তিন দফা দাবি আদায়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে যাত্রাকালে পুলিশের হাতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ‘রক্তাক্ত’ হওয়ার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম।
বুধবার (২৭ আগস্ট) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টের মাধ্যমে এ নিন্দা জানান তিনি।
পোস্টে সারজিস লিখেছেন, ‘পুলিশকে দিয়ে যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলনরত বুয়েট শিক্ষার্থীদের রক্তাক্ত করার সাহস এই প্রশাসন কোথায় পায় সেই জবাব তাদের দিতে হবে।’
তিনি আরও লেখেন, ‘যে কোনো যৌক্তিক দাবিতে এবং সকল প্রকার কোটার বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান সব সময় জারি থাকবে। বুয়েট শিক্ষার্থীদের প্রতিটি যৌক্তিক দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করছি এবং তাদের ওপরে হামলায় যারা জড়িত তাদের ধিক্কার জানাই।’
এর আগে ‘রক্তাক্তে’র ঘটনায় পুলিশের কড়া সমালোচনা করেন বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাইয়াজও। বুধবার বিকেলে নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘হাসিনা গেল, কিন্তু হাসিনার পুলিশ আর গেল না।’
ফাইয়াজ বলেন, ‘মিন্টো রোডের সামনে আসার পরে কোনো ব্যারিকেড নেই, পুলিশ নেই। রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলছে। আমরা কয়েকজন মিলে থামালাম সবাইকে। ছবির ভদ্রলোক (ডিসি মাসুদ আলম) এসে ২০ ব্যাচের এক ভাইয়ের গলা চেপে ধরলেন। বেশ কয়েকজনকে ঘুষি-লাথি দিলেন পেছন থেকে এসে। আমাদের আজকের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ছিল ঢাকার বাইরের। দেখে খেপে গিয়ে তারা মিন্টো রোডে ঢুকল।’
তিনি বলেন, ‘আমি নিজে তারপরে সামনে গিয়ে থামালাম কয়েকজন ভাইকে নিয়ে। এর মিনিটখানেক পর দেখি হঠাৎ পায়ের নিচে সাউন্ড গ্রেনেড আর লাঠিচার্জ শুরু। আমি পেছনে ঘুরে সবাইকে আটকে রেখেছি। আর হঠাৎ পুলিশ এসে লাঠিচার্জ।’
এরপরে শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে গেল। যমুনার কোনো এক সিকিউরিটি ইনচার্জ এসে বললেন, বাবা, তুমি ওদের পেছাতে বলো একটু গিয়ে। আমি কিছু কথা বলে বললাম, আপনারা টিয়ার শেল বা সাউন্ড গ্রেনেড আর মাইরেন না, আমরা পেছাচ্ছি। অথচ শিক্ষার্থীরা যাওয়ার আগেই টিয়ার শেল, সাউন্ড গ্রেনেড, জলকামান ব্যবহার করল। যাকেই একা পেয়েছে, ধরে পেটিয়েছে। একজনের মেরুদণ্ডে স্প্লিন্টার ঢুকে গেছে।’ ফাইয়াজ আরও বলেন, ‘ছাত্রদের ওপর হামলার পর যদি ম্যাও ম্যাও করে সবাই পালাইতো তাহলে আজ হাসিনার সরকারই থাকত। দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, ছাত্ররা আগে হামলা করেছে এর সত্যতা জুলাইয়ে ২০০০ পুলিশ নিহত হওয়া থেকে বিন্দুমাত্র বেশি নয়। হাসিনা গেল, কিন্তু হাসিনার পুলিশ আর গেল না।’
মন্তব্য করুন