গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, সরকার আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে ভিন্নমত দমন করছে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) অধিকার-এর সম্পাদক আদিলুর রহমান শুভ্র ও পরিচালক নাসির উদ্দীন এলানকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এমনকি তাকে প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় মুষ্টিবদ্ধ হাতটি উঁচু করতেও দেয়নি। তারই প্রতিবাদে আজকে আমরা সবাই মুষ্টিবদ্ধ হাত উঁচিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আদিলুর রহমানকে সাজা দিয়ে সরকার আন্তর্জাতিক ও দেশীয় প্রতিক্রিয়া দেখছে। সবাই মিলে প্রতিবাদ না করলে কারো রেহাই নেই। সময় কম, জনগণকে সাথে নিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটাতে হবে।
আজ শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে একদফার যুগপৎ আন্দোলন ও আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে গণঅধিকার পরিষদের (নুর) উদ্যোগে এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন নুর।
নুরুল হক নুর বলেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আপত্তি উপেক্ষা করে গতকাল (বৃহস্পতিবার) সংসদে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তে সাইবার নিরাপত্তা আইন পাস করেছে। এই সরকার নিপীড়নমূলক আইন বাতিল করবে না, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে না, ওসি প্রদীপ-হারুনমুক্ত প্রশাসন গড়বে না। কারণ, সরকার টিকে আছে এই দুর্বৃত্তদের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, ৮-১০টি শিল্পগ্রুপ আজকে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। গ্রামে মোবাইলের নেটওয়ার্ক নেই, ডেঙ্গুতে চিকিৎসা না পেয়ে মানুষ হাসপাতালের বারান্দায় বারান্দায় ঘুরছে, প্রসূতি মা হাসপাতালে ভর্তি হতে না পেরে রাস্তায় সন্তান প্রসব করছেন। আর সরকার ডিজিটাল-স্মার্ট বাংলাদেশের নামে জনগণের সঙ্গে ভাওতাবাজি করছে। কাজেই জনগণের মুক্তির জন্য এই সরকার হঠাতে হবে, এ ছাড়া মুক্তি নেই।
ভিপি নুর বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে সাজানো নির্বাচন করতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কুরবানির পশুর মতো রাজনৈতিক নেতাদের দাম তুলেছে। নামসর্বস্ব রাজনৈতিক দল দিয়ে কয়েকদিন পর পর জোট ঘোষণা করাচ্ছে- যাতে এদের নিয়ে আরেকটি পাতানো নির্বাচন করতে পারে। এই ফ্যাসিবাদের দালালি করে যারা নির্বাচনে যাবে, তারা ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইন আওয়ামী লীগের গদি রক্ষার আইন। বিনা পরোয়ানায় এই আইনে গ্রেপ্তারের বিধান রেখেছে সরকার। এমন আইন জনগণ মানে না। জনগণের সরকার ক্ষমতায় আসলে এই কালো আইন বাতিল করা হবে। অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক নাসির উদ্দিন এলানের মুক্তি দাবি করেন তিনি।
গণঅধিকার পরিষদের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান খানের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন- গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাব হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দিন, ঢাকা জেলার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শওকত, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ, সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান প্রমুখ।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে মিছিল শুরু করেন গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। মিছিলটি পল্টন, দৈনিক বাংলা মোড় হয়ে পল্টনে মোড় ঘুরে বিজয়নগর পানির ট্যাংকির মোড়ে এসে শেষ হয়।
মন্তব্য করুন