কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২২ জুন ২০২৪, ০৩:৫৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সর্বদা সোচ্চার আওয়ামী লীগ

স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সর্বদা সোচ্চার আওয়ামী লীগ

মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীনতা এনে দেয় আওয়ামী লীগ। জন্ম থেকেই স্বৈরচারি শাসকদের বিরুদ্ধে জনগণের কণ্ঠস্বর হয়ে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আওয়ামী লীগ। '৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, যুক্তফ্রন্ট গঠন, ৬ দফা ও ১১ দফা দাবি, '৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান- এ সবই ছিলো স্বৈর শাসকদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের চপেটাঘাত। আর এ কারণেই স্বাধীন বাংলাদেশেও দলটি স্বৈরচারী ও অগণতান্ত্রিক শাসকদের বিরুদ্ধে সর্বদাই সোচ্চার ভূমিকা পালন করে গেছে।

অসাম্প্রদায়িকতা, জনগণের অধিকার আদায় ও ভাতের অধিকারের দাবি নিয়ে আন্দোলন ও সর্বশেষ দেশ স্বাধীন হলেও মুক্তিযুদ্ধের এই চেতনাকে কখনই ভালো চোখে দেখেনি পাকিস্তান ও তার এদেশের দোসররা। আর বাংলাদেশের এই জনসম্পৃক্ত অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও মুক্তিযুদ্ধের জাতীয়তাবাদকে ধ্বংস করার জন্যই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেষরাতে বঙ্গবন্ধুকে তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যদের সঙ্গে হত্যা করা হয়।

ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। আর এভাবেই গণতন্ত্রের পক্ষে আজীবন লড়াই করা, জেল-জুলুমের শিকার হওয়া গণতন্ত্রকামী নেতাকে হত্যার মাধ্যমে দেশে প্রতিষ্ঠা লাভ করে স্বৈরশাসন। ১৯৭৫ সালে থেকে ১৯৯০ সালে পর্যন্ত টানা স্বৈরশাসকরা অগণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা ধরে রাখে। তবে যখনই দেশের গণতান্ত্রিক ধারাকে থমকে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে তখনই জনগণকে নিয়ে ঢাল হয়ে রাজপথে নেমেছে আওয়ামী লীগ।

পচাত্তরের পর অবৈধভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করা জিয়াউর রহমান ১৯৮১ সালে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের হাতে নিহত হন। এরপর ক্ষমতায় আসেন আরেক স্বৈরশাসক হোসেইন মোহাম্মদ এরশাদ। স্বৈরশাসকরা যখন নানা ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে লিপ্ত, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যখন বিচ্যুত, রাজনীতি ও রাজনৈতিক দলগুলো সংকটে নিমজ্জিত, তখনই ১৯৮১ সালের ১৭ মে জীবনের মায়া উপেক্ষা করে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা।

দেশে এসেই সভাপতি হিসেবে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন তিনি। শুরু হয় ভাতের ও ভোটের জন্য লড়াই। এ সময় বাংলাদেশে অনেক রাজনৈতিক দল থাকলেও অতীতের অন্যান্য সব আন্দোলনের মতো স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয় আওয়ামী লীগ। দেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে আবারও রাজপথে সরব হয় দলটি।

স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন দমনে চলে খুন, হত্যা, জেল, জুলুম, নির্যাতন। রক্তের সিঁড়ি বেয়ে স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনের ঢেউয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে ঢাকার রাজপথ। এরশাদের পতন ত্বরান্বিত ও গণতন্ত্র মুক্তি আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি হয় ১৯৯০ সালের ১৯ নভেম্বর। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে জনতার সম্মিলিত আন্দোলনে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর পদত্যাগ করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। অস্থায়ী সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। অবসান হয় স্বৈরশাসনের, আর মুক্তি পায় গণতন্ত্র।

এরপর বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক ধারায় সাংবিধানিকভাবে পরিচালিত হতে থাকে। কিন্তু এই ধারা বেশি দিন টেকেনি। ১৯৯৬ সালে নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছিল বিএনপি। তখনও বিএনপির এই স্বৈরাচারী কর্মকাণ্ডকে আন্দোলনের মাধ্যমে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। ২০০১ সালে বিদেশি ষড়যন্ত্রে নির্বাচনে হারের পর বিএনপি ক্ষমতায় আসে।

এ সময় বিএনপি-জামায়াতের দেশ বিরোধি বিভিন্ন কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ও তাদের জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস ও স্বৈরচারি কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলে আওয়ামী লীগ। কেননা বিএনপি আবারও ক্ষমতায় থাকতে কারচুপির আশ্রয় নেয়। ২০০১ সালে নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবার পরে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অবসরের বয়সসীমা বাড়িয়ে সংবিধানে একটি বড় সংশোধনী আনে বিএনপি সরকার। অভিযোগ রয়েছে, নিজেদের পছন্দের প্রধান বিচারপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে রেখে নির্বাচনের সময় সুবিধা আদায়ের জন্য এই কাজ করেছিল বিএনপি সরকার।

কিন্তু এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলে তখনকার বিরোধী দল আওয়ামী লীগ। সংঘাতময় এক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ২০০৭ সালের ১১ই জানুয়ারি রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করে সেনাবাহিনী। জারি করা হয় জরুরী অবস্থা। তবে যখন অসাংবিধানিকভাবে দীর্ঘ সময় ধরে এই সামরিক সরকার ক্ষমতা দখল করে রাখে, সেই সঙ্গে রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের আটকের মাধ্যমে পাকিস্তানের মতই সেনা নির্ভর একটি রাজনৈতিক কাঠামো তৈরির ষড়যন্ত্র চলে।

মূলত আরেকটি স্বৈরশাসনের দিকেই তখন এগিয়ে যাচ্ছিলো দেশ। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তায় রাজপথে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলার মাধ্যমে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে দ্রুততম সময়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন প্রদানে বাধ্য করতে সক্ষম হয় আওয়ামী লীগ। এই নির্বাচনেও বিপুল ভোটে জয় লাভ করে আওয়ামী লীগ। আবারও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সাংবিধানিক ভিত্তিতে পরিচালিত হতে থাকে দেশ যা এখনও চলমান রয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বড় দুর্যোগের কবলে ভারতের হিমাচল

শিশু রাফা জানে না তার বাবা নেই

ফরিদুজ্জামান ফরহাদের পক্ষে নড়াইলে গণসংযোগ 

গাজায় আরও এক ইসরায়েলি সেনা নিহত

গোলাম মাওলা রনিকে এক হাত নিলেন প্রেস সচিব

দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মিরাজদের পাশে থাকছেন না সিমন্স

মুরাদনগরের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল র‍্যাব

পিআর পদ্ধতি চায় যোগ্যতাহীনরা : আমিনুল হক

আবারও মার্কিন সেনাদের ওপর ড্রোন হামলা

কিয়েভে ড্রোন হামলার রেকর্ড রাশিয়ার

১০

জামায়াতে যোগ দিলেন জাপা নেতা

১১

শুটিং সেটে হঠাৎ অসুস্থ স্বস্তিকা, কী হয়েছিল? 

১২

অভিনেতা মাইকেল ম্যাডসেন আর নেই 

১৩

যে কোনো মূল্যে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করব : নাহিদ

১৪

স্নাতকোত্তরে ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় পেলেন ২৫০

১৫

নুর-রাশেদসহ গণঅধিকারে ২৫ নেতার বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণের নির্দেশ

১৬

নতুন ফিচার নিয়ে এলো হোয়াটসঅ্যাপ

১৭

‘রাজনীতি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল’

১৮

ছুটির দিনে খেলতে গিয়ে প্রাণ গেল ২ ভাইয়ের

১৯

ট্রাম্পের সঙ্গে সৌদি যুবরাজের গোপন বৈঠক

২০
X