ইসলামে দৈহিক পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম হলো অজু ও গোসল। পবিত্রতা ছাড়া নামাজের মতো গুরুত্বপূর্ণ ফরজ আদায় করা যায় না। এখন প্রশ্ন হলো, সব শর্ত মেনে গোসল করার পর নামাজের জন্য কি নতুন করে অজু করতে হবে? উত্তর হলো, না। পবিত্রতা অর্জনের জন্য ফরজ ও সুন্নত মতে গোসল করার পরে নতুন করে আর অজু করার প্রয়োজন নেই।
হাদিসে আছে, রাসুল (সা.) গোসলের পর অজু করতেন না। হজরত আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) গোসলের পর নতুন করে অজু করতেন না। (সুনানে নাসায়ি)।
তিরমিজি ও নাসায়ি শরিফের আরেকটি হাদিস থেকে জানা যায়, গোসলের আগে রাসুল (সা.) অজু করে নিতেন। এটাও হযরত আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবীজি (সা.) গোসলের আগে অজু করে নিতেন। গোসলের পর নতুন করে অজু করতে তাকে আমি দেখিনি।
কেন গোসলের পর অজু জরুরি নয়, তার ব্যাখ্যায় বলা হয়-
গোসলের ফরজ ৩টি। ১. কুলি করা। ২. নাকে পানি দেওয়া এবং ৩. পুরো শরীর ভালোভাবে ধৌত করা। আর অন্যদিকে অজুর ফরজ হলো ৪টি। ১. পুরো মুখ ধোয়া। ২. দুই হাতের কুনুইসহ ধোয়া। ৩. মাথা মাসেহ করা। ৪. দুই পায়ের টাখনুসহ ধোয়া।
দেখা যাচ্ছে, কেউ যদি গোসলের ফরজগুলো আদায় করে নেয় তাহলে অজুর ফরজগুলোও আদায় হয়ে যায়। এ জন্য গোসলের পর আর নতুন করে অজু করার প্রয়োজন নেই।
গোসলের সময় মাথা মাসেহ করার ফরজ আদায় হয় না- এ প্রসঙ্গে প্রখ্যাত আলেম মুফতি ইউসুফ (রহ.) বলেন, মাসেহ বলতে বোঝায়, ভেজা হাত মাথায় স্পর্শ করানো। এই অর্থে মাথা ধোয়ার কারণে মাসেহর চেয়েও অতিরক্ত হয়ে যায়, আদায় হয়ে যায় মাসেহর ফরজও।
ফকিহরা বলেন, গোসলের আগে অজু করা সুন্নত। না করলে গোনাহ নেই, শুধু গোসলই যথেষ্ট। হানাফি মাজহাবের বিখ্যাত ফতোয়ার কিতাব ফতোয়ায়ে আলমগিরিতে বলা হয়েছে, গোসলই অজুর জন্য যথেষ্ট। তবে গোসলের আগে অজু করা সুন্নত।
গোসলের পর অজু করার প্রয়োজন নেই। তবে কেউ চাইলে নামাজের আগে নতুন করে অজু করতে পারে। এ ক্ষেত্রে তিনি মুস্তাহাব আমলের সাওয়াব পাবে। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি, ১ম খণ্ড, ১৪ পৃষ্ঠা)।
মন্তব্য করুন