কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:১৬ পিএম
আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:১৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ইসলামের সঙ্গে জঙ্গিবাদের কোনো সম্পর্ক নাই : বিচারপতি আব্দুর রউফ

জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি আব্দুর রউফ। ছবি : কালবেলা
জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি আব্দুর রউফ। ছবি : কালবেলা

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি আব্দুর রউফ বলেছেন, ১৯ শতকে শক্রকে মারার জন্য অস্ত্র তৈরি হলো আর মানুষের বিবেককে ধ্বংস করার জন্য মাদককে ছড়িয়ে দেওয়া হলো। যাতে করে মাদকাসক্ত ব্যক্তি দিয়ে সহজে বিকেক নষ্ট করে অস্ত্রের অপব্যবহার করা যায়। আজকাল সম্পদশালীদের সম্পদ আদান-প্রদানের মাধ্যম হচ্ছে মাদক। আমাদের আমাদের সন্তান ও সমাজকে মাদকমুক্ত থাকার জন্য সতর্ক ও সাবধান হতে হবে। ইসলাম সার্বজনীন ধর্ম, ইসলামের সাথে মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কোনো সম্পর্ক নেই এবং সমর্থনও করে না। কারণ ইসলামে মাদক ও অন্যায়ভাবে হত্যা নিষিদ্ধ। ইসলাম মানুষের কল্যাণে এসেছে।

শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম মিলনায়তনে বাংলাদেশ মাজলিসুল মুফাসসিরিনের সম্মেলনে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও নৈতিক অবক্ষয় রোধে করণীয় শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মাওলামা আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা অধ্যাপক নূরুল আমীনের পরিচালনায় সম্মেলনে প্রধান আলোচকের বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাইয়্যেদ কামাল উদ্দীন আব্দুল্লাহ জাফরী।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দৈনিক নয়াদিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, তা’মিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার সাবেক প্রিন্সিপাল অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনুল আবেদীন, বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের সেক্রেটারি ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, মাওলানা মোশতাক ফয়েজী, মাওলানা ফজলুল করিম (ভোলা), সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দীন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

সাইয়্যেদ কামাল উদ্দীন জাফরী বলেন, দেশের আলেমগণ কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ঐকমত্য হয়েছেন এটাকে সাধুবাদ জানাই। ইসলাম মধ্যমপন্থার ধর্ম। মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকতে হবে কৌশল ও হিকমাতসহকারে। ইসলাম চরমপন্থা সমর্থন করে না। কোনো মুসলিম চরমপন্থা অবলম্বন করতে পারে না। আমাদের প্রিয় মুফাসসির আল্লামা সাঈদী চলে গেছেন। মহান আল্লাহ তার অবদানকে কবুল করুন এবং আল্লামা সাঈদীকে জান্নাতের সর্বোচ্চ সম্মানজনক স্থান দান করুন।

অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনুল আবেদীন বলেন, ধর্মীয় আচার মেনে চললে দেশে মাদক ও সন্ত্রাস হ্রাস পাবে। মাদক ও সন্ত্রাস রোধে ইসলামী আইনের বিকল্প নেই। মাদকবিরোধী আইনের নামে মাদককে আস্কারা দিলে দেশ ধ্বংসের অতল গহ্বরে তলিয়ে যাবে। মাদকাসক্ত ব্যক্তি নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বেছে নিচ্ছেন আত্মহত্যার পথ। এভাবে অনেক সম্ভাবনাময় তরুণ মাদকের কবলে পড়ে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। মাদকের থাবায় নাস্তানাবুদ একটি প্রজন্ম। শহর থেকে গ্রাম, স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সর্বত্রই মাদক পাওয়া যাচ্ছে হাতের নাগালে।

মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী বলেন, মাদক এক নীরব ঘাতক। ধর্ষণ, খুন, চুরি, ছিনতাই, বিবাহবিচ্ছেদের হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ার মূলে রয়েছে মাদক। পাড়া-মহল্লায় উঠতি বয়সের কিশোর গ্যাং গ্রুপগুলো যে অপরাধমূলক কাজ করছে তার পেছনেও রয়েছে এই মাদক। সমাজে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বেড়ে যাওয়ার পেছনে রয়েছে মাদক। ইসলামে মাদক নিষিদ্ধ। বর্তমানে শুধু ছেলেরাই মাদক সেবন করছে তেমনটি নয়। গবেষণা বলছে, মাদকসেবীদের ১৬ শতাংশ নারী।

সম্মেলনে বক্তারা আরও বলেন, ইসলামে মাদক সেবন নিষিদ্ধ। ইসলামে অন্য যেসব নিষিদ্ধ বা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত বিষয় রয়েছে, সেগুলো থেকে ব্যক্তি চাইলেই সহজে বিরত থাকতে পারে। অর্থাৎ, ইচ্ছা করলে এসব অপরাধ থেকে সরে থাকা যায়। কিন্তু মাদক গ্রহণ এমন এক অপরাধ, যা নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকে না; বরং মাদকসেবী নিজেই মাদক বা নেশার নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। ফলে এ থেকে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

তারা বলেন, জঙ্গি মানে যারা আকস্মিকভাবে কারও ওপর হামলে পড়ে। জনজীবনকে বিষিয়ে তোলে, উগ্রতার মাধ্যমে এক ভয়াল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। যারা রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। যাদের সবাই বিপজ্জনক বলে মনে করে। এদের মধ্যে কোনো গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থ হাসিলের নিমিত্তে লড়াই করে, আবার কোনো গোষ্ঠী পর্দার অন্তরালের কোনো দেশি-বিদেশি অপশক্তির হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে ব্যবহৃত হয়। জঙ্গিদের সঙ্গে ইসলাম ও মুসলমানদের কোনো সম্পর্ক নেই। ইসলাম জবরদস্তিমূলক প্রতিষ্ঠা করার বিষয় নয়, হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জীবদ্দশায় তিনি এটি করেননি, এর শিক্ষাও দেননি উম্মতকে। অকারণে ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত হওয়া ইসলাম কখনো সমর্থন করে না।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিসিবি নির্বাচনে মনোনয়ন নিলেন ৬০ প্রার্থী

ঝাড়ু হাতে নিজেই রাস্তা পরিষ্কারে নামলেন ডিসি সারোয়ার

বিএনপি গণতন্ত্র ও মানুষের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করে : মহসীন হোসাইন

এমসিসিআইর অনুষ্ঠানে পরামর্শক কমিটির সদস্য / ‘বিদ্বেষ’ থেকে এনবিআর ভাগ হলে ভয়ংকর পরিস্থিতি হবে

হঠাৎ ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য থেকে রাষ্ট্রদূতদের ডেকে পাঠালো ইরান

গণতান্ত্রিক শক্তি এক না হলে গুপ্ত স্বৈরাচারের আবির্ভাব হতে পারে : তারেক রহমান

কোটিপতি হওয়ায় রাগ করে নিজের কোম্পানি দান করে দেন উদ্যোক্তা!

মাসুমা রহমান নাবিলা ও ভিট বাংলাদেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর

ইয়াবা বিক্রির টাকা ভাগাভাগি নিয়ে বন্ধুর হাতে খুন 

শহীদ জিয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করছেন তারেক রহমান : মাহবুবুর রহমান  

১০

বিসিএস ২২ ব্যাচ ফোরামের নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক ও শরৎ সন্ধ্যা

১১

ঢাকা কলেজের নর্থ হলে লাইট-ফ্যান উপহার দিল ছাত্রদল

১২

ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

১৩

নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন সারজিস

১৪

চীনে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে হাতের কাটা নখ, রহস্য কী জেনে নিন

১৫

দুর্গাপূজা উপলক্ষে তুরাগে শতাধিক হিন্দু পরিবারকে তারেক রহমানের উপহার

১৬

রাজ্জাকের পদত্যাগে অবাক শান্ত

১৭

কোটের হাতাতে এই অতিরিক্ত বোতাম কেন থাকে, আসল রহস্য জেনে নিন

১৮

আবুধাবিতে বিশ্বের প্রথম ‘নেট জিরো এনার্জি’ মসজিদ

১৯

ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল

২০
X