

চট্টগ্রামের সাগরিকায় বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে টি–টোয়েন্টি সিরিজের সূচনা হলো আগুনঝরা এক ইনিংসে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের রোভম্যান পাওয়েল নিজের ১০০তম টি–টোয়েন্টি ম্যাচে যেন জানিয়ে দিলেন—অভিজ্ঞতার ঝলক কাকে বলে! ইনিংসের শেষভাগে চারটি টানা ছক্কা মেরে ক্যারিবীয়দের নিয়ে গেলেন ১৬৫ রানে, বাংলাদেশের সামনে রেখে গেলেন ১৬৬ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য।
প্রথমে ব্যাট করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শুরুটা ছিল সতর্ক। তৃতীয় ওভারে রানআউটের সুযোগ হাতছাড়া করেন রিশাদ হোসেন—যা মিস না হলে গল্পটা হয়তো ভিন্নই হতো। তবে চতুর্থ ওভারেই গতি ফেরান আলিক আথানাজে, তাসকিন আহমেদের এক ওভারেই তিনটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দেন। ফলে ওপেনিং জুটি গড়ে তোলে ৫৯ রানের দৃঢ় ভিত্তি।
বাংলাদেশের প্রথম সাফল্য আসে রিশাদের হাত ধরে—রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে বোল্ড হন আথানাজে (৩৪)। এরপর ছন্দে থাকা ব্র্যান্ডন কিংও থিতু হতে পারেননি। ওয়ানডে মেজাজে ৩৩ রানের ইনিংস খেলে তাসকিনের বলে ধরা পড়েন। তাসকিন একই ওভারে তুলে নেন শেরফান রাদারফোর্ডকেও, ফলে ক্যারিবীয়রা কিছুটা চাপে পড়ে।
মাঝের ওভারগুলোতে দারুণ নিয়ন্ত্রণে ছিল বাংলাদেশের বোলাররা। নাসুম আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান ধীরগতির বলের মিশেলে ব্যাটসম্যানদের ছন্দ ভেঙে দেন। এই সময় রোভম্যান পাওয়েল বেশ অস্বস্তিতে ছিলেন, কিন্তু তাকে জীবন দেন তানজিম হাসান সাকিব—শর্ট থার্ডম্যান থেকে সহজ ক্যাচ ফেলে দেন তিনি। আর সেই ভুলের শাস্তি দেন এই ক্যারিবীয়ান নির্মমভাবে।
শেষের ওভারে পাওয়েল যেন ঝড় তুললেন। মোস্তাফিজের করা ১৯তম ওভারে এক ছক্কার পর তানজিম সাকিবের করা ইনিংসের শেষ ওভারে টানা তিনটি ছক্কা, পুরো ইনিংসে ২৮ বলে ৪৪ রান (৪ ছক্কা, ১ চার)—ম্যাচে প্রাণ ফেরালেন তিনি। অপরপ্রান্তে ছিলেন সমান ধ্বংসাত্মক অধিনায়ক শাই হোপ, ২৮ বলে ৪৬ রানে অপরাজিত থেকে ইনিংস শেষ করেন।
বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন আহমেদ ২ উইকেট, আর রিশাদ হোসেন নেন ১ উইকেট। মোস্তাফিজ ও নাসুম ছিলেন কৃপণ, কিন্তু ভাগ্য সঙ্গ দেয়নি কাউকেই।
চট্টগ্রামে বৃষ্টিহীন এই ম্যাচে এখন লক্ষ্য ১৬৬ রান।
তবে পাওয়েলের সেই আগুনঝরা ইনিংস মনে করিয়ে দিচ্ছে—এই ম্যাচ এখনও অনেক দূরের পথ।
মন্তব্য করুন