কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২৪, ০৫:১৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আগামীর বাংলাদেশ হবে বৈষম্যবিরোধী : রুমিন ফারহানা

হিন্দু সম্প্রদায়ের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে রুমিন ফারহানা। ছবি : কালবেলা
হিন্দু সম্প্রদায়ের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে রুমিন ফারহানা। ছবি : কালবেলা

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সহসম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহান বলেছেন, কোনো ধরনের বৈষম্য স্বাধীন বাংলাদেশে থাকবে না। আমরা একটা বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। আগামীর বাংলাদেশ হবে বৈষম্যবিরোধী।

সোমবার (১২ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর লালবাগে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায়ের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

এসময় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সিনিয়র সহসভাপতি অপর্ণা রায় দাস উপস্থিত ছিলেন।

রুমিন ফারহানা বলেন, আমি কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে আসিনি। বাংলাদেশে আজকাল যা ঘটছে তা নতুন নয়। যখনই কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতির তৈরি হয় সুযোগ সন্ধানী গোষ্ঠী এর অপব্যবহার করে। তারা দুষ্ট চক্র। কেউ খুব দ্রুত লুটপাট করে অর্থ-সম্পদের লোভে। আরেকটা গ্রুপ মনে করে এখনই লুটপাট করলে হয়তো পরে অন্যের ওপর দোষ চাপানো যাবে। তারা অতীতেও এমনটি করেছে। এবারের গণঅভুত্থান কিন্তু ’৯০-এর গণঅভুত্থানের মতো নয়। আমরা কিন্তু এক নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। কার কত বয়স সেটি কথা নয়। আমরা কে কোন ধর্মের লোক সেটা বড় কথা নয়। আমার একমাত্র পরিচয় বাংলাদেশ ও আমরা বাংলাদেশি। আইডেন্টিটির রাজনীতি কখনো সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারে না। এটা শুধু মানুষের মাঝে বিচ্ছিন্নতা নিয়ে আসে।

রুমিন ফারহানা বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয় ভোটের রাজনৈতিক কারণে। সম্পত্তির লোভে। কিন্তু এটা ভাবে না যে আমরা একই সূতোয় গাঁথা। এখানে রাজনীতি খুব বেশি কাজ করে। লোভ কাজ করে। এই জায়গায় আমাদের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে যেন আমার ন্যায্য হিস্যা কেউ নিতে না পারে। এবার কিন্তু স্লোগান উঠেছে, আমি হিন্দু, তুমি হিন্দু দেশ ছেড়ে যাব না। এটা খুবই ইতিবাচক দিক।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ হবে বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশ। সেটি ধর্মীয়, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বিবেচনায় হবে না। অথচ একটা গোষ্ঠী বলে হিন্দুরা তাদের ভোট ব্যাংক। ওনাদের (হিন্দু) ভোট আমরা পাব। আর যদি ভোটের কালচার না থাকে তাহলে ওনারা চলে গেলেই বাঁচি। আমরা সম্পত্তি পাব। কিন্তু কাউকে আপন করে নিতে পারে না। ভোটের রাজনীতি বড় ভয়ংকর।

রুমিন আরও বলেন, আজকে বলা হয় গোপালগঞ্জ না কি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। তাহলে ওখানে হিন্দুদের জমি কীভাবে দখল করেছে একজন প্রভাবশালী। তাহলে প্রভাব বা লোভটাই হলো আসল। দিনশেষে আমি কতটুকু লুট করতে পারছি সেটাই মুখ্য। এই জায়গাটাতে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। মানুষ কাকে বেছে নেবে এটা তার দায়িত্ব। আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকেও অতীতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা নির্যাতনের কোনো বিচার না করায় কঠোর সমালোচনা করেন রুমিন ফারহানা।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা বলেন, বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানাকে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমাদের কষ্টের সময় আপনি এসেছেন।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজল দেব নাথ বলেন, আমরা সবসময় ব্যবহৃত হই। ধর্মকে ও মুক্তিযুদ্ধকে রাজনীতিতে ব্যবহার করি। ভারত আর হিন্দু কিন্তু এক নয়। আমরা এই দেশেই (বাংলাদেশ) থাকব। থাকতে চাই। আমরা হিন্দু মুসলমান একই সংস্কৃতিতে বড় হয়েছি। সবাইকে বলব- আসুন নিজেরা নিজেদের পরিশীলিত করি। সত্যিকারের মানুষ হওয়ার চেষ্টা করি। আমরা সবাই মিলে সামনে এগিয়ে যেতে চাই। চলমান পরিস্থিতি উত্তরণের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া কোনো গত্যন্তর নেই। কারণ বাংলাদেশের মানচিত্র আমাদের সবার। যদি তা না করি তাহলে শুধু বাংলাদেশ নয় গোটা বিশ্বে কেয়ামত হয়ে যাবে। সংবিধান হতে হবে সবার জন্য। ধর্ম এবং রাষ্ট্র যেন আলাদা থাকে।

তিনি বলেন, ছাত্রসমাজের মাঝে একটা জোয়ার এসেছে। আমাদের হিন্দুরাও কিন্তু বলছে তারা দেশ ছেড়ে যাবে না। এটাই হলো সম্প্রীতি। বৈষম্যবিরোধী সমাজ মানে কোনো বৈষম্য থাকবে না। এজন্যই সবাই মিলে মিশে এক হয়ে থাকতে হবে।

ঢাকেশ্বরী মন্দির রক্ষণাবেক্ষণ কমিটির সভাপতি দীপেন চ্যাটার্জি বলেন, আমরা কারও কৃপায় নয়, মিলে-মিশে মর্যাদার সঙ্গে বাংলাদেশে বসবাস করতে চাই।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ বলেন, বারবার কেনো আমরা টার্গেটের শিকার হবো? আমরা সবার সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে মিলে-মিশে বসবাস করতে চাই। বিএনপির কাছে আমাদের প্রত্যাশা সম্প্রীতি রক্ষায় আপনারা একটা সুন্দর উদ্যোগ নেবেন। আমরা দেশটাকে ভালোবাসি।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্বপন সাহা, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি জে এল ভৌমিক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ বিপ্লব দে, যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি শিমুল সাহা, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদের সভাপতি কুশল বরণ চক্রবর্তী প্রমুখ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

 গাজায় দুর্ভিক্ষ হচ্ছে কিনা, জানালেন জাতিসংঘ মহাসচিব

কেন্দ্র দখল করলেই ভোট বাতিল : সিইসি

গোপালগঞ্জে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আ. লীগের ৬ নেতার পদত্যাগ

সিপিএলে সাকিবের ব্যর্থতা চলছেই, দল হারল ৮৩ রানে

কটাক্ষের শিকার আলিয়া

ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের বেন গুরিয়নের ফ্লাইট স্থগিত

ওজন কমাতে চা

‘কাউকে দোষারোপ করছি না’, বিভুরঞ্জনকে নিয়ে ছেলে ও ভাই

আজ ঢাকার বাতাসে দূষণের পরিমাণ কত?

রাজধানীতে ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত

১০

সেরা অধিনায়ক কে? অপ্রত্যাশিত নাম বলে চমকে দিলেন দ্রাবিড়

১১

মাইলস্টোনে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ আরেক শিক্ষার্থীর মৃত্যু

১২

শাহরুখের ওপর বিরক্ত বোমান ইরানি

১৩

জেনে নিন আজকের স্বর্ণের বাজারদর

১৪

প্রীতি ম্যাচ খেলতে কবে ভারত আসছে মেসির আর্জেন্টিনা জানাল এএফএ

১৫

নতুন করে মহাবিপদে পড়তে যাচ্ছে ইরান

১৬

ঢাকায় বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অফিসের নতুন বার্তা

১৭

বাংলাদেশের ম্যাচসহ টিভিতে আজকের খেলা

১৮

গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ, একই পরিবারে দগ্ধ ৯

১৯

২৩ আগস্ট : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

২০
X