বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সংবেদনশীল বিষয়ে সরকারের দ্বৈত ভূমিকা দেশবাসীকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। কারা সরকার চালাচ্ছেন তা নিয়ে বিভ্রান্তি ও নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। একদিকে হত্যা মামলায় অভিযুক্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের দেশত্যাগ করতে দেওয়া হচ্ছে, আবার অন্যদিকে নীতিনির্ধারকরা তার দায়িত্ব নিচ্ছেন না।
শুক্রবার (৯ মে) বিকেলে সেগুনবাগিচায় সংহতি মিলনায়তনে বিপ্লবী যুব সংহতির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির বর্ধিত সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
সাইফুল হক বলেন, সরকার গঠনের ৯ মাস পরও যদি এই ধারা চলতে থাকে তাহলে সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতা বা কার্যকারিতা বলে কিছু থাকে না। যত দিন যাচ্ছে সরকারের মধ্যেই নানা সরকার, নানা কেন্দ্র বেরিয়ে আসছে। এক উপদেষ্টার বক্তব্যেও তার স্বীকৃতি মিলেছে। এই পরিস্থিতির দায়দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের ওপরই বর্তাবে।
তিনি বলেন, এই পরিস্থিতি এক ধরনের নৈরাজ্যকে উসকে দিচ্ছে। এই পরিস্থিতি চলতে দিলে গণঅভ্যুত্থানের অবশিষ্ট অর্জন বিনষ্ট হয়ে যেতে পারে। তিনি অকার্যকারিতা ও সমন্বয়হীনতার এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে সরকারের দৃঢ় ভূমিকা গ্রহণের আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা অপরিসীম সাহসী, উদ্যমী আর সৃষ্টিশীল যুবশক্তির বিশাল সম্ভাবনা কাজে লাগাতে চাই। আমরা তরুণদের জীবন-জীবিকা আর ভবিষ্যৎ নিয়ে ভবিষ্যতে কাউকেই আর ছিনিমিনি করতে দিতে পারি না। দেশের যুবশক্তি কারও কাছে জিম্মি হবে না, যুবরা আর কোনো রাজনৈতিক, সামাজিক ও দুর্বৃত্ত মাফিয়া সন্ত্রাসীদের লাঠিয়াল হিসেবে ব্যবহৃত হবে না।
সাইফুল হক বলেন, অভ্যুত্থানের অর্জন ধরে রাখতে হলে আমাদের জেগে থাকতে হবে। পতিত ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠীর জায়গায় আমরা নতুন কোনো ধরনের ফ্যাসিবাদী চিন্তা, চেতনা বা জবরদস্তিকে মেনে নেব না। মব সন্ত্রাসকে মদদ যুগিয়ে সম্ভাবনাময় তারুণ্যকে নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না।
আমরা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে তরুণ-যুবাদের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অধিকারে কোনো বাধা বরদাস্ত করব না। নারীর অধিকার ও মর্যাদাবিরোধী কোনো তৎপরতা আমরা মেনে নেব না। মুক্তিযুদ্ধসহ আমরা আমাদের গৌরবের সব উত্তরাধিকারকে ধারণ করব, মুক্তিযুদ্ধের অসম্পূর্ণ কাজগুলোকে ২৪-এর চেতনায় বাস্তবায়িত করব। শোষণ-বঞ্চনামুক্ত অসাম্প্রদায়িক ও জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনের দীপ্ত শপথে আমরা এগিয়ে যাব।
এছাড়া সংগঠনের আহ্বায়ক বাবর চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বর্ধিত সভায় বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, মাহবুবুল করিম টিপু, সংগঠনের সদস্যসচিব মীর রেজাউল আলম, যুবনেতা স্বাধীন মিয়া, জামিরুল রহমান ডালিম, শাফায়াত কামাল দিব্য, রফিকুল ইসলাম রকি, আরিফুল ইসলাম, মোহাম্মদ হোসেন, আবদুল হাকিম আমিন প্রমুখ।
বর্ধিতসভায় আগামী ২৯ আগস্ট জাতীয় যুব কনভেনশন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ‘যুবপ্রাণ জাগিয়ে তুলুন, অধিকার, ইনসাফ ও মুক্তির পথে এগিয়ে চলুন’ এই স্লোগানে যুব জাগরণের ডাক দেওয়া হয়। সভায় আগামী জুলাইয়ের মধ্যে জেলাস্তরে যুব কনভেনশন অনুষ্ঠানেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় বাবর চৌধুরীকে আহ্বায়ক ও মীর রেজাউল আলমকে সদস্যসচিব করে ৪১ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় যুব কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়।
মন্তব্য করুন