কুশিক্ষিতরা দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে এমন মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, সরকার বিদায় করতে না পারলে দেশের মানুষ মারা যাবে। স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে।
তিনি বলেন, দেশে তিনটি শিক্ষা রয়েছে। অশিক্ষা, কুশিক্ষা আর সুশিক্ষা। আজকে জনগণের টাকায় বেতন নিয়ে কুশিক্ষিতরা বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর গুলি চালাচ্ছে। এই কুশিক্ষিতরা বিচারের প্রহসন করছেন। তারা জেলখানায় বিরোধী নেতাকর্মীদের পিটিয়ে হত্যা করছেন। এই কুশিক্ষিত লোকগুলো দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তারা দেশকে ভালোবাসে না, টাকাকে ভালোবাসে।
তিনি আরও বলেন, ব্রিটিশ শাসক ও পাকিস্তানিরা এ দেশ থেকে যা লুট করেছে এরচেয়ে বেশি লুট করেছে এই সরকার। এদের ভেতর দেশপ্রেম নেই। আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে ‘অবৈধ, লুটেরা, ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্তিকরণ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নতুন নির্বাচন কমিশনের গঠন করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ১ দফা দাবিতে কালো পতাকা গণমিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক লিটন মাহমুদ ও আ ন ম সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ। এ সময় অন্যানের মধ্যে কেন্দ্রীয় নেতা আবুল খায়ের ভুইয়া, মনিরুল হক চৌধুরী, ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ফজলুল হক মিলন, মীর সরফত আলী সপু, কামরুজ্জামান রতন, ড. আসাদুজ্জামান রিপন, অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, আব্দুল খালেক, ফরহাদ হোসেন আজাদ, আমিনুল ইসলামসহ বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী এ কালো পতাকা মিছিলে অংশ নেন।
এছাড়াও পেশাজীবী সংগঠন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের কাদের গণি চৌধুরী, ইউট্যাবের অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান, অধ্যাপক আবুল কালাম সরকার, অধ্যাপক আবু জাফর খান, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় সাদা দলের অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, অধ্যাপক ড. শহীদুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. আব্দুল করিম, অধ্যাপক ড. শেখ মনির উদ্দিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের অধ্যাপক মো. শামসুল আলম, অধ্যাপক মো. নুরুল ইসলাম, অধ্যাপক মো. নজরুল ইসলাম, এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স-এ্যাবের প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, আলমগীর হাছিন আহমেদ, প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান চুন্নু, প্রকৌশলী মাহবুব আলম, প্রকৌশলী আইয়ুব হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, ভোট ও বাকস্বাধীনতার জন্য পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যখন সংগ্রাম করেছি তখন বাঙালির বিরুদ্ধে গুলি চালাত। লাঠিচার্জ করত। তারা তো ছিল পাকিস্তানি পুলিশ। আজ একই দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি। আজও গুলি চালানো হচ্ছে। আপনারা (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) কি বিদেশি পুলিশ? নিজ দেশের জনগণের ওপর গুলি চালাচ্ছেন!
তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে দ্রব্যমূল্য, তেল গ্যাস ও বিদ্যুৎয়ের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। সরকার কানে শুনে না। আজকে ডিমের দাম ১৫ টাকা। এদের দুর্নীতির কারণে টাকার মান কমে গেছে। যারা ব্যাংকে টাকা রেখেছেন তারা লাভের পরিবর্তে ১৪ শতাংশ টাকা কম পাবেন। আজকে বিদ্যুৎতের কার্ড থেকেও হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হচ্ছে। সর্বক্ষেত্রে লুটপাট।
মির্জা আব্বাস বলেন, বহিঃবিশ্ব আজ দেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছে। একটি দেশ বলছে এই সরকারকে আবার লাগবে। আমি বলতে চাই, সরকার নয়, দেশের জনগণের সাথে বন্ধুত্ব করুন। আজ এ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেশের জনগণ মানে না। বিনা ভোটের নির্বাচনের স্বপ্ন আর বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না।
বিকেল সাড়ে ৪টায় নয়াপল্টন থেকে এ কালো পতাকা গণমিছিল শুরু হয়ে মতিঝিল, ইত্তেফাক মোড়, টিকাটুলী হয়ে দয়াগঞ্জ মোড় হয়ে নারিন্দায় গিয়ে শেষ হওয়ার কথা।
মন্তব্য করুন