কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৯ আগস্ট ২০২৫, ০৩:৩৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কারো মৃত্যুর পর ‘চল্লিশা’ খাওয়ানো কি জায়েজ?

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মৃত্যু জীবনের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী। জন্ম নিলে একদিন মারা যেতে হবে। মায়াঘেরা দুনিয়ার রূপ-রঙ ছেড়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমাতে হবে- যেখানে কেউ কারও বন্ধু হবে না, হবে না শত্রুও। নিজের দায়িত্ব নিজেই নিতে হবে।

এ প্রসঙ্গে রাব্বুল আলামিন মহাগ্রন্থ আল কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে এবং তোমরা নিজ নিজ কাজের প্রতিফল সম্পূর্ণভাবেই কিয়ামতের দিন পাবে।’(সুরা আলে ইমরান : ১৮৫, সুরা আনকাবুত : ৫৭)

সুরা নাহলে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘অতঃপর নির্ধারিত সময়ে যখন তাদের মৃত্যু এসে যাবে, তখন এক মুহূর্তও বিলম্বিত কিংবা ত্বরান্বিত করতে পারবে না।’ (আয়াত ৬১)

কাজেই মৃত্যু যে নিশ্চিত, এই কথাতে কোনো ধর্মের মানুষেরই দ্বিমত নেই। তবে, আমাদের দেশে কেউ মারা যাওয়ার পর তার নামে বিভিন্ন দিন খাবারের আয়োজন করা হয়। বিশেষ করে মৃত্যুর ৪০তম দিনে ‘চল্লিশা’ নামে বিশাল ভোজনের আয়োজন করা হয়। প্রশ্ন হলো, ইসলাম কি এসব অনুষ্ঠান সমর্থন করে? চল্লিশা খাওয়ানো কি জায়েজ আছে?

এ প্রসঙ্গে প্রখ্যাত ইসলামি স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে শক্তিশালী বিদআত হলো ‘চল্লিশা’ খাওয়ানো। এর চেয়ে বড় বিদআত এই দেশে আর নাই।

তিনি দাবি করেন, হিন্দুদের মধ্যে একটা ধারণা আছে— যদি কোনো মানুষ মারা যায়, তবে তার মৃত্যুর পর এলাকাবাসী এবং আত্মীয়স্বজনদের দাওয়াত দিয়ে না খাওয়ালে ওই মৃত ব্যক্তি স্বর্গে সোনা-দানা পায়, কিন্তু খাবার পায় না। না খেয়ে কষ্ট করে থাকতে হয়। ফলে এই লোকের জন্য জীবিতরা যে খাবার-দাবারের আয়োজন করেন, এই আয়োজনকে শ্রাদ্ধ বলা হয়। আর হিন্দুদের এই সংস্কৃতিটিই মুসলমানদের মধ্যে ‘চল্লিশা’ নামে ছড়িয়ে পড়েছে। ইসলামে এর কোনো ভিত্তি নেই।

আহমাদুল্লাহ বলেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কেউ মারা গেলে তার পরিবারের প্রতি সহানুভূতিশীল হও। তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা কর। কারণ, তাদের রান্না করার মতো মানসিক অবস্থা নাই। কিন্তু মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে থেকে চল্লিশা খাওয়ানোর কোনো কথা নবীজি (সা.) বলেননি।

ইসলামি এই স্কলার আরও বলেন, চল্লিশার এই বিদআত আমাদের সমাজ থেকে শক্তভাবে দূর করতে হবে। আমাদের সচেতন হতে হবে। স্বজন মারা গেলে দান-সদকা করুন, মসজিদ-মাদ্রাসার ইট কিনে দেন, এতে করে মৃত ব্যক্তি কবরে বসেও সওয়াব পাবনে। তবে, আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে ‘চল্লিশা’ করা যাবে না। এটা সুন্নাহবিরোধী। নবীজীবনে এর কোনো প্রমাণ মেলে না।

হাদিসে হজরত জারির ইবনে আবদুল্লাহ আলবাজালী (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, ‘আমরা (সাহাবারা) দাফনের পর মৃতকে কেন্দ্র করে সমবেত হওয়া ও খাবারের আয়োজন করাকে ‘বিলাপ’ বলে গণ্য করতাম।’ (মুসনাদে আহমদ : ২/২০৪; ইবনে মাজাহ : ১৬১২)

কাজেই, কেউ মারা গেলে তার জন্য ইসালে সওয়াব পৌঁছাতে চাইলে বেশি বেশি দান-সদকা করুন। হাঁ, দিন-তারিখ নির্ধারণ না করে পুণ্যলাভের আশায় গরিব-মিসকিনদেরকে খাবার খাওয়ানোও যাবে। তবে, কোনোভাইবে বাধ্যতামূলক মনে করে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘চল্লিশা’ আয়োজন করা যাবে না।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ডিএমপির খণ্ডিত ভিডিওতে অপপ্রচার, কঠোর ব্যবস্থা নেবে পুলিশ

মহাসড়কে আ.লীগের অস্ত্র নিয়ে মহড়া, যানবাহন চলাচল বন্ধ

শেখ হাসিনার মামলায় রাজসাক্ষী মামুন ট্রাইব্যুনালে হাজির 

ফিলিস্তিনে ইউরোপীয় দেশের পুলিশ মোতায়েন

বিলেতি পণ্য বর্জনের স্মৃতি, অস্তিত্ব সংকটে সলঙ্গা হাট

ট্রাইব্যুনালে কড়া নিরাপত্তা, রাজধানীজুড়ে বিজিবি-পুলিশের কঠোর অবস্থান

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেললাইনে আগুন

যে আসনের জন্য মনোনয়ন ফরম কিনলেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

হিমেল হাওয়ার দাপট, ১৩ ডিগ্রিতে নেমেছে তেঁতুলিয়ার তাপমাত্রা

প্রভিডেন্ট ফান্ডসহ চাকরি দিচ্ছে আকিজ গ্রুপ

১০

ইসলাম কায়েমের জন্য তোমাদের প্রয়োজন নেই, জামায়াতের উদ্দেশে টুকু

১১

শাটডাউন এড়াতে মার্কিন কংগ্রেসে বিল পাস

১২

১৩ নভেম্বর : ইতিহাসের এই দিনে যা ঘটেছিল

১৩

জালনোটসহ তিন কিশোর আটক

১৪

ঢাকায় শীত অনুভব, সকালে তাপমাত্রা নেমে ১৯ ডিগ্রিতে

১৫

চলতি বছর ভূমধ্যসাগরে রেকর্ড অভিবাসীর মৃত্যু

১৬

রাজধানীতে আজ কোথায় কী

১৭

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১৮

১৩ নভেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

১৯

গভীর রাতে চলন্ত বাসে আগুন

২০
X