আগামী ২৭ জানুয়ারি দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ সফল করার আহ্বান জানিয়ে সভা করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। সভায় বলা হয়েছে, প্রহসনের নির্বাচনে ঘোষিত সরকার শুরুতে চালের মূল্য বৃদ্ধি, আর এখন ঠিকমতো গ্যাস বিদ্যুৎ পানি না দিতে পারলেও এসব ক্ষেত্রে দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট কাটার মহাউৎসবে মিলিত হওয়ার প্রচেষ্টা নিচ্ছে। ঋণখেলাপি, দুর্নীতিবাজ, টাকা পাচারকারী লুটেরাদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার ও এদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
বাম জোটের সভায় আরও বলা হয়েছে, খবর বেরিয়েছে টাকা ছাপিয়ে কয়েকটি ব্যাংককে দেওয়া হচ্ছে। এসবের মধ্য দিয়ে দেশ ও দেশের মানুষকে আবারও সংকটের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
সভায় নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার করে নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন, ভোটাধিকার, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ, মূল্যবৃদ্ধি বন্ধ, দুর্নীতিবাজ, টাকা পাচারকারী-লুটপাটকারীদের শাস্তির দাবিতে ২৭ জানুয়ারি দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ সফল করতে সচেতন দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
আজ ২৪ জানুয়ারি, (বুধবার) সকালে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) কার্যালয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)’র সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, বাসদ (মার্কসবাদী)’র সীমা দত্ত, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের তৈমুর খান অপু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহিদুল ইসলাম সবুজ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
সভায় নেতৃবৃন্দ দেশের গ্যাস সংকটের তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, কিছু ব্যক্তি গোষ্ঠী ও কমিশনভোগীদের সুযোগ দেওয়ার নীতি ও দুর্নীতির কারণে এই সংকট তৈরি হয়েছে। দেশের স্থলভাগ ও সমুদ্রভাগের গ্যাস অনুসন্ধানে কার্যকর ভূমিকা না নিয়ে ব্যবসায়ী ও কমিশনভোগীদের স্বার্থে গ্যাস খাতকে আমদানির ভাগ খাতে পরিণত করা হয়েছে। এসব লুটেরা ব্যবসায়ী ও কমিশনভোগীরা টাকার পাহাড় গড়েছে অথচ আজ গ্যাস সংকটে শিল্প ও জনজীবন বিপর্যস্ত হচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ বিশ্ব ব্যাংক আইএমএফ’র শর্ত মেনে এবং নিজেদের আর্থিক সংকট মেটাতে জনগণের পকেট কাটতে অযৌক্তিকভাবে গ্যাস পানি ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা বন্ধের দাবি জানিয়ে বলেন সরকারের ভুলনীতি এবং দুর্নীতির দায় জনগণের কাঁধে চাপানো যাবে না।
সভায় বিভিন্ন শ্রেণিপশার মানুষকে নিজেদের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এসব দাবি আদায়ের এবং ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে গণআন্দোলন গণসংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়।
সভার শুরুতে ১৯৬৯ এর গণঅভূত্থানের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলা হয়, শহীদদের স্বপ্ন পূরণে নীতিনিষ্ঠ অবস্থানে থেকে বামপন্থীরা লড়াই চালিয়ে যাবে।
মন্তব্য করুন