মৃত্যু মানবজীবনের অবিচ্ছেদ্য সত্য। ধনী-গরিব, রাজা-প্রজা, শক্তিশালী-দুর্বল— সবার জন্যই মৃত্যু এক অনিবার্য গন্তব্য। আর আমরা যে দুনিয়ায় বাস করি, এটি সাময়িক। পরীক্ষার হলের মতো। পরকালে সফল হতে অবশ্যই এই পরীক্ষায় পাস করতে হবে। এরপরই মিলবে কাঙ্ক্ষিত জান্নাত।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করছেন, ‘জমিনের ওপর যা কিছু আছে আমি সেগুলোর শোভাবর্ধন করেছি, যাতে আমি মানুষকে পরীক্ষা করতে পারি যে, আমলের ক্ষেত্রে কারা উত্তম।’ (সুরা কাহাফ : ৭)
সুরাতুল বাকারায় ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা ঈমান এনেছে এবং নেক কাজ করেছে তাদের সুসংবাদ দাও, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতসমূহ, যার তলদেশ দিয়ে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে। ( আয়াত : ২৫)
সুরা নাহলে আল্লাহ তায়ালা বলছেন, ‘অতঃপর নির্ধারিত সময়ে যখন তাদের মৃত্যু এসে যাবে, তখন এক মুহূর্তও বিলম্বিত কিংবা ত্বরান্বিত করতে পারবে না।’ (আয়াত : ৬১)
মৃত্যুকে ‘আলিঙ্গনের’ পর প্রত্যেকের কাছে তার চিরস্থায়ী আবাসস্থল তুলে ধরা হয়। হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, মারা যাওয়ার পর মৃত ব্যক্তির সামনে তার মূল বাসস্থানকে তুলে ধরা হবে। সে যদি জান্নাতি হয়, তবে জান্নাতের বাসস্থান আর যদি সে জাহান্নামী হয়, তবে জাহান্নামের বাসস্থান। পরে বলা হবে, এই তোমার স্থান। অবশেষে আল্লাহ তায়ালা তোমাকে কিয়ামতের দিন উত্থিত করবেন। (তিরমিজি : ১০৭২)
তবে দুটি পাপ রয়েছে যার জন্য মানুষ সবচেয়ে বেশি জাহান্নামে যাবে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলকে (সা.) একবার প্রশ্ন করা হলো, কোন কাজটি সবচেয়ে বেশি পরিমাণ মানুষকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। জবাবে রাসুল (সা.) বললেন, আল্লাহভীতি, সদাচার ও উত্তম চরিত্র।
পরে আবারও নবীজিকে প্রশ্ন করা হলো, কোন কাজটি সবচেয়ে বেশি পরিমাণ মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যাবে। জবাবে রাসুল (সা.) বললেন, মুখ ও লজ্জাস্থান। অর্থাৎ, এই দুই অঙ্গের মাধ্যমে কৃত গোনাহের (পাপ) কারণে মানুষ সবচেয়ে বেশি জাহান্নামে যাবে। (তিরমিজি : ২০০৪)
অপর হাদিসে এসেছে, সাহল ইবনু সা’দ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার (সন্তুষ্টির) জন্য তার দুই চোয়ালের মধ্যবর্তী বস্তু (জিহ্বা) এবং দুই রানের মাঝখানের বস্তুর (লজ্জাস্থান) হেফাজত করবে, আমি তার জন্য জান্নাতের দায়িত্ব গ্রহণ করি। (বোখারি : ৬৪৭৪)
মন্তব্য করুন