সার্বিকভাবে নির্বাচন নিরপেক্ষ হয়েছে এ কথা বলার সুযোগ নেই মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, কিছু কিছু জায়গায় নির্বাচন ফেয়ার হয়েছে। অনেক জায়গায় আনফেয়ার হয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারি লোকজন জড়িত ছিল বলেও অভিযোগ করেন সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী। বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বনানীস্থ দলের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় পার্টি রাজনৈতিক গতি পরিবর্তন করেনি জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনে অনেক সমস্যা হয়েছে। সরকার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা রাখেনি। অথচ তারা আমাদের সঙ্গে আলোচনায় এ ব্যাপারে আশ্বাস করেছিল। নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়নি এমন একাধিক আসনের উদাহরণ তুলে ধরে চুন্নু বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়ায় জাতীয় পার্টি কাঙ্ক্ষিত ফল পায়নি। কোনো কোনো আসনে প্রিসাইডিং অফিসার আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে সিল মেরেছে।
তিনি বলেন, ১১ আসন নিয়েই বিরোধী দল হিসেবে সংসদে জনগণের পক্ষে সরকারকে জবাবদিহি করতে যা যা করা দরকার করব। জবাবদিহিতা করাতে না পারলে ৫০জন এমপি থাকলেও লাভ নেই। আন্তরিকতা থাকলে ১১ জন দিয়েই অনেক অর্জন সম্ভব হবে।
নির্বাচিত ১১ সংসদ সদস্যদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব না থাকার কথা জানিয়ে চুন্নু বলেন, আমাদের কারও মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। একটি পক্ষ নির্বাচন শেষে নানাভাবে বাইরে ক্ষোভ প্রকাশ করছে। মিটিং করছে। এগুলো করা ঠিক হয়নি। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে বড় বড় নেতাদের বহিস্কার করা হলেও কোনো সমস্যা হয়নি, জাপাতেও হবে না। দলের মূল নেতা ঠিক থাকলে কাউকে বহিষ্কার করলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। বাস্তবতা হলো, দলের ৯৯ ভাগ নেতাকর্মীর শীর্ষ নেতাদের প্রতি আস্থা রয়েছে।
বিশৃঙ্খলা ও দলবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে কয়েকজন নেতা না থাকলে কোনো ক্ষতি হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ১৯৭৩ সালের সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত একাই বিরোধী নেতা হিসেবে সংসদ কাপিয়ে দিয়েছিলেন। আমরা ১১ জন জনগণের পক্ষে কথা বলে, সংসদ কাপিয়ে দেব।
স্বতন্ত্র বিজয়ীরা বিরোধী দল হতে পারবে কিনা- এমন প্রশ্নে চুন্নু বলেন, অবশ্যই আমরা বিরোধী দল। স্পিকার অনুমোদন করলে বা না করলেও আমরা বিরোধী দল। কারণ আওয়ামী লীগের পরেই দলগতভাবে জাতীয় পার্টি বেশি আসন পেয়েছে।
নির্বাচনে পরাজিত হয়ে দলের ক্ষুব্ধ নেতাদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচন ফেয়ার বা আনফেয়ার হতে পাতে, তা জেনেশুনেই সবাই মাঠে ছিলেন। এখন কেন ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১২টি নির্বাচনের একটিও নিরপেক্ষ হয়নি দাবি করে চুন্নু বলেন, বর্তমান পদ্ধতিতে নির্বাচন কোনোদিন ফেয়ার হবে না। এজন্য পদ্ধতিগত পরিবর্তন আনতে হবে। প্রতীক দিয়ে নির্বাচন করে আনুপাতিক হারে ফল নির্ধারণ করা সম্ভব হলে, সবার কাছেই তা গ্রহণযোগ্য হবে বলেও বিশ্বাস করেন জাতীয় পার্টির এই নেতা।
মন্তব্য করুন