কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ আগস্ট ২০২৩, ০২:১৫ পিএম
আপডেট : ২৬ আগস্ট ২০২৩, ০২:৩৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

এখনো সময় আছে তত্ত্বাবধায়কের জনদাবি মেনে নিন : রিজভী

রাজধানীর একটি হোটেলে রিজভী ও অন্যান্য নেতারা। ছবি : কালবেলা
রাজধানীর একটি হোটেলে রিজভী ও অন্যান্য নেতারা। ছবি : কালবেলা

বিএনপির আন্দোলনে লোকসমাগম দেখে ওবায়দুল কাদের সাহেবরা দিশাহারা হয়ে পড়েছে মন্তব্য করে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আসলে ওবায়দুল কাদের ডিমেনশিয়া রোগে ভুগছেন। এমনিতেই শারীরিকভাবে অসুস্থ। এখন মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে গেছেন।

ওবায়দুল কাদের বলেছেন- বিএনপির আন্দোলনের নাকি ১২টা বেজেছে। এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, আসলে আমাদের কর্মসূচিতে লোকসমাগম দেখে তারা দিশাহারা হয়ে পড়েছে। আবোল তাবোল বলছে। ওবায়দুল কাদের ডিমেনশিয়া রোগে ভুগছেন। কারণ তাদের তো জনভিত্তি নেই। তারা তাদের নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙ্গা রাখতে এসব বলছেন। আমি বলব- ওবায়দুল কাদের এখনো সময় আছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিন। এটা চাওয়া কোনো ষড়যন্ত্র নয়, এটা জনগণের দাবি।

শনিবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর লেকশোর হোটেলে এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সাবেক আহ্বায়ক ও অ্যাবের সাবেক সভাপতি আমার দেশ সম্পাদক প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমান ও বরেণ্য সম্পাদক শফিক রেহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি সাজার প্রতিবাদে এই প্রতিবাদে ‘মাহমুদুর রহমানের সংগ্রাম ও সাংবাদিকতা’ শীর্ষক সভার আয়োজন করে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (এ্যাব)।

সংগঠনের সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আসাদুজ্জামান চুন্নুর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে মাহমুদুর রহমানের ওপর প্রবন্ধ পাঠ করেন আমার দেশ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাংবাদিক নেতা বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজী, বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহ, প্রকৌশলী মো. আল মামুন গাজী-পিইঞ্জ, বিএনপির প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার, বিএনপির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, বিএফইউজের মহাসচিব নূরুল আমিন রোকন, এ্যাব নেতাদের মধ্যে প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, প্রকৌশলী মো. মোস্তাফা-ই জামান সেলিম, মহিউদ্দিন আহমেদ সেলিম, গোলাম মাওলা, সুমায়েল মল্লিক, মাহবুব আলম, শাহাদাত হোসেন বিপ্লব, মোতাহার হোসেন। এ ছাড়াও প্রকৌশলী আফজাল হোসেন সবুজ, সাইফুল ইসলাম, প্রকৌশলী আইয়ুব হোসেন মুকুল, বিএনপি নেতা টিপু আব্বাসসহ বিভিন্ন পেশাজীবী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

রিজভী বলেন, কুষ্টিয়ায় আদালতে মাহমুদুর রহমানের ওপর ভয়ংকর আক্রমণ করা হয়েছে। এটা কি একটা রাষ্ট্র? আজকে যে অভিযোগে আমেরিকার আদালত মামলা বাতিল করে দেয় সেখানে বাংলাদেশে একটা নিউজের কারণে বিচার করা হয়। এটাতো শেখ হাসিনার আদালত, আওয়ামী লীগের আদালত। সেই আদালতে সাজা দেওয়া হয়েছে মাহমুদুর রহমানকে ও শফিক রেহমানকে। সাজা দেওয়া হয়েছে আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে। কারণ শেখ হাসিনা ন্যায় বিচারের আদালতে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। সেখানে এ ধরনের বিচারই হবে। সেজন্যই তো বিচারকরা বলছেন- শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ। আজকে শফিক রেহমান-মাহমুদুর রহমান দেশে থাকলে শেখ হাসিনা তাদের মেরে ফেলতো! সাংবাদিক শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানের সাজা প্রত্যাহারের দাবি জানান রিজভী।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ হলো গুণ্ডাদের দল। রাষ্ট্রকে দিয়ে শেখ হাসিনা এগুলো করছেন। আজকে শেখ হাসিনার ছেলেকে নিয়ে কেউ কোনো কথা বলতে পারেনা। আর অন্যদিকে স্বাধীন সাংবাদিক ও লেখকরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। অতীতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এমনটা হয়েছিল। সেই অত্যাচার পদ্ধতি প্রয়োগ করছেন শেখ হাসিনা। আসলে কর্তৃত্ববাদী দেশে এসবই হয়। শেখ হাসিনার আদালতে শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানকে সাজা দেওয়া হয়েছে।

সেই নির্যাতনের ধারা আমাদের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনেও শেখ হাসিনা জারি রেখেছে। ২০ নেতাকর্মীকে খুন করা হয়েছে। অনেককে পঙ্গু করা হয়েছে।

রিজভী বলেন, জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করার ধারা ওয়ান ইলেভেনের সময় থেকেই শুরু হয়েছে। এজন্য আজকের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন ‘ওয়ান ইলেভেন তাদের আন্দোলনের ফসল’। সেসময় সেনাপ্রধান মঈন উদ্দিন আহমেদ বললেন- ‘হাওয়া ভবনের কারণে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের নামে ২০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে’! পরে সেটার দাঁতভাঙ্গা জবাব কলামের মাধ্যমে দিয়েছিলেন মাহমুদুর রহমান। তিনি লিখলেন- ‘গোটা ৫ বছরে বাজেট হলো ১৩ হাজার কোটি টাকা’। সেখানে ২০ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে কিভাবে? আসলে দেশি-বিদেশি চক্রান্তের অংশ হলো ওয়ান ইলেভেন।

তিনি বলেন, মাহমুদুর রহমান একজন দেশপ্রেমিক। তিনি কোনো দলের নেতা নন। তার ওপর ভয়ংকর অন্যায়, অবিচার ও নির্যাতন করা হয়েছে। বহুদিন কারাবরণ করেছেন।তারপরও সম্প্রতি সাত বছর সাজা দিয়েছে। তিনি একজন বিচক্ষণ ও সাহসী মানুষ। জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে অপপ্রচারের জবাব দিতে তিনি আপস করতেন না। তিনি ছিলেন আপসহীন দেশপ্রেমিক ব্যক্তি। স্বাধীন চেতা মাহমুদুর রহমান বলতেন এবং লিখতেন। তার সত্য উচ্চারণ আকাশে বাতাসে ভাসে। সেজন্যই তিনি অবৈধ সরকারের টার্গেটের শিকার হয়েছেন। তার শরীরের বহুবার নির্যাতন করেছে। কিন্তু তিনি থেমে যাননি। চাইলেই চাকরি করে বিলাসী জীবনযাপন করতে পারতেন। কিন্তু তিনি দেশের জন্য যে ত্যাগ করেছেন সেটা অতুলনীয়।

সৈয়দ আবদাল আহমদ বলেন, যে মামলায় নির্যাতিত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও শফিকে রেহমানকে সাজা দেওয়া হয়েছে তার মোটেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। তারা দুজনেই সংগ্রামী ও প্রতিবাদী মানুষ। তাদের সতত ও সাহস প্রশ্নাতীত। মাহমুদুর রহমানের শরীর থেকে অনেক রক্ত ঝরেছে। এই রক্ত বৃথা যাবে না। অন্যায় পরাভূত হবেই।

প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল বলেন, দেশ ও জনগণের স্বার্থে থাকার কারণেই স্বৈরাচার শেখ হাসিনার জুলুমের শিকার হয়েছেন নির্ভীক সাংবাদিক ও সম্পাদক মাহমুদুর রহমান এবং শফিক রেহমান। তাদের মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। সুতরাং দেশবাসীসহ সবাইকে মুক্ত করতে এবং ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটাতে হবে।

প্রকৌশলী মো. মোস্তাফা-ই জামান সেলিম বলেন, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে মজলুম সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও বরেণ্য সম্পাদক শফিক রেহমানকে মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি সাজা দেওয়া হয়েছে। দেশবাসী ও পেশাজীবী সমাজ সাজানো এই রায় মানে না। অবিলম্বে সেটা প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে পেশাজীবী পরিষদ বসে থাকবে না।

সভাপতির বক্তব্যে প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু বলেন, মাহমুদুর রহমান ও শফিক রেহমান দুজনে সৃজনশীল মানুষ। বর্তমান সরকারের আমলে তাদের ওপর সীমাহীন জুলুম নির্যাতন করা হয়েছে। এই নির্যাতনের হাত থেকে মুক্তি পেতে হলে একদফা দাবি আদায়ে রাজপথে ফয়সালা করতে হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপির আন্দোলন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ব্রাকসুর তপশিল ঘোষণা, নির্বাচন ২৯ ডিসেম্বর

ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহকারী আরেক কোম্পানির নাম ফাঁস

জকসুতে স্বতন্ত্র হিসেবে জিএস পদে লড়বেন বাঁধন সভাপতি মাবুদা

‘মব ভায়োলেন্স’ নিয়ে সতর্ক করলেন মির্জা ফখরুল

চাকরি হচ্ছে না? এই ২ আমলে দ্রুত মিলবে সমাধান

কারচুপির অভিযোগে মিস ইউনিভার্সের ২ বিচারকের পদত্যাগ

মুরগি চুরি নিয়ে বিরোধের ৯ দিন পর আরও এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু

ডেলিভারির ফাঁকে মেয়েকে পড়াচ্ছিলেন বাবা, ভিডিও ভাইরাল

একই পরিবারের ৩ সদস্যকে হত্যার ঘটনায় মামলা

মানবপাচারকারী ফখরুলের পক্ষে সাফাই  / সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে দ্রুত সভা শেষ করলেন আয়োজকরা

১০

মোবাইল দিয়েই ডিএসএলআর ক্যামেরার মতো ছবি তোলার ৫ কৌশল

১১

জাতীয় পর্যায়ে সাংবাদিকদের নিয়ে বার্ষিক ক্রীড়া আসর আয়োজনের ভাবনা আমিনুল হকের

১২

ফেসবুক পেজ জনপ্রিয় করার ৮ কৌশল

১৩

গুপ্তচরবৃত্তি ঠেকাতে নজিরবিহীন আইন করল রাশিয়া

১৪

চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশি কোম্পানিকে দিলে গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে : ১২ দলীয় জোট

১৫

যুবদল নেতা কিবরিয়াকে কারা হত্যা করেছে, জানাল র‌্যাব

১৬

আদালতে পিবিআইর চার্জশিট, আত্মহত্যা করেছিলেন দুদকের পিপি নওরোজ

১৭

ডেঙ্গুতে এক দিনে প্রাণ গেল আরও ৬ জনের

১৮

ফোবানা বৃত্তি পেলেন নূর নবীসহ জবির পাঁচ শিক্ষার্থী

১৯

পৌরসভার সার্ভেয়ারের ঘুষিতে প্রাণ গেল ট্রাকচালকের

২০
X