ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, জুলাইয়ের ফসল বর্তমান সরকার জুলাই যোদ্ধাদের মনে হয় ভুলে গেছে। আপনারা নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কিন্তু জুলাই যোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় সনদ এখনো দিতে পারেননি। জুলাই যোদ্ধাদের গলায় ফাঁসির দড়ি রেখে নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়া কোনোভাবেই উচিত হবে না। চলতি জুলাই মাসের মধ্যেই শহীদ ও আহতদের সনদ এবং জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে হবে। জুলাই সনদে মাদ্রাসা ছাত্রদের স্বীকৃতিও দিতে হবে।
শনিবার (২৬ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত ‘রক্তাক্ত জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের সম্মাননা এবং সংবর্ধনা’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় আহত ও শহীদ যোদ্ধাদের ক্রেস্ট ও সম্মাননা দেওয়া হয়।
গাজী আতাউর রহমান বলেন, জুলাই যুদ্ধের এক বছর পার হতে না হতেই ঘুষবাণিজ্য বেড়ে যাওয়া আশঙ্কাজনক। রাষ্ট্রের কোনো একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আপনারা শুদ্ধতা ফিরিয়ে আনতে পারলেন না। তাহলে কি জুলাই আন্দোলন ব্যর্থ হবে? আমরা এ আন্দোলন-অভ্যুত্থান ব্যর্থ হতে দেব না।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ইসলামী আন্দোলনকে বিতর্কিত করার জন্য আপনারা বক্তব্য দিচ্ছেন, কারা ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারের দোসর ছিল জনগণ তা জানে। আপনারা ফ্যাসিবাদের দোসর বলেই ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ছিলেন না। আন্দোলনে নেই বলে ঘোষণা দিয়েছেন। আপনারা ১৬ বছর ফ্যাসিবাদ দ্বারা নির্যাতন হয়েছেন ঠিক কিন্তু জনগণের আস্থা আপনাদের ওপর নেই বলে জনগণ আপনাদের আন্দোলনে সাড়া দেয়নি। ছাত্রদের ওপর জনতার আস্থা ও বিশ্বাস ছিল বলেই জনগণ ছাত্রদের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম বলেন, জুলাই আহতদের যোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রণয়ন করে তাদের সুস্থতার জন্য রাষ্ট্র থেকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। অভ্যুত্থান হয়েছে কিন্তু আজও দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়নি। স্বৈরাচারের পতন হয়েছে কিন্তু স্বৈরাচারের দোসররা এখনো রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ঘাপটি মেরে বসে আছে। তাদের তালিকা তৈরি করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন- সহসভাপতি আলতাফ হোসাইন, এমএইচ মোস্তফা, সেক্রেটারি আবদুল আউয়াল, সাংগঠনিক সম্পাদক কেএম শরীয়াতুল্লাহ, মাওলানা মুহাম্মদ মাকসুদুর রহমান, নজরুল ইসলাম খোকন, মাওলানা নজরুল ইসলাম। আহত জুলাই যোদ্ধাদের মধ্যে স্মৃতিচারণে অংশ নেন মুহাম্মদ জাহিদ হোসাইন, আবু মাহমুদ পাটওয়ারী, খন্দকার লিয়াকত আলী, মুহাম্মদ রনজু মিয়া, আনোয়ারুল ইসলাম, আল-আমিন, হবীব ভূইয়া, মুহাম্মদ বাবুল হোসেন, মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর, পলাশ, সেলিম সিকদার, মুহাম্মদ জিহাদ, ইমরান হোসাইন জনি, মুহাম্মদ নাহিন খান, জাকির হোসেন, মানসুর আহমদ লিটন, ছাবাবুর রহমান মজুমদার, আবদুল মুমিন, ফয়সাল আহমেদ আমিনুল ইসলাম রাজু প্রমুখ। শহীদ জুলাই যোদ্ধাদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন- শহীদ সাজিদুর রহমানের পিতা শাহজাহান ভূইয়া, শহীদ রেজাউল করীমের পিতা আল-আমিন, শহীদ জিহাদের বড় ভাই মুহাম্মদ রিয়াদ হোসেন।
মন্তব্য করুন