বদলেছিলেন তিনি। উত্তরা থেকে ট্রেনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। দুপুর একটা নাগাদ মেট্রো থেকে তখন কানে আসল বইয়ের ডাক। বৃষ্টিকে আর পায় কে। হাঁটছে না ছুটছে, বোঝা দায়। ওই ডাকছে বই বাবা-মায়ের চোখে তখন ছোটবেলার ফ্ল্যাশব্যাক।

অভিভাবকদের সঙ্গে বইমেলায় শিশুরা। ছবি : সংগৃহীত

বইমেলায় তড়িঘড়ি স্টলে ঢুকে বই বাছতে গিয়ে হতবাক বৃষ্টি। কি নেবে আর কি নেবে না, ঠিক করতে লাগল প্রায় ১৫ মিনিট। শেষ পর্যন্ত শ্রেষ্ঠ কিশোর গল্প, আধখানা ভূত, কেনিয়ার রূপকথা সঙ্গে ঝুলিতে আসল কিছু আকার বই। একটু এগোতেই অনন্যা বুক স্টল। ছোট-বড়দের ভিড়ে ঢোকা দায়। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর ভেতরে যাওয়ার সুযোগ এলো। চারধারের টেবিলে সাজানো ছোটদের হরেক রকমের বই। সুনসান সুন্দরবন, বাঘ বলেছে খাব তোকে, আবৃত্তি প্রতিযোগিতা, ডিজিটাল প্রবাদ অ্যানালগ কার্টুন, তিন দুরন্তর শিক্ষাসফর, প্রোগ্রামার ভূত, নতুন জামার আনন্দ, আমার বর্ণমালা সিরিজসহ অনেক বই ঘুরে ঘুরে কিনতে ব্যস্ত অনেকে। এর মধ্যেই কানে এলো এক মা ও ছেলের কথোপকথন। জ্বলে ভার্ন ও এইচ জি ওয়েলসের বই নিতে হবে মা। সাফ কথা মায়ের, এ তো বাংলায় লেখা, ইংরেজিতে কিনে দেব তোমায়।

বইমেলাজুড়ে এবার শিশু-কিশোর সাহিত্যের দাপট ছিল চোখে পড়ার মতো। ছোটদের জন্য নানা রকমের বই বইমেলায় এনেছিলেন ছোট-বড় বহু প্রকাশক। তা দিয়ে নজর টানতে কসুর করছেন না তাঁরা। বড় প্রকাশকরা কাচের ডিসপ্লেতে ছোটদের বই সাজিয়ে রাখতেই বেশি আগ্রহী। যাদের সে সুযোগ নেই, তারা নিয়েছেন অন্য পন্থা। স্টলের বাইরে চেয়ারে সাজিয়ে রাখছেন ছোটদের বই। প্রকাশকের সঙ্গে কথা বলে জানা হয়েছিল বইমেলাতে কমিক্সের টান প্রচুর।

বইমেলাজুড়ে এবার ছিল শিশু-কিশোরদের দাপট। ছবি : কালবেলা

বইমেলা শেষে বাড়ি ফেরার বাসে-মেট্রো ট্রেনে ছিল প্রচুর ভিড়। সিনিয়র সিটিজেনদের সিটে বসে নতুন বইয়ের পাতা উল্টাতে ব্যস্ত থাকে দেখা গিয়েছিল অনেক ক্ষুদে পাঠকদের। মগ্ন ওই পাঠকদের বিরক্ত না করে দাঁড়িয়ে ছিলেন অনেক বয়স্ক ব্যক্তিরা। একটির পর স্টপেজ আসছে বাবা-মা-ভাই-বোনদের হাত ধরে নেমে যাচ্ছিল ক্ষুদে পাঠকরা। তখন হঠাৎ দেখা গেল এক বয়স্ক ব্যক্তি ক্ষুদে পাঠকদের গাল টিপ দিয়ে বলেছিলেন, ‘তোমাদের জন্য বেঁচে থাকবে বইমেলা’।

[ নিবন্ধ, সাক্ষাৎকার, প্রতিক্রিয়া প্রভৃতিতে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। দৈনিক কালবেলার সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে নিবন্ধ ও সাক্ষাৎকারে প্রকাশিত মত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত, রাজনৈতিক, আইনগতসহ যাবতীয় বিষয়ের দায়ভার লেখকের, দৈনিক কালবেলা কর্তৃপক্ষের নয়। ]
কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কারাগারে দুগ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৭

নতুন রূপে চট্টগ্রাম আউটার স্টেডিয়াম

ফেসিয়ালের পর এইডসে আক্রান্ত ৩ নারী

প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রেই ভুল থাকলে কী হয়

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল / বন্ধের পথে ‘কক্সবাজার স্পেশাল’ ট্রেন, যাত্রীদের ক্ষোভ

যেভাবে দেখবেন বাংলাদেশ-ভারত সিরিজ

খাগড়াছড়িতে বৃষ্টি চেয়ে ইসতিসকার নামাজ আদায়

৯৬ হাজার ৭৩৬ শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু

স্নাতক পাসে চাকরি দেবে সিটিজেনস ব্যাংক

১০

এক কেজি ক্রিস্টাল মেথসহ আটক ‘উচ্চারণ’ ব্যান্ডের ভোকাল

১১

কৌশিক বসুর নিবন্ধ / যেভাবে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করছে যুক্তরাষ্ট্র

১২

জয়পুরহাটে বৃষ্টির কামনায় ইসতিসকার নামাজ

১৩

এক মৌসুম পরেই আবারও প্রিমিয়ার লিগে লেস্টার সিটি

১৪

চীনের মধ্যস্থতায় ঐক্য আলোচনায় বসছে ফিলিস্তিনি দুই গোষ্ঠী

১৫

লোহিত সাগরে ‘ব্রিটিশ’ জাহাজে ইয়েমেনিদের হামলা

১৬

পাবনায় বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ

১৭

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায়

১৮

হারিয়ে যাচ্ছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের নিজস্ব সাদ্রি ভাষা

১৯

থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান

২০
*/ ?>
X