

যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ফ্রান্সে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে মহান বিজয় দিবসের ৫৪তম বার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) ফ্রান্সের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসটির আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি শুরু হয়। ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের মিশন উপপ্রধান কাজী এহছানুল হক জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
এরপর দূতাবাসের অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা পরিচালনা করেন দূতাবাসের প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান ওয়ালিদ বিন কাশেম। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। পরে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আত্মদানকারী বীর শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বাণী পাঠ করা হয়।
দূতালয় প্রধান তার বক্তব্যে গুরুতর অসুস্থ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং জুলাই যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেন।
মিশন উপপ্রধান কাজী এহছানুল হক ১৯৭১ ও ২০২৪ সালের সব শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং বীর যোদ্ধাদের অবদান কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, বিজয় দিবস আমাদের সংগ্রাম, আত্মত্যাগ ও স্বাধীনতার মর্যাদার এক অনন্য প্রতীক।
তিনি আরও বলেন, দেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে গণতন্ত্র বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছে। একটি দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে এসে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। আগামী নির্বাচনে বিভাজনের রাজনীতি পরিহারের আহ্বান জানিয়ে কাজী এহছানুল হক বলেন, তাঁবেদারি শক্তি ওসমান হাদির মতো তরুণদের কণ্ঠকে দমিয়ে দিতে চায়।
মিশন উপপ্রধান বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং বিভিন্ন সংকটকালে প্রবাসী বাংলাদেশিদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেন। একই সঙ্গে ১৯৭১ ও ২০২৪ সালের শহীদ ও বীর যোদ্ধাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে অংশগ্রহণের জন্য ফ্রান্সপ্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিফেন্স এটাচি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ খায়রুজ্জামান মোল্লা (এনডিসি, পিএসসি), মিনিস্টার (কমার্শিয়াল) মিজানুর রহমান, দ্বিতীয় সচিব কে এফ এম শারহাদ শাকিলসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠান শেষে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বীর শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এ সময় ফ্রান্সপ্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফ্রান্স বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ তাহের, নাগরিক পরিষদের সভাপতি আবুল খায়ের লস্কর, কমিউনিটি নেতা সিরাজুল ইসলাম মিয়া, সিনিয়র সাংবাদিক এম এ হাশেম, এনসিপি ডায়াস্পোরা ফ্রান্সের সদস্য সচিব সাফওয়াত হোসেন রাব্বি, এফবিজেএ মুখপাত্র মোহাম্মদ আরিফ উল্লাহ এবং কমিউনিটি নেতা জিয়াউদ্দীন চৌধুরীসহ অনেকে।
মন্তব্য করুন