

ফয়সালাবাদের ইকবাল স্টেডিয়ামে একপেশে লড়াইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে উড়িয়ে দিয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নিল পাকিস্তান। ওপেনার সাইম আয়ুবের দুর্দান্ত ৭৭ রানের ইনিংস আর লেগস্পিনার আবরার আহমেদের ঘূর্ণির জাদু পাকিস্তানকে এনে দিল সহজ এক জয়।
মাত্র ১৪৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাকিস্তান জিতেছে ১০০ বল হাতে রেখে ও মাত্র তিন উইকেট হারিয়ে। এমন জয় শুধু সিরিজই নয়, দলের আত্মবিশ্বাসেও বড় এক উত্থান এনে দিল।
তবে জয়টা একদম শুরু থেকেই সহজ ছিল না। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই নান্দ্রে বার্গারের হাতে ধরা পড়ে দুই বল খেলেই শূন্য রানে ফেরেন ফখর জামান। তাতে পাকিস্তান কিছুটা চাপে পড়লেও ক্রিজে নামেন বাবর আজম, আর তার সঙ্গে হাত মেলান সাইম আয়ুব।
দুজন মিলে গড়ে তোলেন ৬৫ রানের জুটি, যা দলের ইনিংসের ভিত্তি তৈরি করে। বাবর ৩২ বলে ২৭ রান করে রানআউটে ফেরেন, তবে অন্য প্রান্তে সাইম ছিলেন অবিচল। পরের অংশে মোহাম্মদ রিজওয়ানের সঙ্গে আরও ৬৫ রানের পার্টনারশিপ দলকে এনে দেয় জয় নিশ্চিতের পথ।
সাইমের ৭০ বলে ৭৭ রানের ইনিংস সাজানো ছিল ১১টি চার ও একটি ছয়ে। শেষ পর্যন্ত তিনি আউট হন যখন দলের জয়ের জন্য দরকার ছিল মাত্র ১৪ রান। রিজওয়ান অপরাজিত থাকেন ৩২ বলে ৪৫ রানে, আর শেষ দিকে সালমান আলী আগা ২ বলে ৫ রান যোগ করেন।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস গুটিয়ে যায় মাত্র ১৪৩ রানে (৩৭.৫ ওভারে)। ইনিংসের শুরুটা ভালোই ছিল। ওপেনার কুইন্টন ডি কক ও লুয়ান-দ্রে প্রিটোরিয়াস মিলে ৭২ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন। কিন্তু প্রিটোরিয়াস ৩৯ রানে ফেরার পরই ধস নামে প্রোটিয়াদের ব্যাটিংয়ে।
ডি কক লড়াই করলেও (৭০ বলে ৫৩), আবরার আহমেদের স্পিনে কুপোকাত হয় বাকি ব্যাটাররা। তিনি একাই নেন ৪ উইকেট ২৭ রানে। এছাড়া অধিনায়ক শাহীন শাহ আফ্রিদি, সালমান আগা ও মোহাম্মদ নওয়াজ প্রত্যেকে নেন দুটি করে উইকেট।
ডি ককের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান আসে প্রিটোরিয়াসের ব্যাট থেকে (৩৯), এরপর আর কেউ ১৬ রানের বেশি করতে পারেননি। শেষ ৩৭ রানের মধ্যে ৮ উইকেট হারানো প্রোটিয়াদের ইনিংস ছিল সম্পূর্ণ ধ্বসের প্রতিচ্ছবি।
অন্যদিকে পাকিস্তানের জন্য দিনটি ছিল আত্মবিশ্বাস ফেরানোর। সাম্প্রতিক সময়ে টানা সমালোচনার মুখে থাকা দলটি শেষ ম্যাচে এমন দাপুটে পারফরম্যান্স দিয়ে জানিয়ে দিল—তারা এখনো লড়াইয়ে টিকে আছে, আর তরুণ সাইম আয়ুবদের হাত ধরেই গড়ে উঠছে নতুন এক পাকিস্তান।
মন্তব্য করুন