

আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন শুধু তাঁর ইবাদতের জন্য। আর ইবাদতের শ্রেষ্ঠতম রূপ হলো নামাজ। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘নামাজ হলো দ্বীনের স্তম্ভ।’ অর্থাৎ, নামাজ ছাড়া ধর্মের ভিত্তি গড়ে ওঠে না।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তুমি সূর্য হেলার সময় থেকে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত নামাজ কায়েম করো এবং ফজরের নামাজ (কায়েম কর)। নিশ্চয়ই ফজরের নামাজে সমাবেশ ঘটে।’ (সুরা বনি ইসরাঈল : ৭৮)
প্রতিদিন পাঁচওয়াক্ত ফরজ নামাজে মুসল্লিদের মোলাকাত ভালোবাসা ও ভ্রাতৃত্বের একটি বন্ধন তৈরি করে। এতে করে তারা পরস্পর পরস্পরের প্রতি স্নেহ-মর্যাদাশীল হয়ে ওঠে। সামাজিক চলাফেরায় ধনী-গরিবের বৈষম্য বিদূরিত হয়। সমাজে নববি সভ্যতার আবির্ভাব ঘটে।
ইসলামে পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের মধ্যে জুমার নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত অন্যতম। এ প্রসঙ্গে হাদিস শরিফে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেছেন,‘যে ব্যক্তি জুমার দিন ফরজ গোসলের মতো গোসল করে এবং প্রথম প্রহরে মসজিদে যায়, সে যেন একটি উট কোরবানি করল। দ্বিতীয় প্রহরে গেলে গরু কোরবানির সওয়াব, তৃতীয় প্রহরে গেলে ভেড়া, চতুর্থ প্রহরে গেলে মুরগি এবং পঞ্চম প্রহরে গেলে ডিম কোরবানির সওয়াব পাবে। এরপর যখন ইমাম খুতবা দিতে মিম্বারে ওঠেন, তখন ফেরেশতারা আর আমল লেখেন না, তারা খুতবা শুনতে থাকেন। (বোখারি : ৮৮১)
তবে জুমাবারে কিছু কিছু কাজ থেকে বিরত থাকার কথা বলা হয়েছে হাদিসে । বিশেষভাবে মসজিদের ভেতর বিরত থাকতে হবে এমন দুটি কাজের কথা নিচে উল্লেখ করা হলো :
১. মসজিদে গিয়ে কাতার ডিঙিয়ে সামনে যাওয়া থেকে বিরত থাকা
জুমার দিন ইমামের কাছাকাছি বসার আগ্রহ ও চেষ্টা থাকা উচিত। কিন্তু সে জন্য আগে আগে মসজিদে উপস্থিত হতে হবে। মসজিদে পরে উপস্থিত হয়ে অন্য মুসল্লিদের ডিঙিয়ে তাদেরকে কষ্ট দিয়ে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করা অন্যায় ও গোনাহের কাজ।
খুতবা চলা অবস্থায় কেউ যদি কাতার ডিঙিয়ে সামনে যেতে চায়, তাহলে অন্য মুসল্লিদের উচিত তাকে এ কাজ করতে নিষেধ করা ও বসিয়ে দেওয়া। একবার আল্লাহর রাসুল (সা.) জুমার খুতবা দিচ্ছিলেন। এমন সময় এক লোক সবার ঘাড় ডিঙিয়ে সামনে আসছিল। নবীজি (সা.) বললেন, ‘বসো, তুমি মানুষকে কষ্ট দিলে।’ (আবু দাউদ : ১১১৮)।
অন্যদিকে, ফেকাহবিদ আলেমরা বলেন, মসজিদে শুধু ইমামের স্থান নির্ধারিত। এ ছাড়া মুয়াজ্জিন বা অন্য কারও স্থান নির্ধারিত নয়।
২. জুমার খুতবার সময় কথা বলা থেকে বিরত থাকা
জুমার নামাজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো খুতবা। খুতবা চলাকালে নিশ্চুপ ও মনোযোগসহকারে তা শোনা ওয়াজিব। নবী করিম (সা.)-এর একাধিক হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, খুতবা চলাকালে নিশ্চুপ থাকা কতটা জরুরি। এমনকি খুতবা চলাকালে অন্য কাউকে কথা বলতে নিষেধ করাও ইসলামে অনুচিত। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, জুমার দিন খুতবার সময় যদি তুমি তোমার পাশের সঙ্গীকে বল ‘চুপ করো’, সেটাও অনর্থক। (বোখারি : ৯৩৪, মুসলিম : ৮৫১)
মন্তব্য করুন