

বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম উত্তেজনায় ভরপুর অ্যাশেজ সিরিজ এখনও শুরু হয়নি, তবে তার জন্য আলোচনাতো থেমে নেই। স্টুয়ার্ট ব্রড ঘোষণা করে দিয়েছেন—এবারের অস্ট্রেলিয়া ২০১০–এর পর সবচেয়ে দুর্বল, আর ইংল্যান্ড নাকি ঠিক উল্টো। অন্যদিকে স্টিভেন স্মিথ নিশ্চিত—‘বাজবল’ অস্ট্রেলিয়ায় কাজ করবে না। কথার লড়াইয়ে আগুন জ্বলছে, এখন প্রশ্ন একটাই—ইংল্যান্ড কি আসলেই এত দিনের অদৃশ্য সূর্যটা এবার দেখতে পাবে?
অস্ট্রেলিয়া ২০১৩/১৪–তে একই একাদশ দিয়ে পাঁচ টেস্ট খেলে ইতিহাস গড়েছিল। স্থিরতা এনে দেয় সুবিধা—বলা হয়ে আসে বহুদিন ধরেই। এবার কিন্তু সে সুবিধা নেই, শুরুতেই ধাক্কা—প্যাট কামিন্স ও জশ হ্যাজেলউড অনুপস্থিত। ডেবিউ করতে যাচ্ছেন ব্রেন্ডন ডগেট, যিনি ২০১৭ এর পর প্রথম কোনো বিশেষজ্ঞ পেসার হিসেবে অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অভিষেক করতে যাচ্ছেন।
ইংল্যান্ডেরও দুশ্চিন্তা কম নয়। জোফরা আর্চার—২০১৯-এর মতো ধাক্কা দিতে পারবেন কি? মার্ক উড কি পুরো সিরিজে থাকবেন? আর সবশেষে—বেন স্টোকসের ফিটনেস। একাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা আছে যার।
এদিকে পরিসংখ্যান আবার অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অ্যাশেজ সিরিজ ওপেনারে অস্ট্রেলিয়া জিতেছে ১২ বার বিপরীতে ইংল্যান্ড মাত্র ২। ইংল্যান্ডের শেষ অ্যাওয়ে ওপেনার জিতেছে ১৯৮৬/৮৭ মরসুমে। তবে ‘বাজবল যুগে’ ছবিটা পাল্টেছে—শেষ ১১ সিরিজ ওপেনারের ৯টিতেই জিতেছে ইংল্যান্ড, সর্বশেষ পাঁচটি অ্যাওয়ে ম্যাচেও জয়।
ওপেনিং জুটিই নির্ধারণ করতে পারে ভাগ্য
গত তিন অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনিং জুটির গড় ছিল ৪০-এর বেশি—ইংল্যান্ডের মাত্র ২১। কিন্তু এবার অন্য ছবি। জ্যাক ক্রলি–বেন ডাকেট জুটি এখন বিশ্বের সেরা ওপেনিং জুটিগুলোর একটি—রানের হিসেবে এই সময়ে সবচেয়ে এগিয়ে। অন্যদিকে উসমান খাজা ২০২৪–এর পর থেকে বেশ নিস্প্রভ।
বাজবল—অস্ট্রেলিয়ায় টিকে থাকবে তো?
২০২৩ অ্যাশেজেই দেখা গেছে—ইংল্যান্ডের ব্যাটিং বদলে গেছে। তাদের আক্রমণাত্মক শটের হার ৪০%–এর কাছাকাছি, যেখানে অন্য দলগুলো ৩০%–এর আশপাশে।
স্কট বোল্যান্ডই হতে পারেন অস্ট্রেলিয়ার গোপন অস্ত্র—বাড়তি বাউন্স আর নিখুঁত লাইনে ইংল্যান্ডকে ২০২১/২২-এ ভুগিয়েছিলেন। কিন্তু ২০২৩–এ বাজবল তাকে প্রায় নিষ্ক্রিয় করে দেয়।
মূল লড়াই—স্মিথ বনাম রুট
স্টিভ স্মিথের সামনে আর মাত্র কয়েক শ রান—হবসকে ছাড়িয়ে অ্যাশেজ ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হওয়ার স্বপ্ন। অন্যদিকে জো রুট—অস্ট্রেলিয়ায় কখনো সেঞ্চুরি নেই, এটিই সবচেয়ে বড় প্রশ্নচিহ্ন। তবে ২০২২ থেকে বিশ্বের সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটার তিনিই।
ইংল্যান্ডের সামনে কঠিন প্রশ্ন—আসলেই কি ধূসর ইতিহাস পেছনে ফেলে নতুন ভোর দেখা সম্ভব?
অস্ট্রেলিয়া শুরুর আগেই দুর্বল, ইংল্যান্ড আত্মবিশ্বাসে উঁচু—সবাই যা নিয়ে কথা বলছে ছয় মাস ধরে।
এবার কি বাজবল ঢেউ থামিয়ে দেবে অস্ট্রেলিয়ার মরুভূমিতে ১৪ বছরের দীর্ঘ খরা?
উত্তর দেবে গ্রীষ্মের প্রথম বল।
মন্তব্য করুন