লর্ডসের সবুজ গালিচায় শনিবার একদিকে যখন দক্ষিণ আফ্রিকা উদযাপন করছিল তাদের প্রথম বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের আনন্দ, তখন অন্যদিকে এক অনভ্যস্ত বেদনায় নীরব ছিলেন জশ হ্যাজলউড। দশম ফাইনালে এসে শেষ হলো তার অবিশ্বাস্য ‘অজেয়’ রেকর্ড—৯টি বড় ফাইনালে অপরাজিত থাকার পর এবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে স্বপ্নভঙ্গ ঘটল অস্ট্রেলিয়ার এই নির্ভরযোগ্য পেসারের।
৩৪ বছর বয়সী হ্যাজলউড আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বরাবরই ফাইনাল মানেই সেরাটা দিয়েছেন। ২০১০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ফাইনালে ‘প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ’, এরপর ২০১৫ ও ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং একাধিক আইপিএল ও বিগ ব্যাশ ফাইনাল জয়—সবমিলিয়ে ফাইনাল মানেই ছিল জয়ের গল্প।
তবে ২০২৫ সালের এই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার দুর্দান্ত রান তাড়ার সামনে একরকম অসহায়ই ছিল অস্ট্রেলিয়া। হ্যাজলউড দুই ইনিংসে যথাক্রমে ১/২৭ ও ১/৫৮ বোলিং ফিগার নেন। ব্যাট হাতে তবু ছোট একটা প্রতিরোধ গড়েছিলেন—মিচেল স্টার্কের সঙ্গে দশম উইকেটে ৫৯ রানের মূল্যবান জুটি, যা আইসিসি নকআউট ম্যাচে যুগ্মভাবে সবচেয়ে বড় দশম উইকেট পার্টনারশিপ।
তবুও শেষরক্ষা হয়নি। প্রোটিয়ারা ২৮২ রানের লক্ষ্য সফলভাবে তাড়া করে জিতে নেয় তাদের প্রথম বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপা, আর হ্যাজলউডের টানা ফাইনাল জয়ের রেকর্ডেও এল প্রথম পরাজয়ের ছাপ।
হ্যাজলউডের ফাইনাল ক্যারিয়ার ঝলমলে হলেও এবার যে রেকর্ডটা ভাঙল, সেটাও ক্রিকেট ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকল। এটাই ক্রিকেট, যেখানে একদিনের নায়ক, অন্যদিন হতে পারে হারের সাক্ষী। তবে হ্যাজলউডের অর্জন যে এখনো কিংবদন্তিতুল্য, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
হ্যাজলউডের খেলা প্রধান ফাইনালগুলো:
চ্যাম্পিয়নশিপ না জিতলেও হ্যাজলউডের নাম ক্রিকেটের রূপকথায় থেকেই যাবে।
মন্তব্য করুন