বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সার্বিক দিক বিবেচনায় আজ দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে হওয়া বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার ম্যাচের তেমন কোন গুরুত্ব নেই । তবে এই গুরুত্বহীন ম্যাচই জন্ম দিল নাটক। বিশ্ব ক্রিকেটও প্রথমবারের মতো দেখলো অদ্ভুত এক আউট। কিন্তু তবুও খেলা থেমে থাকেনি। একপ্রান্তের বিতর্কের পরেও ঠিকই লড়াকু সংগ্রহ গড়েছে মেন্ডিস-আসালাঙ্কারা। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে জায়গা করে নেয়ার 'ডু অর ডাই' ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের জন্য দরকার ২৮০ রান।
সোমবার (৬ নভেম্বর) দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। আগে ব্যাটিং পেয়ে নির্ধারিত ৪৯.৩ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৭৯ রান করে শ্রীলঙ্কা।
টস জিতে বোলিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই সাফল্য পায় টাইগাররা। শরিফুল ইসলামের বলে দুর্দান্ত এক ডাইভে কুশল পেরেরার (৪) ক্যাচ ধরেন মুশফিকুর রহিম। তবে তৃতীয় উইকেট জুটিতে দ্রুতই রান তুলছিলেন পাথুম নিশাঙ্কা ও অধিনায়ক কুশাল মেন্ডিস।
১২তম ওভারে নিজেই বল হাতে তুলে নেন অধিনায়ক সাকিব। তাতেই বাজিমাত। ওভারের তৃতীয় বলে কুশাল মেন্ডিসকে শরিফুল ইসলামের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন। ৩০ বলে ১৯ রান করেন লঙ্কান দলপতি।
মেন্ডিসের বিদায়ের পর আর টেকেননি নিশাঙ্কাও। তাকে বোল্ড করে বিশ্বকাপে প্রথম উইকেটের দেখা পান তানজিম সাকিব। এর আগেই বেশ কয়েকবার অল্পের জন্য উইকেট পাওয়ার কাছে চলে গিয়েছিলেন তানজিম। তার বল ব্যাটের কানায় লেগে বাউন্ডারিও পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। তবে তার অফ স্টাম্পের একটু বাইরের হঠাৎ লাফিয়ে উঠলে নিশানকার ব্যাটে লেগে স্টাম্পে আঘাত করে। ৩৬ বলে ৮ চারে ৪১ রান করেন তিনি।
নতুন দুই ব্যাটার সাদিরা সামারাবিক্রমা ও চরিথ আসালাঙ্কা আরও একটি জুটি গড়েন। এই জুটিতে ৬৩ রান যোগ করেন তারা। ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে থাকা এই জুটিও ভাঙেন সাকিব। ৪২ বলে ৪১ রান করে সাকিবের বলে মাহমুদউল্লাহর হাতে ক্যাচ দেন তিনি।
এরপরই ঘরে অদ্ভূত ঘটনা। ক্রিজে ভুল হেলমেট নিয়ে এসেছিলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। ফিতা ছেঁড়া থাকায় সেই হেলমেট বদলে নতুন একটি হেলমেট নিয়ে আসা হয়। কিন্তু সেটিও খেলায় ব্যবহারের উপযোগী মনে করেননি এই অলরাউন্ডার। সময় ক্ষেপণের জন্য বাংলাদেশ এ সময় আউটের আবেদন জানালে তাকে আউট দেন আম্পায়ার। ম্যাথিউসই প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে 'টাইমড আউট' হলেন।
এমসিসির আইনের ৪০.১.১ নম্বর ধারা অনুযায়ী, ‘একজন ব্যাটসম্যানের আউট হয়ে যাওয়া বা অবসরের পর যে ব্যাটসম্যান আসবেন, তাকে অথবা অন্য ব্যাটসম্যানকে ৩ মিনিটের মধ্যে বলের মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। অন্যথায় যে ব্যাটসম্যান নামছেন, তাকে আউট হতে হবে।’
ম্যাথিউস কোনো বল না খেলেই সাজঘরে ফেরার পর ধনঞ্জয়া ডি সিলভার সঙ্গে ৭৮ রানের জুটি গড়েন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। এই জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৩৬ বলে ৩৪ রান করেন ডি সিলভা।
তবে একদিকে এতসব বিতর্কের মধ্যেও শতক তুলে নিয়েছেন আশালাঙ্কা। ওডিআই ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পেয়েছেন তিনি। ১০৫ বলে ৬ চার ও ৫ ছয়ে ১০৮ রান করে তানজিম সাকিবের শিকারে পরিণত হন আশালাঙ্কা।
বাংলাদেশের পক্ষে সফলতম বোলার তানজিম সাকিব। তবে বেশ খরুচে ছিলেন তিনি। ১০ ওভারে ৮০ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন তিনি। সাকিব ১০ ওভারে ৫৭ রান দিয়ে ২ উইকেট শিকার করেন। ২ উইকেট শিকার করেছেন শরিফুলও। বাকি উইকেটটি মিরাজের ঝুলিতে গেছে।
মন্তব্য করুন