সৌদি আরবের রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়েছে জাতীয় গণহত্যা দিবস। আলোচনা অনুষ্ঠানে দিবসটি উপলক্ষ্যে দেওয়া রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে মুক্তিযুদ্ধে নিহত সকল শহিদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আলোচনা সভায় রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ১৯৭১ সালে মার্চ মাসে বাংলাদেশের মানুষের নায্য অধিকার আদায়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চলমান আন্দোলন প্রতিহত করতে ইয়াহিয়া ও ভুট্টোর নীল নকশায় ২৫ মার্চ কালরাতে বাংলাদেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। নির্মমভাবে হত্যা করে শত শত নিরস্ত্র মানুষকে, রচিত করে মানব ইতিহাসের এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। এদিন মধ্যরাতের পর ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন যা তৎকালীন ইপিআর ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাংলার মানুষ।
রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ২৫ মার্চকে জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব ২০১৭ সালে জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয় এবং তখন থেকে থেকে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। গণহত্যা দিবস পালন বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে নিহত ত্রিশ লাখ শহিদের আত্মত্যাগের স্বীকৃতির পাশাপাশি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক।
তিনি বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সংঘটিত গণহত্যার বিচার হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহ গণহত্যা থেকে শুরু করে বিভিন্ন গণহত্যার বিচার হয়েছে। তাই ১৯৭১ সালে সংঘটিত ভয়াবহ গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি জরুরী। আর এই স্বীকৃতি আদায়ে সরকারের পাশাপাশি বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশি কমিউনিটি, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
দূতাবাসের কাউন্সেলর মো. বেলাল হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মিশন উপপ্রধান মো. আবুল হাসান মৃধা, ডিফেন্স অ্যা্টাসে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম ফারুক বক্তব্য প্রদান করেন।
এছাড়া আরও বক্তব্য প্রদান করেন রিয়াদস্থ বাংলাদেশি কমিউনিটির বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, ব্যবসায়ী এম আর মাহাবুব। বক্তারা সবাই ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে সংঘটিত ভয়াল গণহত্যার বিচার ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দাবী করেন।
মন্তব্য করুন